Ekchokho.com 🇮🇳

‘এটা একজন বিচারপতির আচরণ?’, ভরা এজলাসে উঠল অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ, কারণ কী?

Published on:

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ফের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Kalyan Banerjee) মুখে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ। এ বার আদালত অবমাননার অভিযোগে কুণাল ঘোষের মামলায়। সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি অরিজিত বন্দ্যোপাধ্যায়, বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য, বিচারপতি রাজর্ষী ভরদ্বাজের বিশেষ বেঞ্চে কুণাল ঘোষের মামলায় সওয়াল করতে গিয়ে প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Abhijit Gangopadhyay) নাম তুলে বসেন কল্যাণ।

ফের কল্যাণের মুখে অভিজিৎ প্রসঙ্গ | Calcutta High Court

তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের আদালত অবমাননার মামলায় এদিন ঝোড়ো সওয়াল করেন তৃণমূল সাংসদ তথা আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, ‘এটা কি একজন বিচারপতির আচরণ?’ কল্যাণের কথায়, “প্রতিদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চোর- ডাকাত বলে আক্রমণ করছে। রাজনৈতিক দলের মুখপাত্র হয়ে আমি কী করব?”

আদালতের কাছে কল্যাণের প্রশ্ন, “আইনজীবী যদি রাজনৈতিক কথা বলেন এবং অন্য প্রতিপক্ষ দলের নেতাদের আক্রমণ করেন তাহলে কি তিনি আদালতের রক্ষাকবচ চাইতে পারেন?” আইনজীবী ফিরদৌস শামিমের প্রসঙ্গ টেনে কল্যাণ বলেন, “এই চাকরি প্রার্থীদের হয়ে একসময় মামলা করছিলেন ফিরদৌস শামিম। পরবর্তীতে রাজ্য যখন এদের জন্য অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করল তখন আবার শামিমরা রাজ্যের সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় মামলা দায়ের করলেন। মামলাকারীরা তাহলে কী করবেন?”

ফের একবার আদালতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ তুলে কল্যাণ বলেন, “একজন প্রাক্তন বিচারপতি সমস্ত বিশ্বাস এবং আস্থা ভেঙে দিয়েছেন। চেয়ারে বসে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন ‘কান ধরে তুলে নিয়ে আয়’, এটা একজন বিচারপতির আচরণ?” আদালতের কাছে প্রশ্ন কল্যাণের।

আরও পড়ুন: মুখের কাছে মাংস, তরুণীর দিকে এগিয়ে এল হায়না! তারপর যা হল… ভিডিও দেখে অবাক নেটপাড়া

অবমাননার মামলায় কল্যাণের যুক্তি, “বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর অবমাননার ক্ষেত্রে আমার কিছু বলার নেই। কিন্তু আইনজীবীদের হেনস্থা কি আদৌ অপরাধমূলক আদালত অবমাননা হতে পারে?” পাশাপাশি এই বিষয়ে পুলিশের কাছে কুণাল ঘোষের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়েছে কিনা, সেই বিষয়েও জানতে চান তার আইনজীবী। আগামী সোমবার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে।

Calcutta High Court

প্রসঙ্গত, গত ২৫ এপ্রিল কর্মশিক্ষা – শারীরশিক্ষায় অতিরিক্ত শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার শুনানির শ্লথ গতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের (Bikash Ranjan Bhattacharya) চেম্বারের বাইরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন উচ্চ প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ।

আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায়, সুদীপ্ত দাশগুপ্ত সহ বেশ কিছু আইনজীবীকে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে চাকরিপ্রার্থীদের একাংশের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য এবং স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ ওঠে হাইকোর্ট চত্বরেই।

হাইকোর্টের বিচারপতিকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য এবং স্লোগান দেওয়ায় ঘটনায় আদালত অবমাননার মামলার জন্য কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বার অ্যাসোসিয়েশনের কিছু আইনজীবী। তাতে
বিচারপতি অরিজিত বন্দ্যোপাধ্যায়,বিচারপতি সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় ও বিচারপতি রাজর্ষী ভরদ্বাজকে নিয়ে বিশেষ বেঞ্চ গড়ে দেন প্রধান বিচারপতি।

গোটা বিষয়কে দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা বলে উল্লেখ করে হাইকোর্ট। ডিভিশন বেঞ্চের মন্তব্য আদালতের অবমাননা ফৌজদারি অপরাধ। ভবিষ্যতে যাতে এরম ঘটনা আর না হয় সুনিশ্চিত করার জন্য পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। অভিযুক্তদের অনুসন্ধান করে রিপোর্ট দেওয়ায় জন্য কমিশনারকে নির্দেশ।

আরও পড়ুন: নতুনদের টার্গেট, একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে অশ্লীলতা? মনোজিতের ফোনে লুকিয়ে আরও কুৎসিত ভিডিও!

উল্লেখ্য, সেইদিন বিক্ষোভকারীরা বিক্ষোভ দেখানোর পর তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের সঙ্গে দেখা করেন। সেখান থেকে সাংবাদিক বৈঠক করেন কুণাল। সাংবাদিক বৈঠক করে সিপিএম-এর সব নেতাদের ছবি দেখান। কুণালের প্রশ্ন ছিল, এক সময় যে বিকাশ ভট্টাচার্যরা মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছেন মামলা লড়ার জন্য, এখন কেন তাঁরাই চাকরি কাড়তে মরিয়া হয়ে পড়েছে? এই সময়ই কুণাল বলেন, “আর বিচারপতির কিছু কিছু সিপিএমের আইনজীবীকে দেখলে কী হয় জানি না। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে দেখেছি। ভগবান-ভগবান-তারপর হল সাংসদ।” এই ঘটনার প্রেক্ষিতেই হয় মামলা। প্রাথমিক ভাবে এটা ক্রিমিনাল কন্টেমট বলে মনে করে আদালত। হলফনামা চাওয়া হয়। সন্তুষ্ট না হলে রুল জারি করা হবে বলা হয়েছিল। এরপর হাই কোর্ট অভিযুক্ত সকলের বিরুদ্ধে রুল জারি করে। সেই রুল নোটিস পেয়েছিলেন কুণাল। সেই মামলার সূত্র ধরেই আদালত অবমাননার মামলা চলছে।