বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যের স্কুলগুলিতে পড়াশোনার পরিবেশ আরও ভালো করতে এবং শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বড় সিদ্ধান্ত নিল পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রকাশিত একাডেমিক ক্যালেন্ডারে (Academic Calendar 2026) স্কুলের সময়সূচি, ছুটি, ক্লাসের নিয়মের পাশাপাশি মোবাইল ফোন ব্যবহারে একেবারে কড়া অবস্থান নেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশিকা রাজ্যের সমস্ত সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলে বাধ্যতামূলকভাবে মানতে হবে বলে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রকাশিত হল ২০২৬-এর অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার (Academic Calendar 2026)
গত ২৯ ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের বার্ষিক অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার (Academic Calendar 2026) প্রকাশ করা হয়। এতে স্কুলের দৈনন্দিন পঠনপাঠন, শৃঙ্খলা ও সময়ানুবর্তিতার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পর্ষদের লক্ষ্য, ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনায় মনোযোগ বাড়ানো এবং স্কুলে একটি সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করা।
ছাত্রছাত্রীদের জন্য মোবাইল ফোন পুরোপুরি নিষিদ্ধ
পর্ষদ স্পষ্ট জানিয়েছে, স্কুল চত্বরে ছাত্রছাত্রীদের মোবাইল বা স্মার্টফোন নিয়ে আসা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আগে অনেক স্কুলে অলিখিতভাবে এই নিয়ম মানা হলেও, এবার তা লিখিত নির্দেশ হিসেবে জারি করা হল। ক্লাসরুমে পড়ুয়াদের মনোযোগ যাতে নষ্ট না হয় এবং স্মার্টফোনের অপব্যবহার বন্ধ করতেই এই সিদ্ধান্ত বলে জানানো হয়েছে। শুধু ছাত্রছাত্রী নয়, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ক্ষেত্রেও মোবাইল ব্যবহারে কড়া নিয়ম বেঁধে দিয়েছে পর্ষদ।
ক্লাসরুমে মোবাইল নয়: শিক্ষক-শিক্ষিকারা ক্লাসরুম বা ল্যাবরেটরিতে থাকাকালীন মোবাইল ফোন বা ব্লুটুথ ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবেন না। পঠনপাঠনের সময় শিক্ষকের ফোনে মনোযোগ দিলে ছাত্রদের ক্ষতি হতে পারে, এই কারণেই এই নিয়ম।
শিক্ষার প্রয়োজনে বিশেষ অনুমতি: যদি কোনো শিক্ষক পাঠদানের জন্য মোবাইল ফোনকে ‘টিচিং এইড’ হিসেবে ব্যবহার করতে চান, তাহলে আগে থেকেই প্রধান শিক্ষকের কাছে লিখিত অনুমতি নিতে হবে। অনুমতি ছাড়া ক্লাসে মোবাইল ব্যবহার করা যাবে না।
স্কুলের সময়ানুবর্তিতা নিয়ে স্পষ্ট নির্দেশ
নতুন ক্যালেন্ডারে (Academic Calendar 2026) স্কুলের সময় মেনে চলার বিষয়েও কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সমস্ত শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মচারীকে সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটের মধ্যে স্কুলে পৌঁছাতে হবে। ১০টা ৪০ মিনিটের প্রার্থনা সভায় উপস্থিত থাকা বাধ্যতামূলক। বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটের আগে কেউ স্কুল চত্বর ছাড়তে পারবেন না, যদি না সরকারি কোনো ডিউটি থাকে।
শাস্তি দেওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ
পর্ষদ জানিয়ে দিয়েছে, ছাত্রছাত্রীদের ওপর কোনো ধরনের শারীরিক বা মানসিক নির্যাতন করা যাবে না। মারধর বা বকাঝকার মাধ্যমে শাস্তি দেওয়ার বদলে সংশোধনমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
প্রাইভেট টিউশন নিয়ে ফের কড়া বার্তা
স্কুলের শিক্ষকরা ব্যক্তিগত লাভের জন্য প্রাইভেট টিউশন বা অন্য কোনো ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন না। এই নিয়ম আগেও ছিল, তবে নতুন ক্যালেন্ডারে তা আবার স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে।
পুরনো বই ফেরত দেওয়ার নির্দেশ
নতুন ক্লাসে ওঠার পর মাধ্যমিক স্তরের ছাত্রছাত্রীদের বিনামূল্যে পাওয়া পুরনো পাঠ্যবই স্কুলে ফেরত দিতে হবে। প্রধান শিক্ষকদের দায়িত্ব থাকবে সেই বইগুলি নিয়ম মেনে প্যাক করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ফেরত পাঠানোর।

নিয়ম না মানলে কড়া শাস্তির হুঁশিয়ারি
পর্ষদ সাফ জানিয়েছে, এই নির্দেশিকা বা নিয়ম অমান্য করলে সংশ্লিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষ বা ব্যক্তির বিরুদ্ধে কড়া শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে রাজ্যের স্কুলগুলিতে শিক্ষার মান উন্নত করতে এবং শৃঙ্খলা ফেরাতে এই ক্যালেন্ডার (Academic Calendar 2026) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে বলেই মনে করছে পর্ষদ।












