বাংলাহান্ট ডেস্ক : ফুটবল ম্যাচ ঘিরে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। হেরে গেছে প্রিয় দল। আরে সেই রাগেই মাঠের মধ্যে ঢুকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন দলের একাধিক সমর্থক। সৃষ্টি হয় চাঞ্চল্যের। আর সেই ভিড়ের মধ্যেই পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল অন্তত ১২৯ জনের। আহতের সংখ্যা ১৮০-র বেশি। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেই আশংকা কর্তৃপক্ষের। খেলার স্টেডিয়ামে দুর্ঘটনার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রাণঘাতী দুর্ঘটনায় কলঙ্কিত হল ইন্দোনেশিয়া (Indonesia)। বিক্ষোভকারীদের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যালমিডিয়ায়। ইন্দোনেশিয়ান পুলিসের বিরুদ্ধেও ফিফার নিয়মাবলি ভাঙার অভিযোগ সামনে আসছে।
ঘটনাটি ঘটে ইন্দোনেশিয়ার দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাব আরিমা ও পার্সিবায়া সুরাবায়ার ফুটবল ম্যাচে। এই ম্যাচে হেরে যায় আরিমা। আর হারের পরই ক্ষিপ্ত সমর্থকরা মাঠে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছোঁড়ে স্থানীয় পুলিস। স্টেডিয়াম ছেড়ে পালাতে হুড়োহুড়ি শুরু করেন দর্শকরা। তার ফলেই ঘটে এই মর্মান্তিক পরিণতি। একসঙ্গে সকলে বেরনোর চেষ্টা করতে গিয়েই পদপিষ্ট হন অসংখ্য মানুষ। সরকারিভাবে ইতিমধ্যেই ১২৯ জনের মৃত্যুর কথা ঘোষণা করা হয়েছে। ভয়াবহ ভাবে পদপিষ্ট হওয়ার কারণে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেই মনে করছে পুলিস।
এই ঘটনার দায়ী হিসাবে অভিযোগ উঠছে স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধেই। প্রথমত, ফিফার (FIFA) নিয়মে পরিস্কার বলা রয়েছে, কোনও পরিস্থিতিতেই ভিড় নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কাঁদানে গ্যাস বা গুলি চালানো যাবে না। এই নিয়মের বিষয়ে আদৌ স্থানীয় পুলিস জানত কিনা, তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। যদিও এই বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হয়নি পূর্ব জাভার পুলিস। তবে ইন্দোনেশিয়ার মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে, ঘটনার তদন্ত করা হবে তাদের পক্ষ থেকে।
ইন্দোনেশিয়ার নিরাপত্তামন্ত্রী মাহফুদ মহম্মদ বলেন, স্টেডিয়ামে ৩৮ হাজার দর্শকাসন রয়েছে। কিন্তু এই ম্যাচের জন্য বিক্রি করা হয় ৪২ হাজার টিকিট। ইন্দোনেশিয়ার ক্লাব ফুটবলের ম্যাচ ঘিরে অনেক আগেই এজাতীয় অশান্তির ঘটনা ঘটেছে। ইন্দোনেশিয়ার ক্রীড়া মন্ত্রী জইনুদ্দিন আমালি জানান, ফুটবল ম্যাচে নিরাপত্তা আরও কড়া করতে হবে। তার জন্য প্রয়োজন পড়লে দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামেও খেলানো হতে পারে।
আগামী বছর ইন্দোনেশিয়ার মাটিতেই অনূর্ধ্ব-২০ ফুটবল বিশ্বকাপ আয়োজন করা হবে। এশিয়ান কাপ আয়োজন করার জন্যও দাবি জানিয়েছে তারা। তবে শনিবারের ঘটনার পরও সেখানে বিশ্বকাপের মতো গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্ট আয়োজন করা আদৌও ঠিক হবে কিনা, তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন।