বাংলা হান্ট ডেস্কঃ জমি সংক্রান্ত এক মামলায় অবৈধ ভাবে হস্তক্ষেপ করেছেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতির অমৃতা সিনহার স্বামী (Calcutta high court Justice Amrita Sinhas husband)! গুরুতর এই অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিচারপতি অমৃতা সিনহার স্বামীকে ডেকে পাঠাল সিআইডি (CID)। সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী শনিবার বেলা ১১টায় ভবানী ভবনে তাকে তলব করা হয়েছে।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, বিচারপতি সিনহার স্বামী পেশায় আইনজীবী। আগেও নাকি এই মামলায় বিচারপতির স্বামীকে এক দফা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিআইডি। ঘটনাচক্রে, বর্তমানে বিচারপতি সিনহার এজলাসেই চলছে নিয়োগ সংক্রান্ত একটি মামলা। যেই মামলায় কিছু দিন আগেই তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আয়ের উৎস নিয়ে জানতে চেয়ে প্রশ্ন করেছিলেন বিচারপতি সিনহা।
এরপর সম্প্রতি অভিষেকের সংস্থা ‘লিপ্স অ্যান্ড বাউন্ডস’ নিয়ে মুখবন্ধ খামে আদালতে রিপোর্ট জমা করেছে ইডি। সেখানেও বারংবার উঠে এসেছে অভিষেকের আয়ের উৎস প্রসঙ্গ। আর এসবের মধ্যেই এবার বিচারপতি সিনহার স্বামীকেই এক মামলায় তলব করল রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডি। সিআইডি সূত্রে খবর, সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন এক মামলায় বিচারপতির স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনাটা ঠিক কি? জানা যাচ্ছে, একটি পৈতৃক জমি সংক্রান্ত বিষয়ে ৬৪ বছরের এক বিধবা মহিলার সঙ্গে তার কিছু আত্মীয়ের বিরোধ শুরু হয়। ঝামেলার জেরে তাকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন তার দাদা এবং আত্মীয়রা। সেই ঘটনার প্রমাণও সিসিটিভিতে রয়েছে। এরপরই এই ইস্যুতে আদালতের দ্বারস্থ হন ওই মহিলা। নিজের দাদা ও তার কিছু আত্মীয়দের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে ফৌজদারি মামলা করেছিলেন বিধবা বৃদ্ধা মহিলা।
আরও পড়ুন: আজই জ্যোতিপ্ৰিয়কে একা করে চলে যাবে তার দুই সঙ্গী? হাইকোর্টে কি জানাবে ED? তুঙ্গে জল্পনা
‘বার অ্যান্ড বেঞ্চ’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেই মামলায় বিবাদী পক্ষের হয়ে সওয়াল জবাব করছেন বিচারপতি অমৃতা সিনহার স্বামী। অভিযোগ নিজের প্রভাব খাঁটিয়ে নানাভাবে তদন্তে বাধা দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন কলকাতা হাই কোর্টের মহিলা বিচারপতির স্বামী। এমনকি বিচারপতির বিরুদ্ধেও অভিযোগ তুলেছেন ওই মহিলা ও তার মেয়ে।
এরপরই তারা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। যাতে আইনজীবী বা তার বিচারপতি স্ত্রীর প্রভাব ছাড়াই দু’টি ফৌজদারি অভিযোগের যাতে সঠিক ভাবে তদন্ত হয়, সেই জন্য সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানান তারা। এদিকে শীর্ষ আদালতে করা আবেদনে এও জানানো হয়েছে, ওই দুই মামলার প্রাথমিক তদন্তে এক জন অভিযুক্ত গ্রেফতার হওয়ারও হয়েছেন। তবে তার পরও তদন্তে বাধা দেওয়া চেষ্টা করা হয়েছে।
‘বার অ্যান্ড বেঞ্চ’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, আদালতে দেওয়া হলফনামায় জানানো হয়েছে, ওই মামলায় তদন্তে থাকা অফিসারকে ডেকে নাকি এক বার ভর্ৎসনাও করেছেন বিচারপতি। ওই দু’টি দেওয়ানি মামলায় কেন ফৌজদারি মামলার তদন্ত হচ্ছে? এই প্রশ্নও তোলা হয়। গত নভেম্বর মাসে সমস্ত বিষয় শুনে এই ফৌজদারি মামলার তদন্তভার সিআইডির (CID) হাতেই রাখে সুপ্রিম কোর্ট৷ সেই সঙ্গে রাজ্য সরকারকেও মুখবন্ধ খামে এই তদন্তের রিপোর্ট জমা দেওয়ার দেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি এসভিএন ভাট্টির বেঞ্চ৷
সেই সময় সিআইডিকে ভয় না পেয়ে তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। পরে অবশ্য এই মামলায় কোনও বাড়তি পদক্ষেপ করা যাবে না বলে জানায় সুপ্রিম কোর্ট। এদিকে সম্প্রতি আদালত জানায়, অভিযোগের ভিত্তিতে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করতে পারবে পুলিশ।