চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা নিয়ে পগারপার পার্থ ঘনিষ্ঠ নেতা, ফেরাচ্ছেন তৃণমূলের এক উপপ্রধান

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ স্কুল সার্ভিস কমিশন (School Service Commission) সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় অতীতেই ইডির (ED) হাতে গ্রেফতার হয়েছেন প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। ইতিমধ্যেই তাঁর একাধিক ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ সামনে উঠে এসেছে। সেই তালিকায় কয়েকদিন পূর্বেই নাম আসে কোলাঘাটের (Kolaghat) প্রাক্তন নেতা অতনু গুছাইতের (চাকরির নাম করে টাকা আত্মসাৎ) আর বর্তমানে পলাতক সেই তৃণমূল নেতার হয়ে টাকা ফেরানোর দায়িত্ব নিলেন এলাকার তৃণমূল উপপ্রধান।

ঘটনাটি আসলে কি? অভিযোগ, কোলাঘাট এলাকায় বহু মানুষকে চাকরি দেওয়ার নাম করে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অতনু গুছাইত। তবে পরবর্তী সময়ে এলাকা থেকে পলাতক হন তিনি। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে পার্থ ঘনিষ্ঠ এই নেতার কোনো রকম খোঁজ না মিললেও তাঁর হয়ে সমস্ত টাকা পরিশোধ করার দায়িত্ব নিয়েছেন কোলাঘাট ১ পঞ্চায়েতের তৃণমূল কংগ্রেস উপ প্রধান মুজিবর তরফদার।

তবে এ প্রসঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব সকল প্রশ্নের জবাব একপ্রকার এড়িয়ে গিয়েছে। কোলাঘাট এলাকার তৃণমূল ব্লক সভাপতি অসিত ব্যানার্জি বলেন, “এই প্রসঙ্গে আমার বিশেষ কিছু জানা নেই। তবে কেউ যদি দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকে, তবে আমাদের দল তার সঙ্গে থাকবে না।”

উল্লেখ্য, সম্প্রতি এসএসসি দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার হন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এরপর থেকেই তাঁর একাধিক বেআইনি সম্পত্তির তথ্য উঠে আসার পাশাপাশি অন্যান্য ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের উপরেও নজর রয়েছে তদন্তকারী অফিসারদের। সেই তালিকায় সম্প্রতি যুক্ত হয় অতনু গুছাইতের নাম। অভিযোগ, চাকরি দেওয়ার নাম করে এলাকায় বেশ কয়েকজন যুবকের থেকে টাকা নিয়ে পলাতক হন তৃণমূল নেতা। এক্ষেত্রে অতনুর হয়ে টাকা মেটানোর দায়িত্ব নিলেও বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেস উপপ্রধান মুজিবরের বিরুদ্ধেই একাধিক অভিযোগ সামনে উঠে এসেছে।

একদা শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ হলেও পরবর্তীতে অতনুর সঙ্গে ক্রমশ ঘনিষ্ঠতা বেড়ে ওঠে মুজিবরের। এমনকি, অতনুর সঙ্গে মিলে চাকরিপ্রার্থীদের থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়টিও সামলাতেন তিনি। আর সেই কারণেই বর্তমানে তৃণমূল নেতার হয়ে তিনি টাকা মেটানোর দায়িত্ব নিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

যদিও বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেস উপপ্রধানের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ ক্রমশ সামনে উঠে এসেছে। দাসপুরের এক হোটেল ব্যবসায়ী প্রসেনজিৎ কুইলা বলেন, “আমি অতনু গুছাইতকে ৬৫ লক্ষ টাকা দিয়েছিলাম। ও আমাদের আত্মীয়দের চাকরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে তা পূরণ করেনি।” উল্লেখ্য, পরবর্তীতে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলাও দায়ের করেন ওই ব্যক্তি।

Untitled design 48

বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে প্রসেনজিৎবাবু মুজিবরের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় একটি অভিযোগ পর্যন্ত দায়ের করেছেন। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “মুজিবর আমায় সমস্ত টাকা ফেরত দেওয়ার প্রসঙ্গে আশ্বস্ত করে। একইসঙ্গে মামলা তুলে নিতে পরামর্শ দেয়। তবে সম্প্রতি ৮ লক্ষ টাকার একটি চেক দিলেও পরবর্তীতে সেটি বাউন্স করে যায়। সেই কারণেই আমি ওর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।”

Sayan Das

সম্পর্কিত খবর