বাংলাহান্ট ডেস্ক: ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলির বিরুদ্ধে ফের গুরুতর অভিযোগ উঠল। অভিযোগ, ‘ক্যাশ অন ডেলিভারি’ বা সিওডি (Cash on Delivery) বেছে নেওয়া হলে অতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে গ্রাহকদের। অনলাইনে কেনাকাটার ক্ষেত্রে পণ্যের আসল দামের উপর যেমন অর্থ নেওয়া হয়, তার উপরেই আবার যুক্ত হচ্ছে আলাদা চার্জ। এই নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ভোক্তাদের ক্ষোভ বাড়ছিল। এবার সরাসরি পদক্ষেপে নামল কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী স্পষ্ট জানিয়েছেন, গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং কোনও সংস্থা যদি গ্রাহকের অধিকার লঙ্ঘন করে তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ক্যাশ অন ডেলিভারি (Cash on Delivery) নিয়ে কড়া বার্তা:
প্রহ্লাদ যোশী তাঁর এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, “ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলির ক্যাশ অন ডেলিভারির (Cash on Delivery) জন্য অতিরিক্ত চার্জ নেওয়ার বিরুদ্ধে গ্রাহক বিষয়ক বিভাগ বহু অভিযোগ পেয়েছে। সেখানে এক ধরনের অস্বচ্ছ ও অন্ধকারাচ্ছন্ন প্যাটার্ন লক্ষ করা যাচ্ছে, যা গ্রাহকদের বিভ্রান্ত এবং শোষণ করছে। এ বিষয়ে একটি বিস্তারিত তদন্ত শুরু হয়েছে। পাশাপাশি এই প্ল্যাটফর্মগুলিকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ভারতে ক্রমবর্ধমান ই-কমার্স ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা আনতে গ্রাহক অধিকার লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আরও পড়ুন:ফের শুরু পাকিস্তানের কারসাজি? ভারত-পাক সীমান্তে দেখা গেল রহস্যময় ড্রোন, সতর্ক ভারতীয় সেনা
এই অভিযোগ সামনে আসে একজন নেটিজেনের পোস্ট থেকে। তিনি লিখেছিলেন, “জোমাটো, সুইগ্গি কিংবা জেপ্টোর নেওয়া রেন ফি ভুলে যান। ফ্লিপকার্ট কী মাস্টারস্ট্রোক চালাচ্ছে দেখুন।” ওই নেটিজেনের দাবি, তিনি ক্যাশ অন ডেলিভারি (Cash on Delivery) অপশন বেছে নেওয়ার পর অতিরিক্ত অর্থ কেটে নেওয়া হয়। এরপর বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোড়ন পড়ে যায়।
প্রসঙ্গত, শুধু সিওডি (Cash on Delivery) চার্জ নয়, ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মগুলির বিরুদ্ধে ভুয়ো অফার, সীমিত স্টকের বিভ্রান্তিকর বার্তা, কিংবা “মাত্র ১০ মিনিটের জন্য বৈধ” জাতীয় প্রলোভনমূলক ট্যাগ ব্যবহার নিয়েও বারবার অভিযোগ উঠেছে। গ্রাহকরা অভিযোগ করেছেন, এই ধরনের কৌশল ব্যবহার করে ক্রেতাদের তাড়াহুড়ো করে সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করা হয়। বাস্তবে স্টকের অভাব থাকলেও সেটিকে বাড়িয়ে প্রচার করা হয়।

আরও পড়ুন: কমবে পেট্রোল-ডিজেলের ওপর নির্ভরতা! ভারতে চালু হতে চলেছে প্রথম হাইড্রোজেন হাইওয়ে
ই-কমার্সের দুনিয়া ভারতে দ্রুত প্রসার লাভ করলেও তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে গ্রাহক সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগও বাড়ছে। ভোক্তা অধিকার কর্মীদের মতে, অনলাইনে কেনাকাটার সুবিধা যেমন সহজলভ্য হয়েছে, তেমনই প্রতারণা ও বিভ্রান্তির ফাঁদও বেড়েছে। তাই সরকারের এই উদ্যোগকে তাঁরা স্বাগত জানিয়েছেন।
এখন দেখার বিষয়, তদন্ত শেষ হলে আদৌ কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয় কিনা এবং ই-কমার্স সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে এই ধরনের প্রথায় কতটা রাশ টানা যায়। ক্রেতাদের প্রত্যাশা, সরকারের এই পদক্ষেপের ফলে ভবিষ্যতে অনলাইনে কেনাকাটা আরও স্বচ্ছ ও সুরক্ষিত হবে।