বাংলাহান্ট ডেস্ক: কেন্দ্রীয় সরকার আদানি পাওয়ার লিমিটেডের (এপিএল) গড্ডা তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পকে ভারতের (India) জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিডের সঙ্গে যুক্ত করার অনুমতি দিয়েছে। ঝাড়খণ্ডের গড্ডায় অবস্থিত এই আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি মূলত বাংলাদেশের জন্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্দেশ্যে গড়ে তোলা হয়েছিল। ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে আদানি পাওয়ার বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে ২৫ বছরের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহের চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। তবে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর পরিস্থিতি বদলে যাওয়ায় কোম্পানিটি ভারতীয় বাজারে বিদ্যুৎ বিক্রির অনুমতি চেয়ে সরকারের কাছে আবেদন করে।
ভারতে (India) অনুমোদন পেল আদানির বিদ্যুৎ প্রকল্প:
‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আদানি পাওয়ার ভারত (India) সরকারকে একটি চিঠি দিয়ে জানায় যে, দেশটিতে বিদ্যুতের চাহিদা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এর ফলে প্রকল্পের ধারাবাহিকতা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই কেন্দ্র সরকার বিদ্যুৎ সংক্রান্ত কয়েকটি নিয়মে সংশোধন আনে, যার ফলে গড্ডা প্রকল্পকে ভারতীয় বিদ্যুৎ গ্রিডের সঙ্গে যুক্ত করার পথ সুগম হয়।
আরও পড়ুন: আগামীকাল ধনতেরাস, শুরু দীপাবলির মহাপর্ব! কবে মহালক্ষ্মী-গোবর্ধন পুজো? জানুন ভাইফোঁটার শুভ সময়
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, আদানি পাওয়ারকে ভারতের (India) তরফ থেকে ওভারহেড ট্রান্সমিশন লাইন বসানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছে, যা গড্ডা ও পোরিয়াহাট মহকুমার ৫৬টি গ্রামের মধ্য দিয়ে যাবে। বিদ্যুৎ আইন, ২০০৩-এর ধারা ১৬৪ অনুযায়ী কোম্পানিটিকে টেলিগ্রাফ দপ্তরের সমান অধিকার দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, তারা প্রয়োজনে জমির উপর দিয়ে বা নিচ দিয়ে বিদ্যুৎ লাইন স্থাপন করতে পারবে।
এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে আদানি পাওয়ার ভারতীয় (India) বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থাগুলোকেও বিদ্যুৎ বিক্রি করতে পারবে। এর ফলে দেশের সেই সব এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের ঘাটতি মেটানো সম্ভব হবে, যেখানে বর্তমানে বিদ্যুতের অভাব রয়েছে। পাশাপাশি জাতীয় গ্রিডের স্থিতিশীলতাও এতে বৃদ্ধি পাবে।

আরও পড়ুন:‘বিহারে হয়েছে, বাংলাতেও হবে SIR’, মমতার হুঁশিয়ারির পর সাফ জানিয়ে দিলেন অমিত শাহ
ভারত (India) সরকার আদানি পাওয়ারকে ২৫ বছরের জন্য এই সুবিধা দিয়েছে। তবে ট্রান্সমিশন লাইন বসানোর জন্য কোম্পানিটিকে এখনও একাধিক দফতর ও মন্ত্রকের অনুমোদন নিতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে স্থানীয় প্রশাসন, রেলওয়ে, ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি, স্টেট হাইওয়ে অথরিটি, নাগরিক উড্ডয়ন মন্ত্রক ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ছাড়পত্র। এই সব অনুমোদন সেন্ট্রাল ইলেকট্রিসিটি অথরিটির কাছে জমা দিতে হবে। পরিশেষে সেন্ট্রাল ইলেকট্রিসিটি ইনস্পেক্টরের চূড়ান্ত অনুমতি পাওয়ার পরই ট্রান্সমিশন লাইন চালু করা যাবে।
এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ভারত (India) সরকার একদিকে যেমন জাতীয় বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করতে চাইছে, অন্যদিকে বেসরকারি উদ্যোগের মাধ্যমে উৎপাদিত বিদ্যুতের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করার দিকেও পদক্ষেপ নিচ্ছে। গড্ডা প্ল্যান্টের সংযোগ স্থাপন হলে ঝাড়খণ্ডসহ পূর্ব ভারতের বহু অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবরাহের মান আরও উন্নত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।