বাংলা হান্ট ডেস্ক: বিগত কয়েকদিন ধরে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায় বেলাগাম গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে রীতিমতো উত্তপ্ত ওই এলাকা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনলেও, এখনো পর্যন্ত শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরে আসেনি মুর্শিদাবাদে (Adhir Ranjan Chowdhury)। যার ফলে ওই এলাকায় বন্ধ করা হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। ১৬৩ ধারা জারি করে এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ফলে অনলাইন লেনদেন, চিকিৎসা পরিষেবা, শিক্ষা পোর্টাল বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিয়েছে। এমনকি নেট বন্ধ রাখায় সাধারণ মানুষ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। আর এই পরিস্থিতির মাঝেই এবার মুখ খুললেন মুর্শিদাবাদের পাঁচ বছরের প্রাক্তন সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury)। এমন পরিস্থিতি নিয়ে আঙ্গুল তুলেছেন প্রশাসন সহ সরকারের দিকে।
মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ অধীর রঞ্জন চৌধুরীর (Adhir Ranjan Chowdhury):
সম্প্রতি সমাজ মাধ্যমে তিনি একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। আর সেই ভিডিওতেই তিনি মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতির বিস্তারিত সমস্যা জানিয়ে এটিকে পরিকল্পিত ঘটনা বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, “এর আগে নির্বাচনের সময় শক্তিপুরে রামনবমীর দিন সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরি করা হয়েছিল পরিকল্পিতভাবে। আর এবারও একটা উৎসবের দিনে পরিকল্পিতভাবে বেলডাঙ্গায় ষড়যন্ত্র করা হলো।” অধীর বাবুর মতে এই ঘটনায় ঠিক কি হয়েছে কেউ কিছু জানে না, কিন্তু বিষয়টিকে হানাহানির দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এরপরই তিনি দাবি করেন, “মণিপুরে সাতটি জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রয়েছে সেকথা সকলেরই জানা। কিন্তু হঠাৎ করে বহরমপুর সমেত গোটা মুর্শিদাবাদের জেলা এবং তার আশেপাশে জেলাগুলিতে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করার কত বড় কারণ রয়েছে আমরা কেউই জানিনা।” এই নিয়ে তিনি বলেছেন যদি সত্যিই কোন বড় কারণ থেকে থাকে তাহলে মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি ভাষ্য থাকা উচিত। কিন্তু এদিকে দেখা যাচ্ছে আমরা সকলেই অন্ধকারে ডুবে রয়েছি। আর উল্টোদিকে এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কিছু গোষ্ঠী গুজব রটাচ্ছে এমনটাই দাবি মুর্শিদাবাদের প্রাক্তন সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরীর (Adhir Ranjan Chowdhury)।
আরো পড়ুন : সুন্দরবন বা কোচবিহারে পাঠানোর হুমকি! ‘ব্যাগ গুছিয়ে রাখুন’! কাকে নিশানা কুণাল ঘোষের?
তিনি তীব্র ক্ষোভ বহিঃপ্রকাশ করে বলেছেন তাকে যেন ওই এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হোক। তিনি সেখানকার প্রাক্তন জনপ্রতিনিধি। কেনো তাকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না এই নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। এমনকি সেখানে মুখ্যমন্ত্রীকে শান্তির বার্তা প্রেরণ করারও অনুরোধ জানিয়েছেন। সরকারকে খোলাখুলি ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করেছেন। এবং তাদেরকেও গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখার সুযোগ দিতে বলেছেন।
আরো পড়ুন : ক্লাস ওয়ানেই ৪.২৭ লক্ষ টাকা! মেয়ের স্কুল ফিস দেখে মাথায় হাত বাবার
তবে তিনি শুধু একাই নন, এর আগেও বিরোধী দলের অনেকেই এই নিয়ে ক্ষোভ বহিঃপ্রকাশ করেন। দুদিন আগেই বেলডাঙার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার জন্য বিরোধী নেতা সুকান্ত মজুমদার সেখানে গেলে তার পথ আটকে দেওয়া হয়। এলাকায় প্রবেশ করার আগেই পুলিশ এসে গ্রেফতার করে তাকে। আর এবার প্রতিবাদের সুর অধীর রঞ্জন চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury) গলায়।
প্রসঙ্গত, ঘটনার সূত্রপাত বেলডাঙ্গার কার্তিক পুজোকে কেন্দ্র করে। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর সঙ্গে তীব্র সংঘাত তৈরি হয়। যে সংঘাত রূপ নেয় মারামারি, হানাহানিতে। এমনকি এই সংঘাতের জেরে আহত হয়েছেন অনেকেই। তাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেখানে নামানো হয়েছে পুলিশ ফোর্স। জারি করা হয়েছে ১৬৩ ধারা। যদিও পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে, তবুও লাগাতার পুলিশি টহল ও নজরদারি চলছে।
ওকে