বাংলাহান্ট ডেস্কঃ হিন্দু ধর্মের অন্তর্গত প্রায় সকলেই কোনো না কোনো তিলক ধারন করেন। শৈব, বৈষ্ণব, তান্ত্রিক হিন্দু ধর্মের প্রায় সব শাখা উপশাখাতেই তিলক ধারনের প্রচলন আছে। হিন্দু বাড়ির মহিলারাও সাধারনভাবে কুমকুম বা সিঁদুরের টিপ পরিধান করেন। সম্প্রদায়ভেদে চন্দন, খড়িমাটি জাতীয় গুঁড়া, ভস্ম প্রভৃতি দিয়ে তিলক অঙ্কিত হয়। সাধারনত কপালে তিলক পরিধানের রীতি থাকলেও বৈষ্ণবরা দেহের বিভিন্ন অংশে তিলক কাটে।
কপালে দুইটি ভ্রূর মাঝ বারবার তিলক কাটেন অনেকেই। দেহতত্ত্ব মতে এখানে আজ্ঞাচক্র থাকে৷ যেটি আমাদের শরীরে উপস্থিত ৭টি চক্রের মধ্যে একটি৷ আবার শরীরতত্ত্ব অনুযায়ী, কপালের এই স্থানে থাকে পিনিয়ল গ্ল্যান্ড থাকে৷ এই গ্ল্যান্ডকে উদ্দীপিত করলে মস্তিষ্কের মধ্যে এক অন্যধরনের প্রকাশ অনুভূতি হতে থাকে৷ তিলক সেই অনুভূতিকেই আরও ভালো ভাবে উপলব্ধি করার জন্য ব্যবহার হয়।
হিন্দু মতে ললাত ইষ্ট দেবতার প্রতীক ৷ এখানে তিলক লাগিয়ে ইষ্টদেবকে স্মরণ এবং শরীরের যাবতীয় চেতনাকে একস্থানে কেন্দ্রীভূত করা হয়ে থাকে৷ আধুনিক মনোবিজ্ঞানীরা বলেন , কাউকে দেখার সময় সেই মানুষটির মাথায় দৃষ্টি যায় সবার আগে, তাই তিলক বা টিপ-এর মাধ্যমে সেই দৃষ্টিকে আকর্ষন করা সম্ভব।
প্রসঙ্গত, বৈদিক যজ্ঞানুষ্ঠানে ললাটে হোমভস্মের টিকা ধারণ প্রথার চল ছিল। ১০ম-১১শ শতক থেকে শৈব সম্প্রদায়ের মধ্যে তিলক ধারণ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। বাংলা সাহিত্যের আদিতম নিদর্শন চর্যাপদেও ‘বাণচিহ্ন’ নামে তিলক ধারনের উল্লেখ আছে। এখনো যে কোনো হিন্দু ধর্মের তীর্থ স্থানে বা ধর্ম সভায় তিলক ধারনের রীতি বর্তমান।