আফগান সীমান্তে রক্তাক্ত রাত, তালিবান হামলায় ৫৮ নয় ২৩ পাক সেনা নিহত, বিবৃতি দিয়ে জানাল পাকিস্তান

Published on:

Published on:

বাংলাহান্ট ডেস্ক: শনিবার রাতে ফের রক্তাক্ত সংঘর্ষে কাঁপল আফগানিস্তান-পাকিস্তান (Afghanistan-Pakistan) সীমান্ত। আফগান তালিবান বাহিনীর আকস্মিক হামলায় মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২৩ জন পাকিস্তানি সেনার। ইসলামাবাদের সরকারি মুখপাত্র রবিবার স্বীকার করেছেন এই হামলার ঘটনা। তবে পাল্টা আঘাতে ২০০ জনেরও বেশি তালিবান ও তাদের সহযোগী নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে পাকিস্তান সেনা। পাক সেনার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ দফতর (আইএসপিআর)-এর তরফে রাতভর চলা সংঘর্ষের বিস্তারিত বিবৃতি প্রকাশ করা হয়েছে।

উত্তপ্ত আফগানিস্তান-পাকিস্তান (Afghanistan-Pakistan) সীমান্ত

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “শনিবার রাত থেকে রবিবার ভোর পর্যন্ত সীমান্তের (Afghanistan-Pakistan) বিভিন্ন অঞ্চলে তীব্র লড়াই হয়েছে। ২৩ জন পাকিস্তানি সেনা শহিদ হয়েছেন, আহত ২৯। পাল্টা আক্রমণে ধ্বংস করা হয়েছে একাধিক তালিবান ঘাঁটি। গোপন সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্তত ২০০ জন তালিবান ও তাদের সহযোগী গোষ্ঠীর সদস্য নিহত হয়েছে।” পাকিস্তানের দাবি, এই হামলা ছিল সম্পূর্ণ অকারণ ও উসকানিমূলক। ইসলামাবাদের তরফে কোনো প্ররোচনা দেওয়া হয়নি বলেও জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন:২৬০০০ ইস্যু: ‘আগে আপনারা হাই কোর্টে যান’, ‘যোগ্য’দের আবেদনও খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট

হামলার নেপথ্যে আফগান তালিবানের পাশাপাশি পাকিস্তানি (Afghanistan-Pakistan) তালিবান বা টিটিপির ভূমিকা রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পাকিস্তান বহুদিন ধরে অভিযোগ করে আসছে যে টিটিপিকে ভারতের সমর্থন রয়েছে। রবিবারের বিবৃতিতেও ইসলামাবাদ একই দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছে। পাকিস্তানের সেনা মুখপাত্র হামলাকে ‘কাপুরুষোচিত’ বলে উল্লেখ করে বলেন, “এই আক্রমণের লক্ষ্য সীমান্তে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গি কার্যকলাপকে আরও উৎসাহিত করা।” আইএসপিআর জানিয়েছে, আফগান বাহিনী শনিবার রাতে খাইবার পাখতুনখোয়ার আঙ্গুর আড্ডা, বাজৌর, খুররম, দির, চিত্রাল এবং বালোচিস্তানের বাহরাম চাহ এলাকায় হামলা চালায়। পাল্টা আত্মরক্ষার্থে পাকিস্তান সেনা সীমান্ত পেরিয়ে তালিবানের ঘাঁটিগুলিতে আঘাত হানে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আমাদের আক্রমণ ছিল লক্ষ্যনির্ভর। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি যাতে সাধারণ মানুষের কোনও ক্ষতি না হয়।”

উল্লেখযোগ্যভাবে, এই হামলার কয়েকদিন আগেই আফগানিস্তানের (Afghanistan-Pakistan) রাজধানী কাবুলে বিমান হামলা চালানো হয়েছিল। সেই ঘটনার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছিল কাবুলের তালিবান সরকার। তাদের দাবি, শনিবারের সীমান্ত হামলা ছিল সেই ঘটনারই জবাব। আফগান সরকারের মুখপাত্র জানিয়েছেন, “আমাদের পাল্টা আঘাতে ৫৮ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত এবং বেশ কয়েকটি পাক ঘাঁটি দখল করা হয়েছে।” যদিও ইসলামাবাদ এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে।

Afghanistan-Pakistan war escaleted once again.

আরও পড়ুন:ধনতেরাসের আগে হুঁ হুঁ করে বাড়ছে সোনার দাম, সোমবার শহরে হলুদ ধাতুর দর কত?

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ আফগান (Afghanistan-Pakistan) হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, “দেশের প্রতিরক্ষা নিয়ে কোনও আপস হবে না। প্রতিটি প্ররোচনার কঠোর জবাব দেওয়া হবে।” অন্যদিকে, এই সংঘর্ষের সময়েই ভারতের সফরে রয়েছেন আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সময়ে সীমান্তে উত্তেজনা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে।

ইরান, সৌদি আরব ও কাতারের মতো দেশ ইতিমধ্যেই দুই পক্ষকে (Afghanistan-Pakistan) সংযম বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে। তবে নয়াদিল্লি এখন পর্যন্ত এই সংঘাত নিয়ে কোনও সরকারি প্রতিক্রিয়া জানায়নি। পরিস্থিতি এখনও উত্তপ্ত, এবং সীমান্তে সেনা মোতায়েন বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।