বাংলা হান্ট ডেস্ক: প্রিয় পোষ্যের মৃত্যু প্রত্যেকের কাছেই এক হৃদয়বিদারক ঘটনা। দীর্ঘদিনের সখ্যতার এই সম্পর্কে হঠাৎ ছেদ ঘটলে স্বাভাবিকভাবেই তা হয়ে ওঠে তীব্র মন খারাপের কারণ। শুধু তাই নয়, পোষ্যরাও রীতিমতো বাড়িরই একজন সদস্য হয়ে ওঠে। আর সেই কারণেই তাদের ছেড়ে চলে যাওয়া কাঁদিয়ে দেয় সবাইকে। যদিও, তাদের মৃত্যুর পরেও অকৃত্রিম ভালোবাসায় কোনোরকম ঘাটতি থাকেনা। তাই, তো অনেকেই সঠিক নিয়ম মেনে শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন পোষ্যদের।
ঠিক সেইরকমই এক ঘটনার প্রসঙ্গ এবার সামনে এল। জানা গিয়েছে যে, ঝাঁসির পুঞ্চ গ্রামে পোষ্য সারমেয়র মৃত্যুর পর শ্রাদ্ধের আয়োজন করা হয়। যেখানে উপস্থিত ছিলেন গ্রামের বিপুল সংখ্যক মানুষ। জানা গিয়েছে যে, ১৩ দিন আগে কালু নামের একটি কুকুর মারা যায়। তার পরেই ওই সারমেয়টিকে যারা পোষ্য হিসেবে রেখেছিলেন সেই পরিবারের সদস্যরা তাকে বেতোয়া নদীতে ভাসিয়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন।
তবে, এখানেই শেষ নয়, বরং ওই কুকুরটির মালিক লাখন এরপর তাঁর আত্মীয়-স্বজন, পরিচিত ও স্থানীয় লোকজনকে কালুর শ্রদ্ধানুষ্ঠানে আমন্ত্রণ করেন এবং নিয়ম মেনে শ্রাদ্ধের কাজও সম্পন্ন করেন। আর স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসে।
নিরাপত্তার অভাব ছিল না:
ঝাঁসির পুঞ্চ গ্রামের বাসিন্দা লাখন সিং-এর মতে, ১৩ দিন আগে তাঁর পোষ্য সারমেয় কালু মারা গেলে, তিনি সমস্ত নিয়ম মেনে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। যদিও, শেষকৃত্য সম্পন্ন করার পর তিনি শ্রাদ্ধানুষ্ঠানেরও ব্যবস্থা করেছিলেন। এই প্রসঙ্গে তিনি আরও জানান যে, ২০০১ সালে কালুকে নিয়ে আসেন তিনি। তারপর থেকেই সেখানে থাকত কালু। সে থাকাকালীন কোনো চুরি হয়নি এবং বাড়ির নিরাপত্তার জন্য কোনো কর্মচারীকেও নিয়োগ করতে হয়নি।
কালুর বয়স হয়েছিল ২১ বছর:
যদিও, লাখন জানান, বেশ কয়েকবার চুরির চেষ্টা হলেও কালু সব চেষ্টা একাই নস্যাৎ করে দেয়। মৃত্যুর সময়ে কালুর বয়স ২১ বছর হয়ে গিয়েছিল। এই ২১ বছরে, কোনো কেয়ারটেকারেরও প্রয়োজন হয়নি তাঁর। এই কারণেই হঠাৎ করে তাঁর বাড়িতে কেউ প্রবেশ করতে পারতনা। লাখন বলেন যে, কালু ২১ বছর ধরে তাঁর সাহায্য করেছে। এমতাবস্থায়, মৃত্যুর পর কালুর মৃতদেহ নদীতে ভাসিয়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়। পাশাপাশি, মানুষের মৃত্যুতে যেমন আচার-অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয় তেমনি কালুর ক্ষেত্রেও তার কোনো ত্রুটি রাখেননি লাখন। এছাড়াও, প্রায় ৫০০ জনের খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়।