বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বীরভূমের নলহাটি ২ নম্বর ব্লকের প্রাক্তন তৃণমূল নেতা বিভাস অধিকারী দীর্ঘদিন ধরেই প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) মামলায় অভিযুক্ত। এবার তাঁর বিরুদ্ধে আরও বড় ধরনের প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে, যেখানে আন্তর্জাতিক তদন্ত সংস্থার নাম ব্যবহার করে একটি ভুয়ো ‘থানা’ খুলে অর্থ আদায় করার কথা জানা গেছে। উত্তর প্রদেশের নয়ডা থেকে তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় তাঁর ছেলে এবং আরও কয়েকজনও আটক হয়েছেন।
নিয়োগ দুর্নীতির (Recruitment Scam) পর ‘ভুয়ো থানা’ বানিয়ে কোটি কোটি টাকা প্রতারণা
বিভাস অধিকারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি এবং তার সহযোগীরা নিজেদের নাম করে একটি ‘থানা’ চালাতেন, যেখানে বিভিন্ন মামলার তদন্তের নামে মানুষের কাছ থেকে টাকা তুলে নিতেন। শুধু তাই নয়, একটি ওয়েবসাইট চালিয়ে অনুদান ও অর্থ সংগ্রহের ছল ছক কষতেন তারা। পুলিশ ও তদন্তকারীরা তাদের বাড়ি ও অফিসে তল্লাশি চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ভুয়ো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আইডি কার্ড উদ্ধার করেছে। এই আইডি কার্ড দিয়ে তারা নানা অপরাধে জড়িত ব্যক্তিদের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করতেন।
এমনকি নিজেরাই বিভিন্ন মামলা দাখিল করতেন, পরে সেসব মামলার তদন্তের নামে অভিযুক্তদের ডেকে নিজেরা অর্থ আদায় করতেন, যা একটি সুসংগঠিত প্রতারণা চক্র বলে ধরা হচ্ছে। এর আগে প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়ানোর কারণে বিভাস অধিকারীর বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (সিবিআই ও ইডি) তদন্ত চালিয়েছে।
গত বছরের এপ্রিল মাসে বীরভূমের নলহাটিতে বিভাস অধিকারীর বাড়ি এবং তাঁর আশ্রমে সিবিআই তদন্তকারীরা তল্লাশি চালিয়ে বহু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র জব্দ করেছিল। স্থানীয়দের অভিযোগ, তাঁর আশ্রমের নেপথ্যে রয়েছে দুর্নীতির বড় অংকের টাকা।
এবার নয়ডা থেকে গ্রেফতারির মাধ্যমে এই দুর্নীতির গোড়া কাটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এই মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে এবং অন্যান্য জড়িতদের খোঁজে তল্লাশি ও অনুসন্ধান চলছে।
আরও পড়ুনঃ AC লোকাল উদ্বোধন করে দমদমে নামতেই সুকান্তকে ঘিরে তৃণমূল কর্মীদের বিক্ষোভ, তারপর….
বীরভূমের প্রভাবশালী এই তৃণমূল (Trinamool Congress) নেতা বিভাস অধিকারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির যে অভিযোগ উঠেছিল, তার গভীরতা প্রকাশ পেল এই নতুন গ্রেপ্তারির মাধ্যমে। শুধু প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) নয়, বরং একটি জালিয়াতি চক্র গড়ে আন্তর্জাতিক তদন্ত সংস্থার নাম ভাঙিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টিও অত্যন্ত উদ্বেগজনক। সরকারের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার সক্রিয় হস্তক্ষেপ ও কঠোর পদক্ষেপের মাধ্যমে এই দুর্নীতি ও প্রতারণার চক্র ভেঙে ফেলা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।