এবার চিনের ঋণের ফাঁদে লাওস! শ্রীলঙ্কার মতোই পরিস্থিতি হতে চলেছে এই দেশের

বাংলা হান্ট ডেস্ক: চিনের (China) কূটনৈতিক অভিসন্ধি এবার ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে। শুধু তাই নয়, চিনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে এবার শ্রীলঙ্কার মত অবস্থা হতে চলেছে আরও একটি দেশের। জানা গিয়েছে, বর্তমানে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ লাওস (Laos) অত্যন্ত অর্থনৈতিক সঙ্কটের সম্মুখীন হয়েছে। মূলত, ওই দেশ চিনের “Debt Trap Diplomacy”-র শিকার হয়েছে। এই প্রসঙ্গে আর্থিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন যে, পরিকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য চিনের কাছ থেকে বড় আকারের ঋণ নিয়েছিল লাওস। আর ওই কারণেই ঘটেছে বিপত্তি।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক রেটিং এজেন্সি মুডি’স উচ্চ ঋণের বোঝা এবং বহিরাগত ঋণের ম্যাচুরিটির অপর্যাপ্ত কভারেজ উল্লেখ করে জুনের মাঝামাঝি লাওসের ক্রেডিট রেটিং কমিয়েছে। শুধু তাই নয়, সিঙ্গাপুর পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা গিয়েছে, সংশ্লিষ্ট সংস্থাটি সতর্ক করেছে যে লাওসের ডিফল্ট ঝুঁকি এভাবেই চলতে থাকবে।

এমতাবস্থায়, বিশ্ব ব্যাঙ্কের প্রাথমিক অনুমানগুলি ইঙ্গিত দেয় যে লাওসের মোট পাবলিক এবং পাবলিকলি গ্যারান্টিযুক্ত ঋণ ২০২১ সালে জিডিপির ৮৮ শতাংশে পৌঁছবে। পাশাপাশি, ওই ঋণের পরিমান প্রায় ১৪.৫ বিলিয়ন ডলার। যার মধ্যে চিন-লাওস রেলওয়ে প্রকল্পের অর্থায়নও যুক্ত রয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ৪১৮ কিমি দীর্ঘ চিন-লাওস রেলওয়ে প্রকল্পে বেইজিং রেলওয়ে গ্রুপ সহ আরও দু’টি চিনা রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানির মধ্যে ৭০ শতাংশ অংশীদারিত্ব এবং একটি লাওতিয়ান রাষ্ট্রীয় কোম্পানির ৩০ শতাংশ অংশীদারিত্ব রয়েছে।

এই প্রসঙ্গে একটি ওয়েবসাইট অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, যখন ২০২১ সালের ডিসেম্বরে চিনা রেলপথের নির্মাণ শুরু হয়েছিল, তখন সেটিকে বৈদেশিক বিশেষজ্ঞরা চিনা বাণিজ্যের জন্য একটি চ্যানেল হিসাবে কাজ করার পরিবর্তে লাওসের সম্ভাব্য সুবিধা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। এমনকি, এটাও জানানো হয় যে, কুনমিং-ভিয়েনতিয়েন রেলপথ চিনকে থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, মায়ানমার, মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুরের সাথে সংযুক্ত করার ক্ষেত্রে নেটওয়ার্কের একটি লিঙ্ক হতে পারে।

shi jinping

পাশাপাশি, এটি দক্ষিণ চিনকে বন্দর এবং রপ্তানি বাজারে আরও বেশি সুযোগ করে দেবে। এমতাবস্থায়, লাওশিয়ান নেতারা আশা করেছিলেন যে ওই রেলপথ চিন এবং ইউরোপের মতো দূরবর্তী বাজারগুলিকে সংযুক্ত করে তাদের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে। এদিকে, ওই রেলপথ তৈরি করতে গিয়ে বাড়িঘর থেকে বাস্তুচ্যুত বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন যে তাদের খুব কম হারে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি, পরিবেশবিদরা বলেছেন যে, ওই নির্মাণটি প্রাকৃতিক আবাসস্থলকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, যা লাওসের বিপন্ন প্রজাতিগুলির ক্ষেত্রে রীতিমতো একটি বড়সড় “হুমকি”-র মত কাজ করেছে। আর এভাবেই রীতিমতো বিপদে পড়েছে লাওস।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর