“চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডিং ঘটল, কিন্তু…”, ভারতের সাফল্যে জ্বালাপোড়া চীনের! উগরে দিল হতাশা

বাংলা হান্ট ডেস্ক: চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ভারতের (India) চন্দ্রযান-৩ (Chandrayaan-3) সফলভাবে “সফট ল্যান্ডিং” করেছে। যার ফলে সমগ্ৰ বিশ্বের কাছে নয়া নজির তৈরি করেছে ভারত। কারণ, এই প্রথম কোনো দেশ চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছেছে। পাশাপাশি, ভারত বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসেবে চাঁদে পৌঁছল। ভারতের আগে আমেরিকা, সোভিয়েত ইউনিয়ন ও চিনও চাঁদে সফট ল্যান্ডিং করেছে। এদিকে, চন্দ্রযান-৩-এর সাফল্যের পর গ্লোবাল মিডিয়াগুলিও ভারতের প্রশংসা করছে।

তবে, মহাকাশে ভারতের সাফল্য চিনা মিডিয়া খুব একটা ভালো চোখে দেখছে না। এমনকি, চিনের মিডিয়া চন্দ্রযানের সাফল্যের দিকে না তাকিয়ে এই সংক্রান্ত ত্রুটিগুলো খুঁজতে ব্যস্ত রয়েছে। সম্প্রতি, চিনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র হিসাবে বিবেচিত গ্লোবাল টাইমস পত্রিকায় একটি আর্টিক্যাল প্রকাশিত হয়েছে। যেখানে গ্লোবাল মহাকাশ অর্থনীতিতে ভারত এবং চিনের তুলনা করার সময়, ভারতের সমালোচনা করে দুর্বল প্রমাণিত করার চেষ্টা করেছে।

আর্টিক্যালে বলা হয়েছে যে, চন্দ্রযান-৩-এর অবতরণ এইজন্য গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর “মেক ইন ইন্ডিয়া” ক্যাম্পেনের সাথে যুক্ত। নরেন্দ্র মোদী সরকারের স্বপ্ন ভারতকে বিশ্বের প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পরিণত করা। পাশাপাশি, মোদী সরকার আশা করছে এইভাবে মহাকাশ অভিযানের সাফল্যের মধ্য দিয়ে ভারতের ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টর যেমন এগিয়ে যাবে, তেমনি দেশের অর্থনীতিও উপকৃত হবে।

“ভারতের গন্তব্য এখনও অনেক দূরে; চিনকে পেছনে ফেলা সহজ নয়”: আর্টিক্যালে বলা হয়, ভারত সরকার চলতি বছর ইন্ডিয়ান স্পেস পলিসি ২০২৩ চালু করেছে। মোদী সরকার স্পেস লঞ্চ মার্কেটে তার অংশীদারিত্ব ২ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়েছে। চন্দ্রযান-৩-ও এই নীতির একটি অংশ ছিল। যার সাফল্য ভারতের আত্মবিশ্বাসকে আরও শক্তিশালী করেছে।

আর্টিক্যালে আরও বলা হয়েছে যে, “চন্দ্রযান-৩-এর সাফল্যের মানে এই নয় যে, ভারতের অর্থনীতি এটি থেকে উপকৃত হবে। ভারতকে সচেতন হতে হবে যে তার গন্তব্য অনেক দূরে। ওই খবর অনুযায়ী, সম্প্রতি ব্লুমবার্গে প্রকাশিত একটি আর্টিক্যালে বলা হয়েছে, ভারত স্পেস সেক্টরে দ্রুত অগ্রগতি করছে। পশ্চিমী দেশগুলি থেকে চিন এবং রাশিয়ার মধ্যে মতবিরোধের সুযোগ নিয়ে তারা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের একটি প্রধান সরবরাহকারী হিসাবে নিজেকে উপস্থাপন করছে। তবে এই মুহূর্তে চিনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা ভারতের পক্ষে সহজ নয়।

আরও পড়ুন: চন্দ্রযান ৩-এর সাফল্যের পর এল বড় তথ্য! ভারতে এইভাবে তৈরি হয়েছে ৪৫,০০০ কর্মসংস্থান, কি জানাল ISRO?

“চিনের ৬৪ টি লঞ্চ, ভারতের মাত্র ৫ টি”: মার্কিন থিঙ্ক ট্যাঙ্ককে উদ্ধৃত করে খবরে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের মার্চ নাগাদ স্পেস সেক্টরে চিনের অংশীদারিত্ব ছিল ১৩.৬ শতাংশ এবং ভারতের অংশীদারিত্ব ছিল মাত্র ২.৩ শতাংশ। ২০২২ সালে, যেখানে চিন ৬৪ টি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছিল সেখানে ভারত মাত্র ৫ টি উৎক্ষেপণ করতে সক্ষম হয়। পাশাপাশি, গত কয়েক বছরে ভারতীয় রকেটের সাফল্যের হার ৭০ শতাংশ। যা আমেরিকান, ইউরোপিয়, রাশিয়ান এবং চিনা রকেটের সাফল্যের হার থেকে অনেকটাই পিছিয়ে।

আরও পড়ুন: করতে চলেছে আরও একটি বড় কারনামা! Chandrayaan-3-এর সফল উৎক্ষেপণের পর ইতিহাস গড়তে চলেছে ISRO

“চন্দ্রযানের অবতরণ শেষ, কিন্তু…”: আর্টিক্যালে আরও বলা হয়েছে যে, এবার কোনো সন্দেহ নেই চন্দ্রযান-৩ এর অবতরণ সফল হয়েছে। তবে এই মিশনের কিছু ত্রুটিও উন্মোচিত হয়েছে। এই ত্রুটিগুলির মধ্যে অপর্যাপ্ত বহন ক্ষমতা, অপর্যাপ্ত অরবিটাল নির্ভুলতা (অরবিটাল একিউরেসি) এবং অপর্যাপ্ত কক্ষপথ নির্ধারণ ক্ষমতা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

After the success of Chandrayaan 3, Chinese newspapers are busy criticizing India

ভারতের আরও প্রচেষ্টা প্রয়োজন: ওই আর্টিক্যালে এটাও বলা হয়, “এটি বিশ্বাস করা যেতে পারে যে ভারত কমার্শিয়াল অ্যারোস্পেস এবং ব্রডার ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে ভূ-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সুবিধা পেয়েছে। তবে এই সাফল্য থেকে শিল্প ও অর্থনৈতিক বৃদ্ধি লাভ করা সহজ নয়।” ভারত এখনও কমার্শিয়াল অ্যারোস্পেস ও হাই-টেক ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে বড় মার্কেট শেয়ার খুঁজছে। তাই আরও প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর