বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কখনও নেহাত মজা, কখনও আবার আক্ষেপের সুরে সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় (Sabitri Chatterjee) বলেছেন, ‘যখনই আমি কারোর প্রেমে পড়েছি, তখনই কয়েকদিন পর জানতে পেরেছি তিনি বিবাহিত’। গত বছর ‘দাদাগিরি’র মঞ্চে এসেও একথা বলেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী। সেই সময় চেনা হাসি থাকলেও, তার পিছনে যে বেদনা লুকিয়ে রয়েছে তা অনেকেই বুঝতে পেরেছিলেন। একসময় মহানায়ক উত্তম কুমারের (Uttam Kumar) সঙ্গে তাঁর ‘প্রেম’ নিয়ে বিস্তর চর্চা হয়েছে। তবে অনেকেই জানেন না, ‘স্বামী’ হিসেবে কিন্তু অন্য আর এক ব্যক্তিকে মেনে নিয়েছিলেন অভিনেত্রী।
মনে-প্রাণে কাকে ‘স্বামী’র মর্যাদা দিয়েছিলেন সাবিত্রী (Sabitri Chatterjee)?
‘ম্যাটিনি আইডল’ উত্তম কুমারের জীবনে বহুবার প্রেম এসেছে। গৌরী দেবীর সঙ্গে সাজানো সংসার ছিল তাঁর। কিন্তু তা সত্ত্বেও মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের সঙ্গে নাম জড়িয়েছিল অভিনেতার। এরপর অভিনেত্রী সুপ্রিয়া দেবীর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হয় উত্তম কুমারের। এসবের মাঝে বহুবার সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের (Sabitri Chatterjee) সঙ্গেও অভিনেতার প্রেমের গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল। শোনা যায়, তাঁর প্রিয় ‘সাবু’র অন্য কোথাও বিয়ে হয়ে যাবে সেটা নাকি মানতে পারতেন না মহানায়ক। সেই জন্য অভিনেত্রীর জন্য সম্বন্ধ এলেই তিনি তা ভেস্তে দিতেন।
উত্তম কুমারের সঙ্গে সাবিত্রীদেবীর প্রেমের গুঞ্জন বহু চর্চিত হলেও অনেকেই জানেন না, এরপর তাঁর জীবনে প্রেমের হাওয়া বয়ে নিয়ে এসেছিলেন আর এক অভিনেতা। তিনি হলেন, সর্বেন্দ্র সিং (Sarbendra Singh)। কেরিয়ারের নিরিখে মহানায়কের মতো সফল ছিলেন না তিনি, তবে ভাগ্যচক্রে সর্বেন্দ্রবাবুও বিবাহিত ছিলেন। শোনা যায়, একটা সময় নেশায় বুঁদ হয়ে সাবিত্রীদেবীর বাড়িতে পড়ে থাকতেন তিনি। মাত্রাতিরিক্ত মাদকাসক্তির প্রভাব তাঁর শরীরের ওপরেও পড়তে শুরু করেছিল। অসম্ভব পেটে ব্যথা হতো তাঁর।
আরও পড়ুনঃ চিনতে পারছেন এই টলিউড নায়িকাকে? ছোট থেকে একটুও বদলায়নি মুখ! বলুন তো কে
শোনা যায়, সাবিত্রীদেবী সেই যন্ত্রণা কমানোর সকল চেষ্টা করেছিলেন। এমনকি মুম্বইয়ে গিয়ে সর্বেন্দ্রবাবুর অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থাও করেছিলেন। অভিনেত্রী আশা করেছিলেন, মুম্বইয়ে নিজের মনের মানুষের সঙ্গে একান্তে এক মাস সময় কাটাবেন। তবে তেমনটা হয়নি। সাবিত্রীকে ভালোবাসলেও নিজের স্ত্রীকে নিয়েই মুম্বইয়ে গিয়েছিলেন অভিনেতা। শোনা যায়, সর্বেন্দ্রবাবু এবং সাবিত্রীদেবীর সামাজিকভাবে বিয়ে না হলেও মনে মনে একে অপরকে স্বামী-স্ত্রী মেনে নিয়েছিলেন তাঁরা। নিজের আত্মজীবনী ‘সত্যি সাবিত্রী’তে এই সর্বেন্দ্রবাবুকেই নিজের ‘স্বামী’র মর্যাদা দিয়েছিলেন তিনি।
গুঞ্জন শোনা যায়, সাবিত্রীদেবী কারোর ঘর ভাঙতে চাইতেন না। সেই কারণে চিরকাল সর্বেন্দ্রবাবুকে দূর থেকেই ভালোবেসেছেন। অভিনেতা যখন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তখনও দূর থেকেই শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেছিলেন তিনি। শেষবারের মতো ফুলের মালাটুকুও নাকি দিতে দেওয়া হয়নি তাঁকে।