বাংলাহান্ট ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশে (Uttar Pradesh) আবারও এক নৃশংস খুনের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। সম্ভলের চন্দৌসি এলাকায় এক যুবককে ঘুমন্ত অবস্থায় হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যার পর দেহ গ্রাইন্ডার মেশিনের সাহায্যে টুকরো করার অভিযোগ উঠেছে তার স্ত্রী ও তার প্রেমিকের বিরুদ্ধে। পুলিশ জানিয়েছে, দেহ লোপাটের চেষ্টায় দেহের বিভিন্ন অংশ আলাদা আলাদা জায়গায় ফেলে দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু একটি দেহাংশে উল্কি থাকা নামই আসল রহস্য উন্মোচন করে।
উত্তরপ্রদেশে (Uttar Pradesh) ফের পরকীয়ার জেরে স্ত্রীর হাতে খুন স্বামী
ঘটনার সূত্রপাত গত ১৮ নভেম্বর, যখন চুন্নি মহল্লার বাসিন্দা রুবি নিজের স্বামী রাহুলের নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন। প্রায় এক মাস পর, ১৫ ডিসেম্বর, ইদগা এলাকার একটি নালা থেকে এক বিভৎস ও ক্ষতবিক্ষত দেহাংশ উদ্ধার করা হয়, যার মাথা, হাত ও পা অনুপস্থিত ছিল। ময়নাতদন্ত ও ফরেন্সিক পরীক্ষার পর তদন্তকারীরা লক্ষ্য করেন দেহাংশের এক অংশে ‘রাহুল’ নামটি উল্কি করা রয়েছে। এই সূত্র ধরে নিখোঁজ ব্যক্তির তালিকা খুঁজতে গিয়ে পুলিশ রুবির দেওয়া নিখোঁজ রিপোর্টের সন্ধান পায়।
আরও পড়ুন:হিংসার আগুনে জ্বলছে বাংলাদেশ, আটক ভারতীয় পড়ুয়াদের সুরক্ষার দাবিতে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি
সন্দেহের তীর ঘুরে যায় রুবির দিকে। তাকে আটক করে কঠোর জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ সুপার কেকে বিশ্নোইয়ের বক্তব্য অনুযায়ী, রুবি হত্যার ঘটনা স্বীকার করে নেন। তার বয়ানের ভিত্তিতে প্রেমিক গৌরবকেও আটক করা হয় এবং ২০ ডিসেম্বর উভয়কে গ্রেফতার করা হয়। জেরায় বেরিয়ে আসে নৃশংস হত্যার বিবরণ। রুবি ও গৌরব স্বীকার করেন, রাহুল একদিন তার প্রেমিকের সাথে স্ত্রীকে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখে ফেলেন, যার পরই তাকে সরিয়ে দেবার পরিকল্পনা করে দুজন।
পরিকল্পনা অনুসারে, ঘুমন্ত রাহুলকে প্রথমে হাতুড়ি ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর দেহ লোপাট করতে একটি কাঠ টুকরো করার গ্রাইন্ডার মেশিন আনা হয় এবং তার সাহায্যে দেহকে একাধিক টুকরোয় বিভক্ত করা হয়। গঙ্গায় মাথা, হাত ও পা ভাসিয়ে দেওয়া হয়, যাতে পরিচয় অজানা থাকে। বাকি দেহাংশ ফেলা হয় নালায়। কিন্তু উল্কি করা নামটিই শেষ পর্যন্ত তাদের পরিকল্পনা ভেঙে দেয়।

এই ঘটনা গত মার্চে মেরঠে সংঘটিত আরেকটি চাঞ্চল্যকর খুনের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে, যেখানে মার্চেন্ট নেভি অফিসার সৌরভ রাজপুতকে তার স্ত্রী ও প্রেমিক হত্যা করে দেহ টুকরো করে ড্রামে ভরেছিল। সম্ভলের এ ঘটনায় একই ধরনের নিষ্ঠুরতা ও পরিকল্পনার ছাপ দেখে পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, কীভাবে ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরাই এমন ভয়াবহ অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে।












