বাংলাহান্ট ডেস্ক:- ভারত নিয়ে ফের একবার সতর্কবার্তা পেল আমেরিকা (America)। চিনের (China ) তিনজিয়ানে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (SCO) বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi), রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Vladimir Putin) এবং চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং (Xi Jinping) একমঞ্চে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে পশ্চিমী দুনিয়ায়। বৈঠকে এই তিন শক্তিধর রাষ্ট্রনেতার উপস্থিতি আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মহলে এক নতুন বার্তা দিয়েছে, যেখানে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে গ্লোবাল সাউথ এখন আর পশ্চিমের কথায় চলবে না। এই বার্তা আরও জোরালোভাবে তুলে ধরেছেন ফিনল্যান্ডের (Finland) প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাব(Alexander Stubb)। তিনি সরাসরি আমেরিকা এবং ইউরোপীয় দেশগুলিকে সতর্ক করে বলেছেন, গ্লোবাল সাউথের দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে গেলে শ্রদ্ধাশীল হতে হবে, আধিপত্যবাদী মনোভাব রাখলে গ্লোবাল ওয়েস্ট নিজেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
আমেরিকাকে সতর্কবার্তা (America)
স্টাব এই মন্তব্য করেছেন এসসিও বৈঠকের ঠিক পরে। তাঁর বক্তব্য, “শুধু আমার ইউরোপীয় সহকর্মীদের নয়, মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বলছি—আমরা যদি ভারতের মতো গ্লোবাল সাউথের দেশগুলির সঙ্গে মর্যাদাপূর্ণ ও সহযোগিতামূলক কূটনীতি বজায় রাখতে না পারি, তাহলে এই খেলায় আমরা হেরে যাব।” তাঁর মতে, চিনে অনুষ্ঠিত দুই দিনের বৈঠকটি পশ্চিমী দুনিয়াকে বিশেষ করে আমেরিকাকে (America) চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ শুরু হয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন:- মোদী-পুতিনের “দোস্তানা”, পাকিস্তানের চিন্তা বাড়িয়ে ভারতকে আরও S-400 দিতে ইচ্ছুক রাশিয়া
এই মন্তব্য নিছকই কোনও ইউরোপীয় প্রেসিডেন্টের নয়। আলেকজান্ডার স্টাব ওয়াশিংটনের (America) সঙ্গে বিশেষ করে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald Trump) অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। এমনকি একটি আন্তর্জাতিক মহলের মতে, বিশ্বের কয়েকজন বিরল পশ্চিমী রাষ্ট্রনেতার মধ্যে একজন, যাঁদের পরামর্শে ট্রাম্প গুরুত্ব দেন, সেই তালিকায় রয়েছেন ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট। ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়েও ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনায় মুখ্য ভূমিকা পালন করছে ফিনল্যান্ড।
গত মার্চ মাসে ফ্লোরিডার মার-এ-লাগো রিসর্টে ট্রাম্পের সঙ্গে সাত ঘণ্টা গলফ খেলেছেন স্টাব, যার মধ্যে দীর্ঘ আলোচনাও হয়েছে বলে দাবি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের। এএফপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সুইডিশ ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স-এর গবেষক জেন হ্যালেনবার্গ বলেন, “স্টাব এমন একমাত্র ইউরোপীয় নেতা, যাঁর ট্রাম্পের সঙ্গে অভাবনীয় প্রবেশাধিকার রয়েছে—যা ইউরোপের কোনও ছোট দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের ক্ষেত্রে আগে দেখা যায়নি।”

আরও পড়ুন:- ট্রাম্পের সমগ্র পরিকল্পনায় জল ঢাললেন পুতিন! আরও সস্তায় রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনছে ভারত
এসসিও বৈঠকে মোদী, পুতিন এবং শি একত্র হওয়া শুধু প্রতীকী নয়, বরং এক বিকল্প শক্তি অক্ষ গঠনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। মার্কিন (America) নেতৃত্বাধীন পশ্চিমী দেশগুলির একাধিপত্যের বিরুদ্ধে গ্লোবাল সাউথের এই অবস্থান আগামী বিশ্ব রাজনীতিকে বড়সড়ভাবে প্রভাবিত করতে চলেছে, এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ফিনল্যান্ডের মতো ইউরোপীয় দেশের তরফে এমন মন্তব্য স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে পশ্চিমেও এখন এই পরিবর্তনের চাপ টের পাওয়া যাচ্ছে।