বাংলাহান্ট ডেস্ক: রাষ্ট্রসংঘে ফের একবার সন্ত্রাসী পাকিস্তানকে কড়া ভাষায় তুলোধোনা করল ভারত (India)। কেরলের বাম সাংসদ পি.আর. প্রেমচন্দ্রন পাকিস্তানকে আক্রমণ করে বলেন, “পাকিস্তান হল হিংসা, গোঁড়ামি, অসহিষ্ণুতা এবং সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর।” একইসঙ্গে তিনি স্পষ্ট করে জানান, জম্মু ও কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। সম্প্রতি রাষ্ট্রসংঘের ফোর্থ কমিটির বৈঠকে পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ তোলে। পাকিস্তানের সেই ভুয়ো প্রচারের জবাবে ভারতের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত প্রেমচন্দ্রন দৃঢ় কণ্ঠে পাকিস্তানের আসল চেহারা তুলে ধরেন।
রাষ্ট্রসঙ্ঘে পাকিস্তানকে তুলোধোনা ভারতের (India)
তিনি বলেন, “অত্যন্ত দুঃখজনক যে পাকিস্তান বারবার বিশ্বমঞ্চে দাঁড়িয়ে ভারতের (India) কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে মিথ্যা প্রচার চালাচ্ছে। যে দেশ নিজেই সন্ত্রাসবাদকে রাষ্ট্রনীতির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে, তারা আজ বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রকে কলুষিত করার চেষ্টা করছে। পাকিস্তান যে সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর, তা গোটা বিশ্ব জানে। ভারত পহেলগাঁও হামলার কথা ভুলে যায়নি। নিজেদের আত্মরক্ষার জন্যই আমরা সন্ত্রাসের ঘাঁটিতে আঘাত হেনেছিলাম।”
আরও পড়ুন: ‘রিল’ নয়, ‘রিয়েল’ সাফল্যের গল্প লিখলেন হর্ষিতা দাভে, মাত্র২২ বছর বয়সেই হলেন রাজ্যের ডেপুটি কালেক্টর
এর পাশাপাশি, অধিকৃত কাশ্মীরে পাকিস্তানের দমন-পীড়ন নীতি নিয়েও তীব্র সমালোচনা করেন প্রেমচন্দ্রন। তিনি বলেন, “আমরা (India) পাকিস্তানকে স্পষ্ট জানাতে চাই যে তারা যেন অবৈধভাবে দখল করে রাখা কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধ করে। সেখানে নিরীহ মানুষরা নিজেদের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন করছে, আর পাকসেনা ও তাদের মদদপুষ্ট জঙ্গিরা সেই আন্দোলনকারীদের হত্যা করছে।” তাঁর বক্তব্যে স্পষ্টভাবে উঠে আসে যে পাকিস্তান শুধুমাত্র ভারতের বিরুদ্ধেই নয়, নিজেদের নাগরিকদের বিরুদ্ধেও ভয়ঙ্কর অপরাধ করছে।
প্রেমচন্দ্রন পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি নিয়েও মুখ খুলে বলেন, “পাকিস্তান এমন এক দেশ যেখানে সামরিক একনায়কতন্ত্র চালু। সেখানে ভুয়ো নির্বাচন হয়, জনপ্রিয় নেতাদের কারাগারে পাঠানো হয়, ধর্মীয় উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে এবং রাষ্ট্রনির্দেশিত সন্ত্রাসবাদ দেশের নিয়ামক শক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন একটি রাষ্ট্রের অন্যদের গণতন্ত্রের পাঠ পড়ানোর কোনো অধিকার নেই।” তাঁর বক্তব্যে পাকিস্তানের কূটনৈতিক দ্বিচারিতা এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের (India) ভাবমূর্তি নষ্ট করার ব্যর্থ প্রচেষ্টার কড়া সমালোচনা উঠে আসে।
আরও পড়ুন: নজরে ১০ই নভেম্বর, BJP নেতা অর্জুন সিং-র মামলায় বড় নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের
পাকিস্তানের এই অপপ্রচারের জবাব দিতে পিছিয়ে থাকেননি বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয়মন্ত্রী নিশিকান্ত দুবেও। তিনি বলেন, “পাকিস্তান এক ব্যর্থ রাষ্ট্র, যারা নিজেদের সন্ত্রাসবাদী নীতি দিয়ে গোটা দক্ষিণ এশিয়াকে অস্থির করে তুলেছে। তারা আজও অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নেয়নি। ভারত কখনও তাদের মিথ্যা প্রচারে প্রভাবিত হবে না। কাশ্মীর ভারতেরই (India) অংশ ছিল, আছে এবং থাকবে।”
রাষ্ট্রসংঘের এই বৈঠকে ভারতের (India) অবস্থান একবারে স্পষ্ট হয়ে যায়—সন্ত্রাসবাদকে প্রশ্রয় দেওয়া দেশগুলির বিরুদ্ধে ভারত তার কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক অবস্থান থেকে একচুলও নড়বে না। পাকিস্তানের ধারাবাহিক মিথ্যা প্রচার, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও সীমান্তে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে ভারত আবারও বিশ্বমঞ্চে দৃঢ় সুরে আওয়াজ তুলল।