বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কিছুদিন আগেই রাজ ভবনের সামনে বৃষ্টির জমা জলের মধ্যে পড়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গিয়েছিলেন এক তরতাজা তরুণ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছিলেন জলে পড়ে যাওয়া অবস্থায় একটি বিদ্যুতের খুঁটি হাত দিয়ে ধরতে গিয়েই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। এই খবর রীতিমতো শোরগোল ফেলে দিয়েছিল কলকাতাজুড়ে। ফের একবার কাঠগড়ায় ছিল প্রশাসন। কেন ওই সময় বিদ্যুতের সংযোগ বন্ধ করা হয়নি তা নিয়েও উঠেছিল প্রশ্ন। পরিবারের কাতর আবেদন ছিল, তারা ক্ষতিপূরণ চান না, বদলে এমন ঘটনা যাতে আর না ঘটে সেদিকে নজর দিক সরকার।
কিন্তু কয়েকদিন না কাটতে কাটতেই ফের একবার সামনে এলো একই রকম মর্মান্তিক দৃশ্য। কয়েকদিন ধরেই বৃষ্টি হচ্ছে কলকাতায়, জলমগ্ন হয়ে পড়েছে শহরের বিভিন্ন রাস্তা। জল নামাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে প্রশাসন। এরই মধ্যে ফের রাস্তায় জমা জলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেলেন পাটুলি এবং হরিদেবপুরের দুজন ব্যক্তি। পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, পাটুলির ওই তরুণ যুবক জমা জলে মাছ ধরতে নেমে ছিলেন। হঠাৎই শক খেয়ে পড়ে যান তিনি। বাকিরা উদ্ধার করতে গেলে তারাও ইলেকট্রিক শক খান। শেষ পর্যন্ত সকলের সামনেই মর্মান্তিকভাবে মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির।
অন্যদিকে হরিদেবপুরের ওই ব্যক্তি রাত এগারোটা নাগাদ ফিরছিলেন বাইক চালিয়ে। হঠাৎই বিদ্যুতের ছেঁড়া তার এসে পড়ে তার গায়ে। যার ফলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় তার। কলকাতা সিইএসসির পক্ষে অবশ্য জানানো হয়েছে, বিদ্যুতের তার নয় হরিদেবপুরে আর্থ ওয়্যার ছিঁড়ে গিয়েছিল তার জেরেই ঘটেছে এই দুর্ঘটনা। কিন্তু প্রশ্ন হল, বারবার প্রশাসনের গাফিলতির জন্য কেন এভাবে প্রাণ হারাবেন একের পর এক নাগরিক? বিগত দিনেই কলকাতা পুরসভার পক্ষে ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছিলেন, তাদের হাতে কোন জাদুকাঠি নেই। কলকাতায় একটা গামলার মত, তাই ভারী বৃষ্টি হলেই জল জমে যায়।
কিন্তু জল জমলেই যদি এভাবে দুর্ঘটনা জেরে প্রাণ হারাতে হয় একের পর এক নাগরিককে, তাহলে তা মেনে নেওয়া সত্যিই কঠিন। প্রশ্ন উঠছে কেন গতবারের ঘটনার পরেও শিক্ষা নিচ্ছে না সিইএসসি? কেন বারবার দুর্ঘটনার মুখে পড়তে হচ্ছে সাধারন মানুষকে। এমনকি আমফানের সময়েও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছিল ২২ জনের। এই ঘটনা কেন বারবার ফিরে আসছে তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন?
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পাটুলির মৃত যুবকের নাম সুজয় মণ্ডল। তার বয়স ছিল মাত্র ১৮ বছর। অন্যদিকে হরিদেবপুর বিঘা রোড থেকে উদ্ধার হওয়া মৃতের নাম মানিক বারুই। যারা গিয়েছে ৩৬ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি পেশায় ছিলেন গাড়িচালক। তার দিদির মতে, ইয়াসে বন্যাদুর্গতদের উদ্দেশ্যে ত্রাণ বিলি করতে গিয়েছিলেন মানিক। ফেরার সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় তার। আপাতত দুটি মৃতদেহই ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ।