বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমান সময়ে দেশে (India) রেলপথকে (Indian Railways) আরও উন্নত করতে এবং রেল সংযোগ বাড়ানোর লক্ষ্যে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে। শুধু তাই নয়, ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর “অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি” ও “নেবারহুড ফার্স্ট পলিসি”-র ওপর ভর করে ভারতীয় রেলের (Indian Railways) তরফে প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে সংযোগ স্থাপনকারী একাধিক নতুন রেলওয়ে লাইন প্রকল্প কার্যকর করা হচ্ছে।
সেই রেশ বজায় রেখেই এবার সামনে এসেছে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আগরতলা-আখাউরা আন্তর্জাতিক সংযোগী রেল লাইন প্রকল্পটির প্রসঙ্গ। জানিয়ে রাখি যে, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। যেটির কাজ প্রায় সম্পূর্ণ হওয়ার পথে রয়েছে। এদিকে, এই প্রকল্পের মাধ্যমে সরাসরি ত্রিপুরার রাজধানী শহর আগরতলা থেকে বাংলাদেশের আখাউরা পর্যন্ত সংযোগ স্থাপন সম্ভব হবে।
এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সর্বমোট ১৫.০৬৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই রেলওয়ে লাইনটির ৫.০৫ কিলোমিটার ভারতে রয়েছে এবং ১০.০১৪ কিলোমিটার রয়েছে বাংলাদেশে। সেটি নিশ্চিন্তপুরের ইন্টারন্যাশনাল ইমিগ্রেশন স্টেশনের মাধ্যমে বাংলাদেশের আখাউরাকে সংযুক্ত করবে। এদিকে এর ফলে এটি ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে যাত্রীসহ পণ্যসামগ্রী বিনিময়ের জন্য একটি ডুয়েল গজ স্টেশনও হয়ে উঠবে।
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এই রেল পথটির মাধ্যমে দ্রুতগতিতে পণ্যসামগ্রীর আমদানি ও রপ্তানিতে সাহায্য হওয়ার পাশাপাশি সরাসরি স্থানীয় উৎপাদনকারীরা নিজেদের উৎপাদিত সামগ্রী খুব দ্রুত এবং সহজে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বড়সড় সুযোগ পেয়ে যাবেন। এমতাবস্থায়, এই প্রকল্পের মাধ্যমে ভারতীয় অংশের কাজ শেষ করার জন্য প্রত্যাশিত ব্যয়ের পরিমাণ হল ৮৬২.৫৮ কোটি টাকা।
এদিকে, এই প্রকল্পটির জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে ডোনার মন্ত্রণালযের তরফে। শুধু তাই নয়, ইতিমধ্যেই প্রায় ৭০৮.৭৪ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। পাশাপাশি, ডোনার মন্ত্রণালয় থেকে অবশিষ্ট পুঁজির বরাদ্দের মাধ্যমে বাকি কাজ সম্পন্ন করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানা গিয়েছে। এদিকে, জানিয়ে রাখি যে বাকি অংশের কাজ দ্রুত শেষ করার লক্ষ্যে ভারতীয় রেলের তরফে নিজস্ব বাজেট থেকে ১৫৩.৮৪ কোটি টাকা সক্রিয়ভাবে বরাদ্দ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, এই প্রকল্পটিতে ১ টি মেজর ব্রিজ ও ৩ টি মাইনোর ব্রিজ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এমতাবস্থায়, এই প্রকল্পটি সম্পূর্ণ হওয়ার পরে ঢাকা হয়ে আগরতলা ও কলকাতার মধ্যে যাতায়াতের ক্ষেত্রে প্রায় ৩১ ঘণ্টার দূরত্বকে কমিয়ে মাত্র ১০ ঘণ্টায় নিয়ে আসা যাবে। এদিকে, উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এই নতুন রেল প্রকল্পটি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ককে শক্তিশালী করার পাশাপাশি উত্তর পূর্বাঞ্চলের পর্যটন শিল্পের উন্নতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।