বাংলাহান্ট ডেস্ক: আহমেদাবাদে সেই ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার (Air India Plane Crash) চার মাস কেটে গিয়েছে। কিন্তু সেই নরক থেকে ফিরে আসা বিশ্বাসকুমার রমেশের কাছে সময় যেন সেখানেই থমকে আছে। গোটা পৃথিবীর কাছে তিনি হয়তো ‘দ্য লাকিয়েস্ট সারভাইভার’। কিন্তু রমেশ নিজে আজও বিশ্বাস করতে পারেন না তিনি বেঁচে আছেন। তাঁর চোখের সামনে বার বার ভেসে ওঠে আগুনে পুড়ে ধ্বংস হয়ে যাওয়া বিমান। হারাতে হয়েছে সবচেয়ে প্রিয় মানুষকে—নিজের ভাইকে। সেই শোক যেন আজও বুকে বিষের মত জমে আছে।
আহমেদাবাদে বিমান দুর্ঘটনার (Air India Plane Crash) আতঙ্ক এখনও বর্তমান:
গত ১২ জুন আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনের গ্যাটউইকগামী এয়ার ইন্ডিয়ার (Air India Plane Crash) উড়ানে যাত্রা করেছিলেন রমেশ ও তাঁর ভাই অজয়। ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই ব্রিটিশ নাগরিক প্রায়ই দেশে আসতেন। সেদিনও ছিল আর পাঁচটা যাত্রার মতোই। বিমানের ১১এ সিটে বসেছিলেন রমেশ। ঠিক তাঁর পিছনের সিটে ছিলেন অজয়। তারপর কয়েক মিনিট—আর সবকিছু বদলে যায়। ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও আগুনের লেলিহান শিখা মুহূর্তে গ্রাস করে নেয় বিমানের দেহ। জীবন্ত দগ্ধ হন বহু যাত্রী। পৃথিবী আতঙ্কে তাকিয়ে দেখে এক ভয়াল অধ্যায়।
আরও পড়ুন:IT সেক্টরের চাকরি ছেড়ে শুরু ডেয়ারি কোম্পানি! আজ মিলছে ১০ কোটির টার্নওভার, চমকে দেবে অসীমের কাহিনি
সেই মর্মান্তিক ঘটনার (Air India Plane Crash) পর কেটে গিয়েছে চারটি দীর্ঘ মাস। ভাইয়ের শেষকৃত্য নিজের হাতেই করেছেন রমেশ। কিন্তু বুকের ভেতর জমে থাকা শোক যেন চাপা পড়ে না কিছুতেই। রবিবার এক সাক্ষাৎকারে রমেশ বলেন, ‘‘আমি বেঁচে আছি, এটা এখনও বিশ্বাস হয় না। কিন্তু নিজের ভাইকে হারালাম। ও আমার মেরুদণ্ড ছিল। প্রতিটা মুহূর্তের সঙ্গী। ওকে ছাড়া নিজেকে খুব একা লাগে। এখন ঘরে বসে থাকি। স্ত্রী-ছেলের সঙ্গেও কথা বলি না। সব সময় একা থাকতে ভাল লাগে।’’
দীর্ঘদিন বাড়ির ভিতরে বন্দি হয়ে আছেন তিনি। কোনও থেরাপি বা চিকিৎসাও নেননি। মানসিক আঘাতে ভেঙে পড়েছেন পুরো পরিবার। আর্থিক সমস্যার সঙ্গেও লড়াই করছেন তারা। রমেশের কথায়, ‘‘এই দুর্ঘটনা (Air India Plane Crash) মেনে নিতে পারছি না। শরীর-মন দুটোই ভেঙে গেছে। গত চার মাস ধরে মা প্রতিদিন দরজার সামনে বসে থাকেন। কারও সঙ্গে কথা বলেন না। শুধু তাকিয়ে থাকেন। প্রতিটা দিন আমাদের জন্য যন্ত্রণা।’’

আরও পড়ুন:চিংড়ির ককটেল এখন ঘরেই বানানো সম্ভব, রেস্তরাঁর মতো স্বাদ পেতে মেনে চলুন এই রেসিপি
যে মানুষটি একদিন ভাইকে পাশে নিয়ে আত্মবিশ্বাসে ভরপুর ছিলেন, আজ তিনি নিজের ঘরের নিঃসঙ্গতার বন্দি। মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখে ফিরে আসার অভিশাপ যেন তাঁকে আরও গভীর অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে। রমেশের গল্প আমাদের আবার স্মরণ করিয়ে দেয়—কখনও কখনও জীবনে সবচেয়ে বড় যুদ্ধ বাহ্যিক নয়, অন্তরের ভিতরেই লড়তে হয় (Air India Plane Crash)।













