বাংলাহান্ট ডেস্ক : খানিক স্বস্তি। আছড়ে পড়ার আগে শক্তি হারাচ্ছে অশনি। অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় থেকে সেটি পরিণত হচ্ছে সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ে। দক্ষিন আন্দামান সাগর এলাকায় তৈরি ঘূর্ণাবর্ত অশনি ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিয়েছে রবিবার বিকেল পাঁচটা নাগাদ অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয় এটি। বর্তমানে দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করলেও ক্রমাগত এগিয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়টি। কিন্তু আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর আছড়ে পড়ার আগেই ক্রমশ শক্তিক্ষয়ের ফলে কমছে অশনির গতিবেগ। ভূভাগে সরাসরি ল্যাণ্ডফল করবে না অশনি এমনটাই জানাচ্ছে আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। বদলে উপকূলের খুব কাছ দিয়েই সমান্তরাল ভাবে বয়ে যাবে সেটি। অশনির প্রভাব সরাসরি বাংলায় পড়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। এর প্রভাবেই ভারী থেকে মাঝারি বৃষ্টি চলবে রাজ্য জুড়ে। এক লাফে অনেকটাই কমেছে রাজ্যের তাপমাত্রা। আজও মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে রাজ্যের একাধিক জেলায়। আগামী ৩ দিন আবহাওয়া সেরকম পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই গোটা রাজ্যের কোথাওই। তবে ১৩ মের পর বৃষ্টির পরিবেশ কাটলে আবারও লাফিয়ে বাড়বে তাপমাত্রা।
আবহাওয়ার খবর
সর্বোচ্চ তাপমাত্রা : ৩০° সেলসিয়াস
সর্বনিম্ন তাপমাত্রা : ২৭°সেলসিয়াস
আর্দ্রতা : ৯৫%
বাতাস : ২২.৬ কিমি/ঘন্টা
মেঘে ঢাকা : ৯৭%
আজকের আবহাওয়া
সোমবার বিকেলে দেওয়া আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের বুলেটিন অনুযায়ী, আগামী ১৩ মে অবধি বজ্র-বিদ্যুৎ সহ ঝড় বৃষ্টির সম্ভাবনা উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গের জেলাগুলিতে। বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে বইবে ৩০-৪০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা বেগে ঝোড়ো হাওয়া। সোমবারের পর মঙ্গলবারও কলকাতা ও সংলগ্ন জেলাগুলিতে বজ্র-বিদ্যুৎ সহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। প্রথমে শক্তি বাড়ালেও আপাতত শক্তিক্ষয় হচ্ছে অশনির। ঘন্টায় ৭ কিলোমিটার বেগে উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে এটি। আপতত পুরী থেকে ৫৯০ কিমি এবং বিশাখাপত্তনম থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে এটি। আগামী ২৪ ঘন্টায় আরও শক্তি হারিয়ে এই ঘূর্ণিঝড় উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে ১২ মে নাগাদ অন্ধ্র ওড়িশার উপকূলের কাছে অবস্থান করবে। এরপর তার গতিপথ কোন দিকে হতে পারে, সেদিকে নজর রাখছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা। বাংলায় কতখানি প্রভাব পড়বে এই ঝড়ের নজর রাখা হচ্ছে সেদিকেও। এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৃষ্টি চলবে গাঙ্গেয় দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায়।
উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়া
বৃষ্টি অব্যহত উত্তরবঙ্গে। এখনও আগামী ৪৮ ঘন্টা অর্থাৎ ১২ মে বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যে উত্তরবঙ্গের সবকটি জেলাইতেই বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। আপাতত উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিকে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হলেও, ১২ মে বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার জেলায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। আগামী দিন তিনেকে হিমালয় সংলগ্ন জেলাগুলির দিনের তাপমাত্রার সেরকম কোনও পরিবর্তন হবে না। তারপর ধীরে ধীরে পরিবর্তন হবে উত্তরবঙ্গের আবহাওয়ায়।
আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী ১২ মে বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যে দক্ষিণবঙ্গের সবকটি জেলারই কোথাও না কোথাও হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বুধবার সকালের মধ্যে কলকাতা, হাওড়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর ও নদিয়ায় বৃষ্টি সঙ্গে সঙ্গে ঘন্টায় ৩০-৪০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এরপর বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যে সবকটি জেলাতেই ঝোড়ো হাওয়া এবং পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, দুই চব্বিশ পরগনা এবং নদিয়ায় জেলায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃহস্পতিবার সারা দিন ধরেই চলবে এই পরিস্থিতি। বৃষ্টি হবে শুক্রবারও। সঙ্গে জারি থাকবে ঝোড়ো হাওয়া। উত্তরবঙ্গের মতো দক্ষিণবঙ্গেও আগামী ৩ দিন দিনের তাপমাত্রার সেরকম বড় কোনও পরিবর্তন হবে না।
আগামী কালের আবহাওয়া
আগামীকাল মেঘাচ্ছন্ন থাকবে কলকাতা সহ সংলগ্ন এলাকার আকাশ। ঘূর্ণাবর্তের জেরে ভারী থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সবকটি জেলায়। বৃষ্টির সম্ভাবনা উত্তরবঙ্গেও। বাড়বে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ। আগামীকাল শহর কলকাতার তাপমাত্রায় থাকবে ৩১° সেলসিয়াস এবং ২৭° সেলসিয়াস।