বাংলাহান্ট ডেস্ক: রায়পুরের দুই ভাই আকাশ আগরওয়াল ও আশীষ আগরওয়াল মশলার জগতে একটি সফল (Success Story) ও স্বতন্ত্র পরিচয় গড়েছেন। তাদের গড়া সফল মসলার ব্র্যান্ডটির নাম ‘জফ ফুডস’। ২০১৮ সালে যাত্রা শুরু করা এই ব্র্যান্ডটি বাজারের বড় বড় খেলোয়াড়দের কাছেও চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তাদের আয় দাঁড়িয়েছে ৯২.৬৬ কোটি টাকায়।
দুই ভাই আকাশ ও আশীষের সফল কাহিনি (Success Story):
স্টেল ব্যবসায়ী পরিবার থেকে আসা আকাশ ও আশীষ দিল্লির ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ প্ল্যানিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (আইআইপিএম) থেকে এমবিএ সম্পন্ন করেন। পড়াশোনা শেষে তারা পারিবারিক স্টেল প্ল্যান্টের দায়িত্ব নেন। সেখানেই তারা গুণগত মান, অটোমেশন ও বৃহৎ পরিসরে উৎপাদনের গুরুত্ব বুঝতে শেখেন। প্রায় ২০১৫ সালের দিকে তারা পারিবারিক ব্যবসা থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন এবং ভারতীয় মশলা ক্রয় ও উৎপাদন শিল্পে প্রবেশের পরিকল্পনা করেন ।
এই খাতে কাজ করতে গিয়ে তারা বেশ কিছু ঘাটতি দেখতে পান। তারা দেখেন অনেক প্রতিষ্ঠিত ও স্থানীয় মশলা ব্র্যান্ড ভেজাল মসলা বিক্রি করছে। এছাড়া প্রচলিত প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতির কারণে মশলার গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তারা উপলব্ধি করেন ভারতীয় গ্রাহকরা এমন পণ্য চান যেখানে গুণগত মান, নির্ভরযোগ্যতা ও স্বচ্ছতা একসাথে থাকবে। এই চিন্তা থেকেই ২০১৮ সালে রায়পুরে একটি সম্পূর্ণ অটোমেটেড ও স্বচ্ছতাভিত্তিক প্ল্যান্ট গড়ে তোলেন তারা (Success Story)।
এখানে তারা ‘কুল গ্রাইন্ডিং টেকনোলজি’ ও ‘নো-হিউম্যান-টাচ’ প্রসেসিংয়ের মতো আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করেন, যা মসলার প্রাকৃতিক সুগন্ধ, রং ও পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ণ রাখে। প্রাথমিকভাবে বুটস্ট্র্যাপিং করার পর, তারা জেএম ফাইন্যান্সিয়ালের নেতৃত্বে সিরিজ এ ফান্ডিং-এ ৪০ কোটি টাকা সংগ্রহ করেন, যা সরবরাহ শৃঙ্খল ও পণ্যের পরিসর বাড়াতে ব্যবহৃত হয়। বাজারে তাদের প্রতিষ্ঠিত ব্র্যান্ডগুলোর সাথে পেরে ওঠাই ছিল সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এই বাধা কাটিয়ে উঠতে তারা ইন্সুলেটেড জিপ-লক পাউচ চালু করেন, যা তাজা ভাব বজায় রাখে ও নষ্ট হওয়া রোধ করে। এছাড়া তারা গ্রাহকদের জন্য ফ্যাক্টরি পরিদর্শনের সুযোগ খুলে দেন ও কঠোর গুণগত মানের সার্টিফিকেশন প্রদর্শন করেন, যা স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে (Success Story)।

আরও পড়ুন: কলকাতার ‘ক্লাসিক মটন রেজ়ালা’ এবার ঘরোয়া! প্রেশার কুকারে সহজে বানান এটি, রেসিপি রইল
প্রথম দিকে রায়পুরের মতো দ্বিতীয় স্তরের শহরে দক্ষ কর্মী আকর্ষণ ও ধরে রাখার ক্ষেত্রেও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয় তাদের। তবে খুচরো বিক্রেতা ও ডিস্ট্রিবিউটরদের জন্য ভালো মার্জিনের প্রস্তাব দিয়ে এবং আঞ্চলিক রুচি অনুযায়ী পণ্যের মিশ্রণ তৈরি করে তারা এই সমস্যা কাটিয়ে উঠেন। ২০২০ সালে তারা ডিরেক্ট-টু-কনজিউমার (D2C) ও কুইক কমার্স প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করেন এবং ব্র্যান্ড সচেতনতা বাড়াতে ট্রায়াল প্যাক চালু করেন। ২০২৫ সালের মধ্যে রেডি-টু-কুক গ্রেভি ও ওয়ান-মিনিট মেরিনেডের মতো সুবিধাভোগী পণ্য যোগ করে তাদের পণ্যের পরিসর বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে (Success Story)।
মডার্ন ট্রেড, জেনারেল ট্রেড, ই-কমার্স ও কুইক কমার্স মিলিয়ে একটি শক্তিশালী অমনিচ্যানেল উপস্থিতির কারণে তাদের ব্র্যান্ড দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে তাদের আয় ছিল ২৫.৭৯ কোটি টাকা, যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বেড়ে দাঁড়ায় ৯২.৬৬ কোটি টাকায় এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরে (অডিটবিহীন) ১০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়ার কথা। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের মধ্যে ১৭০ থেকে ১৮০ কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্য তাদের। ভবিষ্যত কৌশলের মধ্যে রয়েছে ভৌগোলিক সম্প্রসারণ, খুচরো উপস্থিতি বাড়ানো এবং এমন সব পণ্যের উপর ফোকাস করা যা গ্লোবাল ফুড স্ট্যান্ডার্ড পূরণের পাশাপাশি তাজাত্ব বজায় রাখতে পারে (Success Story)।












