বাংলাহান্ট ডেস্ক: হরিয়াণার সিরসা জেলার রূপাবাস গ্রামের বাসিন্দা অক্ষয় কুমার জেওলিয়া আজ দেশের তরুণ প্রজন্মের কাছে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত (Success Story) হয়ে উঠেছেন। গণিত বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকার পরও তিনি প্রচলিত চাকরির পথে হাঁটেননি। ২০১৭ সালে সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি বেছে নেন পরিবারের পৈতৃক পেশা—পশুপালনকে। তবে এই সিদ্ধান্ত শুধু উত্তরাধিকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য নয়, বরং আধুনিক চিন্তা ও নতুন ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে এটিকে বহুগুণে সম্প্রসারিত করার জন্য ছিল।
পশুপালনেই সফলতার গল্প লিখেছে অক্ষয় (Success Story)
অক্ষয়ের পরিবারে আগে মাত্র ছয়টি পশু ছিল। তিনি সেই সংখ্যায় আরও দুইটি মহিষ যোগ করে আটটি পশুর সঙ্গে দুগ্ধ খামার শুরু করেন। শুরুতে প্রতিদিন ৪০ লিটার দুধ বিক্রি করা যেত। ছোটবেলা থেকেই পশুপালনে আগ্রহী অক্ষয়ের হাতে ছিল পৈতৃক জ্ঞান ও ভালো জাতের পশু পালনের অভিজ্ঞতা। এটাই তাঁর প্রকৃত মূলধন হয়ে ওঠে। চাকরির নিশ্চয়তা ছেড়ে তিনি পা রাখেন এক অনিশ্চিত অথচ সম্ভাবনাময় পথে (Success Story)।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের হুমকি পাচ্ছে না পাত্তা! চন্দ্রভাগায় বাঁধের কাজে উদ্যোগী ভারত
খুব দ্রুতই তাঁর শ্রমের ফল মিলতে শুরু করে। ভালো যত্ন ও বৈজ্ঞানিক উপায়ে পশু পালন করে অক্ষয় এক বছরের মধ্যে পশুর সংখ্যা ৪০-এ পৌঁছে দেন। শুধু পশু বাড়ানোই নয়, তিনি তাদের জন্য আধুনিক শেড ও খাদ্যের ভালো ব্যবস্থাও করেন। এ সময় তিনি উপলব্ধি করেন, মধ্যস্বত্বভোগীরা কম দামে দুধ কিনে শহরে বেশি দামে বিক্রি করছে। তাই তিনি নিজেই শহরে গিয়ে সরাসরি ক্রেতাদের কাছে দুধ বিক্রি শুরু করেন। মানসম্পন্ন দুধের কারণে সিরসা শহরে দ্রুতই তিনি নিজস্ব গ্রাহকগোষ্ঠী তৈরি করেন এবং ন্যায্য দামে বিক্রির সুযোগ পান (Success Story)।
আজ অক্ষয়ের খামার সেই শুরুর অবস্থান থেকে অনেক দূর এগিয়েছে। বর্তমানে তাঁর মোট ৩৭০টি পশু আছে, যার মধ্যে নিয়মিত দুধ দেয় প্রায় ১৮০টি মহিষ। প্রতিদিন তিনি গড়ে ১,৩০০ লিটার দুধ বিক্রি করেন। শুধু পাইকারি নয়, খুচরো বিক্রিতেও তাঁর বড় বাজার তৈরি হয়েছে। মাসিক গড়ে তাঁর আয় দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৫ লাখ টাকা। দুধের পাশাপাশি ঘি এবং গোবর সার বিক্রি করেও তিনি উল্লেখযোগ্য লাভ করছেন। প্রতিবছর প্রায় ৩৫০ ট্রলি গোবরের সার বিক্রি হয়, যা তাঁর আয়ের আরেকটি বড় উৎস (Success Story)।
আরও পড়ুন: SIR ইস্যুতে পাল্টা প্রচার, শমীক-শুভেন্দুদের সংগঠন মজবুত করার নির্দেশ দিয়ে কি বললেন অমিত শাহ?
অক্ষয়ের সাফল্য শুধু আর্থিক দিকেই নয়, সামাজিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। তিনি তাঁর খামারে ১৪ জনকে স্থায়ী কর্মসংস্থানের সুযোগ দিয়েছেন। তাঁর গল্প প্রমাণ করেছে, উচ্চ শিক্ষা শুধু চাকরির পথেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং ঐতিহ্যবাহী পেশাগুলিকে নতুন কৌশল ও উদ্ভাবনী দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে বহুদূর এগিয়ে নেওয়া সম্ভব (Success Story)।
আজ অক্ষয় কুমার জেওলিয়া শুধু একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা নন, বরং এক অনুপ্রেরণা। তিনি দেখিয়েছেন, তিন বছরের নিরলস পরিশ্রম যদি নিজের ব্যবসাকে দেওয়া যায়, তবে সাফল্য একদিন নিশ্চিত। তাঁর পথ আজ অনেক শিক্ষিত যুবককে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছে (Success Story)।