সুপ্রিমো ছাড়া পদ খোয়ালেন সব তৃণমূল নেতা, জরুরি বৈঠকে কড়া সিদ্ধান্ত মমতার

বাংলাহান্ট ডেস্ক : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া তৃণমূলে অবলুপ্ত সব নেতার পদ। কালিঘাটের জরুরি বৈঠকের পর এমনটাই ঘোষণা করলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বিগত বেশ কিছুদিন ধরে তোলপাড় তৃণমূলের অন্দর মহল। একের পর এক বিতর্কের জেরে টালমাটাল দল। মমতা-অভিষেক মতানৈক্যের জেরে তুঙ্গে তৃণমূল ভাঙনের জল্পনাও। এহেন অবস্থায় সব বিতর্কে রাশ টানতে কড়া সিদ্ধান্তই নিলেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৫ শীর্ষ নেতৃত্বকে নিয়ে কালিঘাটের বাড়িতে আজ বিকেলে জরুরি বৈঠকের ডাক দেন মমতা। মনে করা হচ্ছিল মাথার উপর দিয়ে বয়ে চলা জলে হাল ধরতে কড়া হবে দল। হলও তাই। অবলুপ্ত হল দলের প্রতিটি নেতার পদ।

জানা যাচ্ছে, এদিন বৈঠকে ২০ জন সদস্যের একটি জাতীয় কর্ম সমিতি গঠন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সমিতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া থাকছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অমিত মিত্র, সুব্রত বক্সী, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, সুখেন্দু শেখর রায়। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, অসীমা পাত্র, মলয় ঘটক, রাজীব ত্রিপাঠি, অনুব্রত মন্ডল, গৌতম দেব এবং বুলুচিক বারিক। বাকি ৪ সদস্যের নাম পরে ঘোষণা করা হবে বলেই জানানো হয়েছে।

বৈঠকের পর পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া একমুহূর্তে দলে কোনো পদ থাকবে না। এমনকি কর্মসমিতিতে কে কোন পদাধিকারী হবেন তাও বিবেচনা করা হবে পরে।

বেশ কিছুদিন ধরেই ‘এক ব্যক্তি এক পদ নীতি’ নিয়্র সরগরম ঘাসফুল শিবির। যুব নেতারা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই নীতির সমর্থন করলেও উল্টো সুর গান সব প্রবীণ নেতাই। এমনকি খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবধি জানিয়ে দেন এই নীতিতে সমর্থন নেই তাঁর। দলের সব নেতাকেই এই ইস্যুতে মুখ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। একই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় অভিষেকের ‘রিটায়ারমেন্ট প্ল্যান’কে ঘিরেও। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একটি সাক্ষাৎকারে জানান যে ৬০ বছর বয়সের পর নেতাদের দলীয় পদ থেকে অবসর নেওয়া উচিত। এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতেও চরমে ওঠে বিতর্ক। দলের একাংশ অভিযোগ আনেন মমতাকে টপকে মাথায় উঠতে চাইছেন অভিষেক। এই দ্বৈত নেতৃত্বের ফলে দ্বিধাবিভক্ত হতে শুরু করে দল। একদল মমতা এবং অপর দল অভিষেকের সমর্থনে গাইতে শুরু করে।

এহেন পরিস্থিতিতে কি তবে অভিষেকের নীতিকেই প্রাধান্য দিতে সমস্ত নেতৃত্বের পদ কাড়লেন মমতা? নাকি এর পিছনে রয়েছে আরও বিশেষ কোনো রাজনৈতিক কারণ? আপাতত এই প্রশ্নই উঠছে রাজ্য রাজনীতির প্রতিটি মহলে।


Katha Bhattacharyya

সম্পর্কিত খবর