বাংলাহান্ট ডেস্ক : হাতে মাত্র আর কয়েকটা দিন। তারপরই শুরু হয়ে যাবে বাঙালির দুর্গাপুজো। দুর্গাপুজো বললেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে রংবেরঙের আলোর কারসাজি, প্যান্ডেল হপিং থেকে শুরু করে নতুন জামা-কাপড়। কিন্তু অনেকেই রয়েছেন যারা পুজোয় জন অরণ্যের ভিড় থেকে দূরে সরে গিয়ে ছুটি কাটাতে চলে যান বাইরে।
অন্যান্য সময়ের মতো পুজোর কটা দিনও অনেক বাঙালির প্রিয় ডেসটিনিশন হয়ে ওঠে দিঘা-পুরী-দার্জিলিং বা দিপুদা। কিন্তু উৎসবের মরশুমে ট্রেনের টিকিট পাওয়া খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তবে এই তিনটি জায়গায় ট্রেন ছাড়াও বিকল্প রুট অনুসরণ করে পৌঁছানো যায়। আজকে আমরা সেই বিষয়ে আলোচনা করব।
আরোও পড়ুন : চিরঘুমে ইসরোর বিজ্ঞানী! চন্দ্রযান ৩’র কণ্ঠদাতার প্রয়াণে শোকস্তব্ধ বিজ্ঞানী মহল
•দিঘা: দিঘা আমাদের খুব কাছের এ আরোও কটি সমুদ্র সৈকত। তবে অনেকেই ভাববেন পুজোর সময় দিঘাতে যাওয়ার এমন কী আছে? কিন্তু স্বল্প খরচে কয়েকটা দিন সৈকত ভ্রমণের বেস্ট ডেসটিনেশন হতেই পারে দিঘা। কলকাতার ধর্মতলা থেকে কিছু সময় অন্তরই পাওয়া যায় ‘দিঘা-তাজপুর-মন্দারমণি’ এর বাস। অসংরক্ষিত টিকিটে ট্রেনে দাঁড়িয়ে ভ্রমণ করার থেকে বাসে করে দিঘা যাওয়া অনেকটাই আরামদায়ক।
কলকাতা থেকে স্লিপার ক্লাসে দিঘা যাওয়ার ভাড়া ১২০ টাকা। অন্যদিকে, ধর্মতলা থেকে বাসে করে দিঘা যেতে ভাড়া লাগে ১৫০ টাকা মতো। ট্রেনের মতোই বাসে কলকাতা থেকে দিঘা যেতে সময় লাগে মোটামুটি চার-পাঁচ ঘন্টা। কিন্তু ট্রেনের রিজার্ভেশন বা বাসের টিকিট না পেলে কী করবেন? সেক্ষেত্রে আপনার ভরসা হতে পারে লোকাল ট্রেন। প্রথমে আপনাকে হাওড়া স্টেশন থেকে মেদিনীপুর, খড়্গপুর বা পাঁশকুড়াগামী কোনও লোকাল ট্রেনে উঠে নামতে হবে পাঁশকুড়া স্টেশনে। এরপর সেখান থেকে আপনাকে ধরতে হবে দিঘাগামী ট্রেন।
আরোও পড়ুন : লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস ফাইল ডাউনলোড কাণ্ড! ED অফিসারের বিরুদ্ধে মারাত্মক পদক্ষেপ সংস্থার
•পুরী: পুরী বহু বাঙালির কাছে আদর্শ ভ্রমণের জায়গা। উড়িষ্যার এই সমুদ্র সৈকত চিরকালই বাঙালিকে আকর্ষণ করে এসেছে। পুরী যাওয়া মানে একদিকে যেমন সমুদ্র ভ্রমণ রয়েছে, তার সাথে রয়েছে জগন্নাথ দেবের দর্শন। বলা যেতেই পারে পুরী যাওয়া মানে ‘রথ দেখা, কলা বেচা’ দুটোই হওয়া।
এখন হাওড়া থেকে নিয়মিত বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চলছে পুরীর উদ্দেশ্যে। কিন্তু সেক্ষেত্রে টিকিট পাওয়া খুবই দুষ্কর। আপনারা চাইলে কলকাতার ধর্মতলা থেকে বাসে করে কটক, ভুবনেশ্বর বা পুরী চলে যেতে পারেন। ১০০০-১২০০ টাকা ভাড়া হয় আরামদায়ক এসি স্লিপার বাসের। কলকাতা থেকে বাসে মোটামুটি ১০-১২ ঘন্টা সময় লাগতে পারে পুরী যাওয়ার জন্য।
এছাড়াও আরও একটি বিকল্প রুট রয়েছে পুরী যাওয়ার। সকাল বেলা হাওড়া থেকে উঠে পড়ুন খড়্গপুরগামী যেকোনও ট্রেনে। খড়্গপুর-পুরী প্যাসেঞ্জার ট্রেন প্রতিদিন ছাড়ে দুপুর আড়াইটা নাগাদ। এক্ষেত্রে একটু সময় বেশি লাগলেও বিকল্প পথ অবলম্বন করে পৌঁছে যেতে পারবেন পুরী। এছাড়াও ট্রেনে করে হাওড়া থেকে ভুবনেশ্বর গিয়ে বাস বা অন্যান্য গাড়ির সাহায্যে আপনারা পুরী পৌঁছাতে পারেন।
আরোও পড়ুন : পুত্র সন্তানের জন্ম দিলেন বুমরা পত্নী সঞ্জনা! তারকা পেসারের সংসারে এলো খুশির জোয়ার
•দার্জিলিং: বাঙালির প্রিয় গন্তব্যের কথা হচ্ছে, আর সেখানে দার্জিলিং এর নাম আসবে না তা কি হয়? পুজোর সময়টাতে পাহাড়ের রানীর রূপ সত্যিই দেখার মতো। দার্জিলিং এর অপূর্ব সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য বহু মানুষ পুজোর সময় পাড়ি দেন এই শৈল শহরে। ঠিকঠাক ট্রেন না পেলে কিন্তু দার্জিলিং যাওয়ার জন্য বেশ খানিকটা কসরত করতে হয় পর্যটকদের।
আপনারা চাইলে বিকল্প কিছু পথ অনুসরণ করতে পারেন যেগুলি অপেক্ষাকৃত সহজ। ধর্মতলা থেকে বেশকিছু রকেট বাস আছে যেগুলি উত্তরবঙ্গ যায়। আপনারা চাইলে খুব আরামে এই বাসে চড়ে পৌঁছে যেতে পারেন শিলিগুড়িতে। এসি এই বাসগুলোর ভাড়া শুরু ১২০০ টাকা থেকে। শিলিগুড়ি থেকে বাস, জিপ, গাড়ি করে সহজেই পৌঁছানো যায় দার্জিলিং।
অন্যদিকে, হাওড়া থেকে ভোরবেলা ধরতে পারেন মালদহগামী প্যাসেঞ্জার ট্রেন। মালদা থেকে বেশ কিছু ট্রেন নিউ জলপাইগুড়ির বা শিলিগুড়ির উদ্দেশ্যে যায়। এছাড়াও মালদা থেকে বাসে বা গাড়িতে করে আপনারা পৌঁছাতে পারেন দার্জিলিং। সেক্ষেত্রে ভাড়া পড়তে পারে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে।