বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের (Visva-Bharati University) বিতর্কে মুখ খুললেন স্বয়ং অমর্ত্য সেন (Amartya Sen)। তিনি বলেন, ৮০ বছর আগে বাড়ি তৈরি হয়েছিল, এতদিন কেউ অনিয়মের কথা বলেনি। এবারও আমাকে চিঠি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কিছু জানায়নি। কর্তৃপক্ষ শুধু সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখ খুলেছে। অমর্ত্য সেন জানিয়েছেন, দরকার পড়লে এই বিষয়ে তিনি আইনি ব্যবস্থা নিতে পিছুপা হবেন না।
অমর্ত্য সেন বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়ে সহানুভূতি জানিয়েছেন। আচমকাই বিশ্বভারতী থেকে এরকম বলা শুরু হওয়ার পিছনে রাজনৈতিক কারণ থাকতে পারে।” তিনি বলেন, হয়ত আমি সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে কথা বলতাম বলেই আমার সাথে এমন হচ্ছে।
বলে রাখি, বিশ্বভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় চিঠি লিখে অভিযোগ জানিয়েছে যে, তাঁদের ডজন খানেক জমি অবৈধ ভাবে ব্যক্তিগত নামে লিখিয়ে নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দ্বারা প্রস্তুত অননুমোদিত দখলদারদের তালিকায় নোবেল পুরস্কার বিজয়ী তথা প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক অমর্ত্য সেনের (Amartya Sen) নামও ছিল।
মহিলা হোস্টেল, অ্যাকাডেমিক বিভাগ, কার্যালয় এমনকি উপাচার্যের আধিকারিক বাংলোও সেই জমি গুলোর মধ্যে পড়েছে, যেগুলোকে অবৈধ ভাবে অন্যের নামে দায়ের করা আছে। বিশ্ববিদ্যালয় অভিযোগ করে বলেছে যে, সরকারের রেকর্ড অফ সাইটে মালিকানার ভুল রেকর্ডিংয়ের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের জমিকে অবৈধ ভাবে ব্যক্তিগত নামে করে দেওয়া হয়েছে আর সেখানে রেস্তোরাঁ, স্কুল এবং অন্যান্য ব্যবসায়িক কাজ শুরু হয়েছে।
প্রোফেসর অমর্ত্য সেনের মামলায় বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে যে, বিশ্বভারতী দ্বারা ওনার প্রয়াত পিতাকে আইনি ভাবে লিজ দেওয়া ১২৫ ডেসিম্যাল জমি ছাড়াও ১৩ ডেসিম্যাল জমিতে ওনার দখল আছে। এই বিষয়ে অমর্ত্য সেন জানিয়েছেন যে, বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী ক্যাম্পাসে ইজারা দেওয়া জমির অননুমোদিত দখল অপসারণের ব্যবস্থাতে ব্যস্ত এবং আমাকেও দখলদার তালিকায় স্থান দেওয়া হয়েছে।
উনি বলেন, বিশ্বভারতীর জমির যেই জায়গায় আমাদের বাড়ি আছে, সেটি একটি দীর্ঘকালীন ইজারায় দেওয়া হয়েছে, সেটা এখনো সমাপ্ত হওয়ার সময় আসেনি। কিন্তু উপাচার্য সবসময়ই কাউকে না কাউকে জমি থেকে হটানোর স্বপ্ন দেখে আসছে।
বিশ্বভারতী এস্টেট অফিসের মতে এই ভুল রেকর্ড ১৯৮০ এবং ১৯৯০ এর দশকে করা হয়েছিল। এই প্লটগুলির বেশিরভাগটি শান্তি নিকেতনের পূর্বপল্লি অঞ্চলে অবস্থিত, যা আশ্রমবাসী এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আবাসিক কেন্দ্র হিসাবে পরিচিত।
বিশ্বভারতীর কার্যালয়ের নথিপত্র শিক্ষা মন্ত্রালয়ের কাছে পাঠানো হয়েছে। এর সিএজি রিপোর্ট জানা গিয়েছিল যে, ১৯৯০ এর শেষের দিকে বিশ্বভারতীর জমিতে কবজা হয়েছিল। অমর্ত্য সেন ২০০৬ সালে ৯৯ বছরের ইজারা নেওয়া জমিকে নিজের নামে হস্তান্তর করার জন্য উপাচার্যকে চিঠি লিখেছিলেন। এরপর কার্যকারী পরিষদ দ্বারা নির্ণয় নেওয়ার পর এরকম করা হয়েছিল, কিন্তু অতিরিক্ত জমি আর বিশ্ববিদ্যালয়কে ফেরত দেওয়া হয়েছিল না।