বাংলাহান্ট ডেস্ক : এ যেন জলে কুমির, ডাঙায় বাঘ। আমেরিকার (America) অবৈধবাসীদের ছাড়তে গিয়ে নিজেরাই দীর্ঘদিন ধরে দেশ ছাড়া আমেরিকার অভিবাসন দফতরের প্রায় ১১ জন আধিকারিক। দক্ষিণ আফ্রিকার দেশ জিবুতিতে ‘দাগী’ অবৈধবাসীদের পাহারায় কন্টেনারে দিন কাটছে তাঁদের। সঙ্গী ভয়াবহ গরম আর ম্যালেরিয়ার মশা। উপরন্তু ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনীর ছোঁড়া ক্ষেপণাস্ত্রের ভয় তো রয়েছেই। সব মিলিয়ে দু সপ্তাহ ধরে কার্যত নরক বাস করছেন ওই আধিকারিকরা। কিন্তু তাঁদের এই দশা হল কী করে?
অবৈধবাসীদের ছাড়তে গিয়ে জিবুতিতে আটকে মার্কিন (America) আধিকারিকরা
ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় বারের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে বসার পরেই আমেরিকা (America) থেকে অবৈধবাসীদের দেশ ছাড়া করার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। এমতাবস্থায় কিউবার, ভিয়েতনাম, মায়ানমার এবং লাওসের কয়েকজন অবৈধবাসীদের নিয়ে একটি বিমান রওনা দিয়েছিল আমেরিকা (America) থেকে। তাদের সুদানে নামিয়ে দিয়ে আসার কথা ছিল। কিন্তু আমেরিকার ডিস্ট্রিক্ট জাজ তাতে বাদ সাধেন। তিনি আগেই নির্দেশ দিয়েছিলেন, অবৈধবাসীদের নিজের নিজের দেশেই ছেড়ে আসতে হবে। এদিকে এই নির্দেশ শোনার পরেও আমেরিকায় (America) ফিরে না এসে অবৈধবাসীদের জিবুতিতে নামানোর পরিকল্পনা করে অভিবাসন দফতর। তারপরেই শুরু সমস্যা।
কন্টেনারে কীভাবে দিন কাটছে: জানা গিয়েছে, জিবুতিতে আমেরিকার (America) নৌবাহিনীর শিবিরে জাহাজের কন্টেনারের ভেতরে তৈরি করা হয়েছে অস্থায়ী ডিটেনশন কেন্দ্র। বিগত দু সপ্তাহ ধরে এটাই আস্তানা অবৈধবাসী এবং অভিবাসন ও শুল্ক দফতরের আধিকারিকদের। বৃহস্পতিবার তাদের পরিস্থিতির রিপোর্ট বিচারককে দিয়েছেন অভিবাসন দফতরের আধিকারিক। সেই রিপোর্টে জানানো হয়েছে, যেখানে কন্টেনারগুলি রাখা হয়েছে সেখানে দিনে তাপমাত্রা ওঠে প্রায় ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত। রাতে ম্যালেরিয়ার মশার উপদ্রব। সেই সঙ্গে কাছেই স্থানীয়রা আবর্জনা পোড়ানোর কারণে ধোঁয়ায় নিঃশ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আধিকারিকরা।
আরো পড়ুন : ভারতীয় কূটনীতিতে বড় জয়, নিন্দুকদের মুখে ঝামা ঘষে জি-৭ এ আমন্ত্রিত নয়াদিল্লি, ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর
আদালতের দ্বারস্থ ট্রাম্প প্রশাসন: অন্যদিকে ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনীর ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ব্যাপারেও আধিকারিকদের সতর্ক করেন সেনা আধিকারিকরা। কিন্তু তাঁদের কাছে আত্মরক্ষার জন্য কোনো জ্যাকেটও নেই। এমতাবস্থায় জিবুতিতে আধিকারিকদের দুরবস্থার কথা বর্ণনা করে আমেরিকার (America) বিচারকের আগের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দাবি করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। অবৈধবাসীদের আইনজীবীরা তাদের স্বাস্থ্য নিয়েও চিন্তার কথা জানিয়েছেন। প্রশাসনের তরফে পাল্টা সওয়াল করা হয়েছে, অবৈধবাসীরা যদি দাগী হন, তাদের যদি নিজেদের দেশ ফেরাতে না চান তাহলে তাদের তৃতীয় কোনো দেশে রেখে আসতে বাধা নেই।
আরো পড়ুন : চাষের জমিতে উদ্ধার দশম শ্রেণির কিশোরীর দেহ, ঘটনার তিনদিন পর সামশেরগঞ্জে গ্রেফতার গোলাপ হোসেন
এদিকে আবার মেক্সিকোর এক নাগরিক যিনি ফ্লোরিডায় খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন, তাকে দেশে ফেরাতে চেয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট। অন্যদিকে আগের নির্দেশে স্থগিতাদেশ জারির দাবি উঠলেও নিজের সিদ্ধান্তে অনড় বিচারক। এমতাবস্থায় তাই আদালতে যতক্ষণ না মীমাংসা হচ্ছে ততক্ষণ জিবুতিতেই দিন কাটবে আধিকারিকদের।
Made in India