বাংলাহান্ট ডেস্ক: ফের প্রশাসনিক অচলাবস্থার মুখোমুখি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (America)। অনির্দিষ্টকালের জন্য অচল হয়ে যেতে চলেছে আমেরিকার সরকার। মঙ্গলবার মার্কিন সেনেট প্রশাসনের তহবিল সংক্রান্ত বিল অনুমোদন করতে ব্যর্থ হয়েছে। রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাট সদস্যদের মধ্যে মতানৈক্য কাটেনি। ফলে বুধবার থেকে সরকারি কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যাবে বলে হোয়াইট হাউস আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘোষণা করেছে। একে ‘শাটডাউন’ বলা হয়।
শাটডাউনের পথে আমেরিকা! (America)
প্রতি বছর ১ অক্টোবর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে (America) নতুন অর্থবর্ষ শুরু হয় এবং ৩০ সেপ্টেম্বর শেষ হয়। মঙ্গলবার ছিল চলতি অর্থবর্ষের শেষ দিন। সেই দিনই সরকারি তহবিলের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নতুন বিল পাশ না হওয়ায় সরকারি কার্যকলাপ কার্যত থেমে যাচ্ছে। রিপাবলিকান সদস্যরা শেষ মুহূর্তে একটি সাময়িক তহবিল পাশ করানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু ডেমোক্র্যাটরা সেই প্রস্তাবে সম্মত হননি। সেনেটে মোট ১০০ সদস্য থাকলেও কোনও বিল পাশ করাতে অন্তত ৬০টি ভোট প্রয়োজন হয়। রিপাবলিকানদের সংখ্যা ৫৩। তাই তাঁদের পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন সম্ভব হয়নি।
আরও পড়ুন: এক বছরের ব্যবধানে জমা পড়েছে ৪ লক্ষ অভিযোগ! পানীয় জল থেকে যাত্রী সুরক্ষা, ফের কাঠগড়ায় রেল
হোয়াইট হাউস সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক দিন ধরে সরকারি তহবিল নিয়ে একাধিক বৈঠক হয়েছে। কিন্তু সোমবারই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে সমঝোতায় পৌঁছনো কঠিন। বৈঠক থেকে বেরিয়ে ডেমোক্র্যাট সেনেটর চাক স্কুমার জানিয়েছিলেন, “দুই পক্ষের মধ্যে এখনও প্রচুর মতানৈক্য রয়ে গিয়েছে।” অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ডেমোক্র্যাটদেরই দায়ী করেছেন অচলাবস্থার জন্য। তিনি বলেছেন, “শাটডাউনের ভাল দিকও আছে। আমরা যেগুলো চাই না, তা বাদ দেওয়া যাবে। অনেককেই ছাঁটাই করা হবে, আর তারা প্রত্যেকেই ডেমোক্র্যাট (America)।”
এই শাটডাউনের ফলে শুধু আপৎকালীন পরিষেবাগুলি সচল থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। অর্থাৎ সেনাবাহিনী, সীমান্তরক্ষী বাহিনী এবং এয়ার ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণকারীদের কাজ চালু থাকবে। তবে শাটডাউন শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা বেতন পাবেন না। অন্য সব অ-জরুরি বিভাগ বন্ধ হয়ে যাবে। হাজার হাজার সরকারি কর্মী সাময়িকভাবে বসিয়ে দেওয়া হবে। তাঁদের বেতনও বন্ধ থাকবে। সামাজিক উন্নয়নমূলক প্রকল্প, নিরাপত্তাজনিত উদ্যোগ এবং গবেষণার কাজ বন্ধ থাকবে। ছোটখাটো ব্যবসার জন্য ঋণ দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হবে। বিমানযাত্রা থেকে বিনিয়োগ—সব ক্ষেত্রেই পড়বে প্রভাব (America)।
আরও পড়ুন: পুজোর ছুটিতে স্থগিত শুনানি, দেশে ফিরতে পারলেন না অন্তঃসত্ত্বা সোনালি-সহ ৬ জন
ইতিহাসে এর আগেও বহুবার মার্কিন সরকারে শাটডাউন হয়েছে। ২০১৮ সালে ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম দফায় ৩৫ দিনের জন্য অচল হয়ে পড়েছিল আমেরিকা (America)। সেটাই এখনও পর্যন্ত আমেরিকার সবচেয়ে দীর্ঘ শাটডাউন হিসেবে রেকর্ড রয়েছে। এবারও পরিস্থিতি অনিশ্চিত। রাজনৈতিক টানাপোড়েনের জেরে আবারও সাধারণ মানুষের উপর ভর করছে সঙ্কটের মেঘ।