বাংলাহান্ট ডেস্ক- রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের (Ukraine) যুদ্ধ থামানোর একাধিক প্রয়াস করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সম্প্রতি দুই রাষ্ট্রনেতার সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাত করেও সেরকম কোনো সুফল মেলেনি। বারবার শত চেষ্টা করেও ব্যর্থ হওয়ার পর শেষমেশ বদলাতে হল বিদেশনীতি। এবার ইউক্রেনের হাতে দূরপাল্লার মিসাইল তুলে দিতে চলেছে আমেরিকা (America)।
ইউক্রেনের হাতে দূরপাল্লার মিসাইল (Ukraine)
আমেরিকার পররাষ্ট্রনীতিতে বড়সড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত মিলল ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে। একাধিকবার কূটনৈতিক পথে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত থামানোর চেষ্টা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দু’দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গেও বৈঠক করেছিলেন তিনি। কিন্তু সেই উদ্যোগ ব্যর্থ হওয়ায় এবার কড়া অবস্থান নিলেন হোয়াইট হাউসের কর্তা। জানা গিয়েছে, ইউক্রেনকে শক্তিশালী করতে তার হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র।
আরও পড়ুন:-“মোদীকে ফোনে বললাম…”, অতিরিক্ত শুল্ক চাপিয়ে ফের ভারত-পাক সংঘাত নিয়ে বড় দাবি করলেন ট্রাম্প
প্রথম সারির একটি মার্কিন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, ট্রাম্প প্রশাসন ইউক্রেনের জন্য ৩৩৫০ ইউনিট ‘এক্সটেন্ডেড রেঞ্জ অ্যাটাক মিউনিশন’ (ইআরএএম) বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই ক্ষেপণাস্ত্র কিনতে খরচ পড়বে প্রায় ৮৫ কোটি মার্কিন ডলার, যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৭৪৫১ কোটি টাকা। আগামী ছ’সপ্তাহের মধ্যেই এই অত্যাধুনিক অস্ত্র ইউক্রেনের হাতে তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
এই ‘এক্সটেন্ডেড রেঞ্জ অ্যাটাক মিউনিশন’ ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ২৪০ থেকে ৪৫০ কিলোমিটার। বিশেষ নকশায় তৈরি হওয়ায় এটি শত্রুর ঘাঁটিতে সরাসরি প্রবেশ করে বড়সড় ক্ষয়ক্ষতি ঘটাতে সক্ষম। প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের মতে, এতদিন পর্যন্ত ইউক্রেনকে আমেরিকা মূলত আত্মরক্ষামূলক অস্ত্র সরবরাহ করেছিল। কিন্তু এবার আক্রমণাত্মক সক্ষমতা বাড়াতে এই মিসাইল পাঠাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। অর্থাৎ, ইউক্রেন যাতে রাশিয়ার ভেতরে ঢুকে পাল্টা আঘাত হানতে পারে, সেটাই নিশ্চিত করতে চাইছে ওয়াশিংটন।
আরও পড়ুন:-ভারতের সঙ্গে চিনের সম্পর্ক গভীর হতেই বাড়ছে রাগ? বেজিংয়ের উদ্দেশ্যে এবার বিরাট হুমকি ট্রাম্পের
এই সিদ্ধান্তকে অনেকেই আমেরিকার পররাষ্ট্রনীতির বড়সড় মোড় ঘোরানো পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। কারণ, দীর্ঘদিন ধরে ট্রাম্প রাশিয়া এবং ইউক্রেন উভয়ের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করলেও, পরিস্থিতি বদলাতে বাধ্য হয়েছেন। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে চাপের মুখে ফেলতেই ইউক্রেনের হাতে এমন দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে, এই পদক্ষেপের ফলে রাশিয়া-আমেরিকা সম্পর্ক আরও তলানিতে পৌঁছতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন কূটনৈতিক মহল। তবে ট্রাম্প শিবিরের দাবি, রাশিয়ার আগ্রাসন ঠেকাতে ইউক্রেনকে প্রয়োজনীয় সামরিক শক্তি জোগানোই এখন জরুরি। এর মাধ্যমে মস্কোকে সরাসরি বার্তা দিতে চাইছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট—যুদ্ধ যদি থামানো না হয়, তবে পাল্টা আঘাতের জন্য প্রস্তুত থাকুক রাশিয়া।