পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর করছেন ট্রাম্প! আমেরিকা দেবে “মারণাস্ত্র”, প্রভাবিত হবে ভারত?

Published on:

Published on:

America will provide lethal weapons to Pakistan.

বাংলাহান্ট ডেস্ক: আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও পাকিস্তানের (Pakistan) প্রতি সহানুভূতিশীল মনোভাব দেখাচ্ছেন। সাম্প্রতিক খবর অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র এবার ইসলামাবাদকে আধুনিক AIM-120 অ্যাডভান্সড মিডিয়াম-রেঞ্জ এয়ার-টু-এয়ার মিসাইল (AMRAAM) সরবরাহ করতে চলেছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, এটাই সেই প্রাণঘাতী ক্ষেপণাস্ত্র, যার মাধ্যমে ২০১৯ সালে পাকিস্তান ভারতের মিগ-২১ বাইসন যুদ্ধবিমানটি গুলি করে নামিয়েছিল। সেই ঘটনায় ভারতীয় বীর পাইলট উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানের সাহসিকতা আজও দেশের মানুষ স্মরণ করেন। আর এবার ফের সেই একই মিসাইল পাকিস্তানের হাতে তুলে দিচ্ছে আমেরিকা—যা নিয়ে কূটনৈতিক মহলে ইতিমধ্যেই তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে।

পাকিস্তানকে বড় উপহার আমেরিকার (Pakistan)

আমেরিকার ডিপার্টমেন্ট অফ ওয়ার (DoW) সম্প্রতি এক বিজ্ঞপ্তিতে ঘোষণা করেছে যে, রেথিয়ন কোম্পানির তৈরি AIM-120 ক্ষেপণাস্ত্র একাধিক দেশকে সরবরাহ করা হবে। সেই তালিকায় পাকিস্তানের (Pakistan) নামও রয়েছে। নতুন এই চুক্তির আর্থিক মূল্য প্রায় ৪১.৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যার ফলে মোট প্রকল্পের পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে প্রায় ২.৫১ বিলিয়ন ডলার। পাকিস্তানের পাশাপাশি এই তালিকায় ব্রিটেন, জাপান, সৌদি আরব ও তুরস্কের মতো দেশও রয়েছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতরের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মে মাসের মধ্যে সমস্ত ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের কাজ সম্পূর্ণ হবে।

আরও পড়ুন:ধনতেরাসের আগেই বাড়ল সোনার দাম! চিন্তিত ক্রেতা ও বিক্রেতারা , জানুন আজকের রেট

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলি শুধুমাত্র F-16 যুদ্ধবিমান ব্যবহারের উপযোগী, যা পাকিস্তান (Pakistan) এয়ার ফোর্সের (PAF) মূল শক্তি হিসেবে বিবেচিত হয়। বর্তমানে পাকিস্তান AIM-120C5 মডেলের ব্যবহার করছে, যা তারা ২০১০ সালে ব্লক-৫২ F-16 বিমানের সঙ্গে যুক্ত করেছিল। এবার তারা পাচ্ছে আরও উন্নত AIM-120C8 সংস্করণ, যা মার্কিন সেনাবাহিনীর AIM-120D মডেলের রপ্তানি সংস্করণ। এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দূরত্বে শত্রুর বিমানকে লক্ষ্যবস্তু করতে সক্ষম, এবং এতে রয়েছে ‘ফায়ার অ্যান্ড ফরগেট’ প্রযুক্তি—অর্থাৎ একবার লক্ষ্য ঠিক করলেই নিজে থেকে টার্গেট ধ্বংস করতে পারে।

গত কয়েক মাসে পাকিস্তান (Pakistan) ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সামরিক সম্পর্ক নতুন করে উষ্ণ হয়েছে। চলতি বছরের জুলাইয়ে পাকিস্তানের এয়ার চিফ মার্শাল জহির আহমেদ বাবর ওয়াশিংটনে গিয়ে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বিশ্লেষকদের ধারণা, সেই সফরের পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে অস্ত্র চুক্তির প্রস্তুতি শুরু হয়।

America will provide lethal weapons to Pakistan.
AIM-120 AMRAAM

আরও পড়ুন: পুলিশের চোখের সামনে তৃণমূল অফিসে হামলা! ত্রিপুরায় ছুটলেন কুণাল-সায়নীরা

কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত আসলে দক্ষিণ এশিয়ার কৌশলগত ভারসাম্যকে প্রভাবিত করতে পারে। একদিকে যেখানে ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক ক্রমশ ঘনিষ্ঠ হচ্ছে, সেখানে পাকিস্তানকে (Pakistan) আবারও সামরিক সহায়তা দিয়ে ওয়াশিংটন যেন পুরনো মিত্রকে নিজের পালে টানতে চাইছে। নতুন এই ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ নিঃসন্দেহে পাকিস্তানের আকাশ প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াবে, যা ভারতের জন্য নতুন নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।

অনেকেই মনে করছেন, এটি “নতুন কৌশলগত ঠান্ডা যুদ্ধ”-এর শুরু, যেখানে আমেরিকা, ভারত ও পাকিস্তান (Pakistan)—উভয় দেশকেই একই সঙ্গে ভারসাম্যের খেলায় রাখছে। তবে ভারতীয় প্রতিরক্ষা মহল এই চুক্তিকে “উদ্বেগজনক এবং নজরদারির উপযুক্ত” বলে মন্তব্য করেছে।