বাংলা হান্ট ডেস্কঃ লোকসভা ভোটের আবহে সন্দেশখালি কাণ্ড (Sandeshkhali Incident) নিয়ে তোলপাড় রাজ্য। ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে ‘স্টিং অপারেশনে’র একটি ভিডিও। সম্প্রতি আবার বসিরহাটের বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্রের একটি ভিডিও সাড়া ফেলে দিয়েছে। এই আবহে তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ চলছে। এই নিয়ে এবার এক্স হ্যান্ডেলে বিস্ফোরক এক পোস্ট করলেন বিজেপির আইটি সেলের প্রধান তথা পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সহ পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য (Amit Malviya)।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টে নাগাদ নিজের এক্স হ্যান্ডেলে একটি দীর্ঘ পোস্ট করেন অমিত। লেখেন, ‘অধমেরও অধম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথমে তিনি অস্বীকার করেন, শেখ শাহজাহানকে এবং তাঁর শাগরেদরা সন্দেশখালিতে মহিলাদের ধর্ষণ এবং বলপূর্বক জমি দখল করেছে। এরপর পশ্চিমবঙ্গের ডিজিপি, যিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুগত, তিনি সন্দেশখালিতে বেশ ক্যাম্প করেন। তবে অপরাধের দাগ মুছতে ব্যর্থ হন। এরপর পশ্চিমবঙ্গ সরকার বাধ্য হয়ে এফআইআর করে’।
On #Sandeshkhali.
Mamata Banerjee is beyond evil. First, she denied that her close aide Sheikh Shahjahan and his henchmen raped the women of #Sandeshkhali and grabbed poor people’s land. No less than the DGP of West Bengal, a Mamata Banerjee loyalist, camped in Sandeshkhali for…
— Amit Malviya (मोदी का परिवार) (@amitmalviya) May 9, 2024
অমিত লেখেন, ‘সেই সময় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে মুগ্ধ করতে রাজ্য পুলিশ এতটাই মুখিয়ে ছিল যে তাঁরা বর্তমান বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্র সহ মহিলাদের অন ক্যামেরা বলানো করান, তাঁদের ধর্ষণ হয়নি এবং তাঁরা সকল সহায়তা পাচ্ছেন। কিন্তু আদালতে জমা দেওয়া রেখার এফিডেভিট বিজেপির হাতে আসতেই তাঁদের এই ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা বিফলে যায়। সেখানে ধর্ষণের চার্জ ছিল। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে গিয়ে একজন ধর্ষিতার পরিচয় প্রকাশ্যে আনার জন্য বিজেপির তরফ থেকে বাংলার ডিজিপি এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে কেস ফাইল করা হয়’।
বিজেপি (BJP) নেতা লিখেছেন, ‘কলকাতা হাই কোর্টের হস্তক্ষেপের পর সন্দেশখালির পুরুষ এবং মহিলাদের থেকে ৭০০ টিরও বেশি এফিডেভিট পাওয়া গিয়েছে। ধর্ষণ, অত্যাচার, জমি দখল, হিংসা সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। বর্তমানে এই মামলা সিবিআইয়ের হাতে রয়েছে। শেখ শাহজাহানও গ্রেফতার হয়েছেন। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থামেননি। পশ্চিমবঙ্গ সরকার অভিযুক্তদের বাঁচাতে রক্ষা করতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে’।
নিজের পোস্টে সন্দেশখালির ‘স্টিং অপারেশন’ নিয়েও লিখেছেন অমিত। বিজেপি নেতার দাবি, ‘সন্দেশখালির নির্যাতিতাদের কালিমালিপ্ত করতে এবং ন্যায়ের জন্য তাঁদের লড়াই দুর্বল করতে তৃণমূল কংগ্রেস একটা প্ল্যানমাফিক ক্যাম্পেন শুরু করেছে। প্রথমে গঙ্গাধর কয়াল নামের একজন বিজেপি নেতার একটি ভুয়ো এআই জেনারেটেড ভিডিও প্রকাশ করে দাবি করা হয়, এই আন্দোলন পরিকল্পনা এবং ফান্ড করেছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কয়াল সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং সিবিআইয়ের কাছে এই ভুয়ো ভিডিও তদন্তের দাবি জানিয়েছেন’।
অমিত আরও লিখেছেন, ‘আজ ফের একজন ‘নির্যাতিতা’ নিজের বক্তব্য থেকে সরে দাবি করেছেন, বিজেপি জোর করে তাঁকে একটি সাদা কাগজে সই করিয়েছিল। বিজেপি প্রার্থী রেখা পাত্রর আরও একটি ভিডিও সামনে এসেছে। সেখানে তাঁকে দাবি করতে শোনা যাচ্ছে, এই আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত মানুষরা এর মাধ্যমে সুবিধা পাচ্ছেন, সংবাদমাধ্যমের নজরে আসছেন। দু’টি ক্ষেত্রেই কেউই অস্বীকার করেনি যে সন্দেশখালিতে কী ঘটনা ঘটেছিল’।
দীর্ঘ পোস্ট শেষে নিজেদের বিবেকের পাশে দাঁড়ানোর আর্জি জানিয়ে অমিত লিখেছেন, ‘ভুলে গেলে চলবে না, ২০১১ সাল থেকে, দীর্ঘ ১৩ বছর তৃণমূল কংগ্রেস সন্দেশখালির নির্যাতিতাদের মুখ বন্ধ রেখেছিল। এখন যদি ফের চেষ্টা করা হয় তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। দেশবাসীর মনে সন্দেশখালি আন্দোলনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই এমনটা করা হচ্ছে। এমন অন্ধকার সময়ে আমাদের নিজের বিবেক এবং সন্দেশখালির নির্যাতিতাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। যতক্ষণ না যাঁদের ওপর অত্যাচার হয়েছে তাঁরা লড়াইয়ের সাহস সঞ্চয় করতে পারছে। সন্দেশখালি আন্দোলনকে কালিমালিপ্ত করার তৃণমূলের প্রয়াত প্রত্যাহার করুন। তদন্তকারী সংস্থারা তদন্ত করুক এবং আদালত ন্যায় বিচার করুক। আমরা এটুকুই করতে পারি’।