বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নির্বাচনের মুখে নিউটাউনের ঝুপড়ি বস্তিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘিরে শুরু হয়েছে তীব্র রাজনৈতিক তরজা। ইকো পার্কের কাছে ঝুপড়িতে আগুন লাগার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৃণমূল কংগ্রেসকে কড়া ভাষায় নিশানা করেছেন বিজেপি নেতা অমিত মালাব্য (Amit Malviya)। তিনি অভিযোগ জানিয়ে বলেন, এই অগ্নিকাণ্ড নিছক দুর্ঘটনা নয়, বরং ভোটার তালিকা সংক্রান্ত বিতর্ক ঢাকতেই পরিকল্পিত কাণ্ড।
কী বললেন অমিত মালব্য (Amit Malviya)?
অমিত মালব্য (Amit Malviya) দাবি করেছেন, নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে অবৈধ বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা বসতিদের নোটিস সংক্রান্ত শুনানি শুরুর ঠিক আগেই ঝুপড়ি বস্তিতে এই বড় আগুন লাগে। তাঁর বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গে SIR প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকেই কলকাতার উপকণ্ঠে একের পর এক ফাঁকা ও পরিত্যক্ত ঝুপড়ির ছবি সামনে এসেছে। ওই ঝুপড়িতে বহু বাংলাদেশি বসবাস করতেন বলে দাবি করেন বিজেপি নেতা।
বিজেপির অভিযোগ, খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পর এই এলাকায় হাজার হাজার নাম বাদ পড়ে। সেই নামগুলি ফের তালিকায় তোলার পথ তৈরি করতেই আগুন লাগানো হয়েছে বলে সন্দেহ। অমিত মালব্যর (Amit Malviya) দাবি, আগুনে আধার, রেশন কার্ড, ভোটার আইডির মতো নথি পুড়ে যাওয়ার অজুহাতে নতুন করে কাগজপত্র বানিয়ে ভুয়ো নাগরিকত্ব প্রমাণের চেষ্টা হতে পারে। তিনি বলেন, “এটা প্রশাসনিক ব্যর্থতা নয়, ইচ্ছাকৃত কারচুপি।”
কখন লেগেছিল আগুন?
বুধবার সন্ধ্যায় নিউটাউনের ইকো পার্ক সংলগ্ন ঘুনি বস্তির একাধিক ঝুপড়িতে আগুন লাগে। মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে এবং ঘন ধোঁয়ায় ঢেকে যায় গোটা এলাকা। প্রথমে দমকলের ১০টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসায় পরে আরও ১০টি ইঞ্জিন পাঠানো হয়। স্থানীয় বাসিন্দারাও আগুন নেভাতে সাহায্য করেন।
সকাল ৭টা ১০ মিনিটে দমকলের কাছে আগুন লাগার খবর যায়। এরপর অন্তত ২০টি ইঞ্জিন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে কিছু জায়গায় আগুন পুরোপুরি না নেভায় বৃহস্পতিবার সকালেও পাঁচটি ইঞ্জিন গিয়ে ‘কুলিং ডাউন’ প্রক্রিয়া শুরু করে। দমকলের এক কর্তা জানিয়েছেন, বস্তির রাস্তা খুব সরু ও ঘিঞ্জি হওয়ায় দমকলের গাড়ি ঢুকতে সমস্যা হয়, সেই কারণেই শুরুতে আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের একাংশের দাবি, আগুন লাগার পর একাধিকবার গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। দমকলও এই সম্ভাবনা পুরোপুরি উড়িয়ে দিচ্ছে না। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, ঝুপড়িতে বাঁশ ও ত্রিপলের মতো দাহ্য পদার্থ বেশি থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তবে আগুন লাগার সঠিক কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। এই বস্তিতে বহু মানুষ বসবাস করতেন। বিধ্বংসী আগুনে অনেকেই মাথার ছাদ হারিয়েছেন। শীতের মধ্যে ঘরছাড়া হওয়ায় তাঁদের দুর্ভোগ বেড়েছে। তবে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনও হতাহতের খবর নেই।

আরও পড়ুনঃ লাগেজ বেশি? ট্রেনে উঠলেই গুনতে হবে অতিরিক্ত ফি, কত কী দিতে হবে হিসাব দিলেন রেলমন্ত্রী
কাঁকুড়গাছিতেও আগুন
এদিকে, বুধবার মধ্যরাতে কাঁকুড়গাছিতেও আগুন লাগে। একটি অক্সিজেন সিলিন্ডারের কারখানায় একের পর এক সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়। ঘটনাস্থলে দমকলের অন্তত ১৫টি ইঞ্জিন পৌঁছয়। দমকলের তৎপরতায় রাতেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। মানিকতলা থানার পুলিশও ঘটনাস্থলে যায়। এই ঘটনাতেও কোনও হতাহতের খবর মেলেনি।












