বাংলা হান্ট ডেস্কঃ 2014 সাল থেকেই দেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছেন নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহ। এমনকি তাদের বিশেষ বন্ধুত্বের জন্য এই দুই রাজনীতিবিদকে ‘কৃষ্ণ’ এবং ‘অর্জুন’-এর সঙ্গে তুলনা করা হয়ে থাকে আর এবার সেই অমিত শাহ তাঁর ‘বিশেষ’ বন্ধু তথা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ভগবান শিবের সঙ্গে তুলনা করে বসলেন।
নেপথ্যে কারণ কি, তা জানার জন্য আপনাকে ফিরে যেতে হবে আজ থেকে প্রায় কুড়ি বছর আগে। সাল 2002। গুজরাটে দাঙ্গার পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে এবং সেই মুহূর্তে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদে বিরাজ করে চলেছেন নরেন্দ্র মোদি। পরবর্তীকালে এই ঘটনায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর দিকে অভিযোগের আঙুল তোলে প্রতিপক্ষরা। যদিও পরবর্তীতে তদন্তভার হাতে নিয়ে সিট দ্বারা তৎকালীন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রীকে ক্লিনচিট পর্যন্ত দেওয়া হয়। তবুও স্বস্তি মেলেনি!
পরবর্তীকালে মৃত কংগ্রেস সাংসদ এহসান জাফরির স্ত্রী সুপ্রিমকোর্টে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা পর্যন্ত দায়ের করেন। যদিও গতকাল এই মামলাটি খারিজ করেছে শীর্ষ আদালত আর এবার এই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন অমিত শাহ। তাঁর দাবি, “নীলকণ্ঠের মত নরেন্দ্র মোদি সকল মিথ্যে অভিযোগ সহ্য করে চলেছেন।”
এদিন গুজরাট দাঙ্গা প্রসঙ্গে অমিত শাহ বলেন, “ভগবান শঙ্কর (শিব) যেমন বিষ পান করেছিলেন, ঠিক সেরকমভাবেই গুজরাট দাঙ্গা প্রসঙ্গে সকল মিথ্যে অভিযোগ সহ্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী। বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ উঠলেও এর বিরুদ্ধে একটিমাত্র কথা বলেননি তিনি। এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী যে কি পরিমাণ সংগ্রাম করে গিয়েছেন, তা কেবলমাত্র আমি সামনে থেকে দেখেছি।”
এদিন গুজরাট দাঙ্গার মূল কারণকেও জনসাধারণের সামনে তুলে ধরেন তিনি। শাহ বলেন, “গুজরাটের দাঙ্গার প্রধান কারণ ছিল গোধরায় ট্রেনে আগুন লাগিয়ে দেওয়া। এমনকি সেই ঘটনায় অনেকের সংসার উজাড় হয়ে যায়। মায়ের কোলে থাকা 16 দিনের বাচ্চা মেয়েটিও বাঁচাতে পারেনি সেদিন। ঘটনায় ট্রেনের ভিতর অগ্নিদগ্ধ সকলের মানুষের শেষকৃত্য আমি নিজের চোখে দেখেছি। এই ঘটনায় জনসাধারণের মধ্যে যে ক্ষোভ জন্ম নিয়েছিল, সেটাই দাঙ্গার সৃষ্টি করে আর এরপর সেই দাঙ্গাকে বৃদ্ধি করা পেছনে ছিল রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র।”
তবে শুধুমাত্র মোদির প্রশংসা করা নয়, এদিন রাহুল গান্ধীকেও কটাক্ষ করেন শাহ। তিনি জানান, “গুজরাট দাঙ্গার তদন্তের সময় যখন সিট প্রধানমন্ত্রীকে ডাকে, তখন তিনি কোনোরকম নাটক করেননি। তিনি কখনোই তাঁর দলের কর্মী-সমর্থকদের আন্দোলনে নামতে বলেননি। সর্বদা সহযোগিতা করে গিয়েছেন।” ফলে অমিত শাহের এই বক্তব্য যে ঘুরিয়ে রাহুল গান্ধীকেই কটাক্ষ, তা বুঝতে সমস্যা হয়নি কারোরই।