বাংলা হান্ট ডেস্কঃ SIR সংক্রান্ত টানাপোড়েনে এই মুহূর্তে বঙ্গ রাজনীতিতে সবচেয়ে আলোচ্য নাম মতুয়া সম্প্রদায়। নাগরিকত্ব না ভোটাধিকার, এই প্রশ্নে দীর্ঘদিন ধরেই দোলাচলে ছিলেন তাঁরা। সেই পরিস্থিতিতেই বাংলায় এসে মতুয়াদের উদ্দেশে স্পষ্ট বার্তা দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)।
SIR আবহে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে মতুয়া সম্প্রদায়। সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করে জানিয়েছে, ভোটাধিকার পাওয়ার আগে অবশ্যই ভারতের নাগরিক হতে হবে। এই নির্দেশের পর থেকেই নাগরিকত্ব এবং ভোটাধিকার নিয়ে মতুয়াদের মধ্যে তৈরি হয়েছিল অনিশ্চয়তা।
কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর আশ্বাসে বহু মতুয়া ইতিমধ্যেই CAA-তে আবেদন করেছেন। তাঁদের অনেকের কাছেই নাগরিকত্বের সার্টিফিকেট পৌঁছেছে। কিন্তু এই সার্টিফিকেট নির্বাচন কমিশনে প্রামাণ্য নথি হিসেবে দেখানো যাবে কি না, তা নিয়ে এতদিন সংশয় ছিল। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশন সেই বিষয়টি পরিষ্কার করে জানিয়েছে। কমিশন জানিয়েছে যে, CAA-র নাগরিকত্বের সার্টিফিকেট বৈধ নথি হিসেবে দেখানো যাবে। এর পর ফর্ম ৬ পূরণ করে নতুন করে ভোটার তালিকায় নাম তোলার সুযোগও মিলবে।
এই প্রেক্ষিতেই কলকাতায় সাংবাদিক বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। এদিন সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তর পর্বে উঠে আসে মতুয়া প্রসঙ্গ। অমিত শাহ স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “বাংলাদেশ থেকে আসা শরণার্থীদের ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। কেউ কিছু করতে পারবে না। স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও মতুয়াদের জন্য কিছু করতে পারবেন না। মতুয়াদের ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই।”
এর আগেও সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছিল, শুধুমাত্র নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করলেই ভোটার তালিকায় নাম তোলা যাবে না। প্রথমে নাগরিকত্ব পেতে হবে, তারপরই মিলবে ভোটাধিকার।
উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গে মতুয়া সম্প্রদায়ের মোট জনসংখ্যা আনুমানিক আড়াই থেকে পৌনে তিন কোটি। ২০০৯ সাল থেকে দীর্ঘদিন মতুয়ারা তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থক বলেই পরিচিত ছিলেন। ‘বড়মা’র কাছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যাতায়াতও ছিল নিয়মিত। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ঠাকুরবাড়ি দ্বিধাবিভক্ত হয় শান্তনু-সুব্রত বনাম মমতাবালা, এই দুই শিবিরে ভাগ হয়ে যায় মতুয়া নেতৃত্ব।
অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি ও কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের হিসাব অনুযায়ী, রাজ্যের প্রায় ১০০টি বিধানসভা আসনে মতুয়া ভোটারদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি রয়েছে। তার মধ্যে ২১টি আসনে মতুয়া ভোটাররাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। ফলে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি, তৃণমূল ও কংগ্রেস, সব দলই মতুয়াদের দিকে বিশেষ নজর দিচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ ২০২৬ সালের বাজেট নিয়ে বড় আপডেট! কী জানাল কেন্দ্র?
কিছুদিন আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বঙ্গ সফরে এসে মতুয়া ও নমঃশুদ্র পরিবারগুলির পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, মর্যাদার সঙ্গে ভারতে থাকার অধিকার রয়েছে মতুয়াদের এবং CAA সেই পথই খুলে দিয়েছে। সেই কথারই পুনরাবৃত্তি করে এবার অমিত শাহ (Amit Shah) ফের আশ্বাস দিলেন মতুয়াদের কোনও ভয় বা দুশ্চিন্তার কারণ নেই।












