বাংলা হান্ট ডেস্ক: বাংলা তাঁর দ্বিতীয় বাড়ি। কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে প্রতি বারের মতো এইবারও আসার কথা ছিল। একথা ভেবেই নিজের বক্তব্যটুকু লিখেও ফেলেছিলেন। কিন্তু শেষ অবদি আসা আর হয় নি। আকষ্মিক শারীরিক অসুস্থতার জন্যই তিনি তাঁর প্রিয় জায়গায় আসতে পারেননি। তবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে না আসতে পারার ফাঁক সমাপ্তি অনুষ্ঠানে ভরে দিলেন কলকাতার জামাই অমিতাভ বচ্চন।
১৫ নভেম্বর, শুক্রবার উৎসবের শেষদিনের অনুষ্ঠানে মঞ্চে লাগানো স্ক্রিনে যখন অমিতাভ বচ্চনের মুখ ভেসে উঠল, তখন উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়লেন দর্শকাসনে বসা মানুষজন। শোনা গেল সেই চিরাচরিত ব্যারিটোন গলা। যা কিছু বলবেন বলে লিখেছিলেন ভিডিয়ো বার্তায় সেই বক্তব্য তুলে ধরলেন শাহেনশা।
বক্তব্যের শুরুতে ক্ষমাও চেয়ে নেন অমিতাভ বচ্চন। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, উপস্থিত দর্শকদের ধন্যবাদ জানিয়ে এমনভাবে বক্তব্য শুরু করলেন যেন তিনি কলকাতায় চলচ্চিত্র উৎসবের মঞ্চেই উপস্থিত রয়েছেন। তাঁর প্রতি কলকাতার মানুষের ভালোবাসার জন্য স্পষ্ট বাংলাতেই সকলকে ‘অনেক অনেক ধন্যবাদ’ জানাতেও ভুললেন না। কলকাতা কেন তাঁর কাছে এত কাছের তা আরও একবার মনে করিয়ে দিলেন সকলকে। মনে করিয়ে দিলেন, কলকাতা তাঁর দ্বিতীয় বাড়ি। এখানেই একটি কর্পোরেট কোম্পানিতে চাকরির মাধ্যমে তাঁর কেরিয়ারের শুরু। বিয়েও করেছেন বাঙালি মেয়েকে। স্ত্রী জয়া ভাদুরীর (বর্তমানে বচ্চন) কেরিয়ার শুরুও বাংলাতেই। সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় ‘মহানগর’ ছবির হাত ধরেই জয়া বচ্চনের প্রথম অভিনয় জীবন শুরু বলে জানালেন অমিতাভ বচ্চন।
https://youtu.be/afOM3Eh_JJ4
শুধু জয়া বচ্চনের সঙ্গে বৈবাহিক সূত্র ধরেই নয়, মিস্টার বচ্চন জানালেন কলকাতায় তাঁর এক মামার বাড়ি রয়েছে। সেখানে তাঁর মামাতো দিদিরাও প্রায়ই তাঁকে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানাতেন। সেই সূত্র ধরেই বাংলায় একটি ছড়া আবৃত্তি করেন অভিনেতা। স্পষ্ট বাংলায় বিগ বি বলেন বলেন, ”তাই তাই তাই, দিদির বাড়ি যাই, দিদির বাড়ি ভারী মজা কিল চড় নাই।” এখানেই শেষ নয়, কলকাতায় বাংলা চলচ্চিত্রের গৌরবজ্জ্বল ইতিহাস, সঙ্গীত জগৎ সবকিছুর কথাই উঠে এল অমিতাভ বচ্চনের কথায়।
ভারতীয় চলচ্চিত্র জগৎতের ভবিষ্যতের প্রসঙ্গে মনে করিয়ে দিয়ে বিগ বি বলেন, ডিজিটাল মাধ্যম যতই ভবিষ্যৎ হোক না কেন, তা কখনও বড়পর্দায় সিনেমা মুক্তির গৌরব, নস্টালজিয়া কেড়ে নিতে পারবে না। তাঁর কথায়, ”বর্তমানে যেভাবে পুরুষ ও নারী কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছে এবং চলচ্চিত্র জগৎকে সমৃদ্ধ করছে। আধুনিক সিনেমার প্রতিফলন হিসাবে আমরা বাড়িতে বসেই ডিজিটাল মাধ্যমে সিনেমা দেখতে পারি, তবে তাতে বড়পর্দায় সিনেমা দেখার আনন্দ, আবেগ পূরণ করা সম্ভব নয়। আমাদের ঐতহ্যকে সবসময়ই তাই বাঁচিয়ে রাখা প্রয়োজন। আমার প্রথম পছন্দ হল প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে সিনেমা দেখা।”