বাংলাহান্ট ডেস্ক: ‘শোলে’ ছবির নাম উঠলে যেমন জয়-বীরুর প্রসঙ্গ উঠবে, তেমনি গব্বর সিংয়ের নামও উঠে আসবে অবধারিত ভাবে। দুর্ধর্ষ ডাকাত গব্বরের চরিত্রে অভিনয় করে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন আমজাদ খান (Amjad Khan)। বলিউডের খ্যাতনামা অভিনেতাদের মধ্যে একজন ছিলেন তিনি। কিন্তু জানলে অবাক হবেন, এত জনপ্রিয় হওয়া সত্ত্বেও জীবনে একাধিক বার আর্থিক কষ্টে ভুগতে হয়েছিল তাঁকে।
আমজাদ খানের ছেলে শাদাব খান এর আগে বাবার ব্যক্তিগত জীবনের কাহিনি শুনিয়েছিলেন সংবাদ মাধ্যমে। তখনি শাদাব জানিয়েছিলেন, তাঁর যখন জন্ম হয় তখন হাসপাতালের বিল মেটানোর মতোও টাকা ছিল না আমজাদের কাছে। সদ্যোজাত ছেলের মুখ দেখে আনন্দ করা মাথায় উঠেছিল অভিনেতার। হাসপাতালের টাকা কীভাবে মেটাবেন সেই চিন্তায় হাসপাতালে আসাই বন্ধ করে দিয়েছিলেন তিনি।
স্বামী না আসায় কান্নাকাটি করতেন আমজাদ পত্নি। তখন ত্রাতা হয়ে এগিয়ে আসেন পরিচালক চেতন আনন্দ। তাঁর ‘হিন্দুস্তান কি কসম’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন আমজাদ। তিনি যখন ঘটনাটা শোনেন সঙ্গে সঙ্গে এগিয়ে আসেন টাকা মেটাতে।
সে সময়ে হাসপাতালের বিল হয়েছিল ৪০০ টাকা। কিন্তু ওই টাকাটাও জোগাড় করার ক্ষমতা ছিল না আমজাদের। শেষমেষ পরিচালক টাকা মেটাতে সদ্যোজাত ছেলেকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরেন আমজাদের স্ত্রী। ওই দিনটা আরো একটি কারণে বিশেষ ছিল। কারণ ওইদিনই গব্বর সিংয়ের চরিত্রের জন্য হ্যাঁ বলেছিলেন আমজাদ খান। আর ওই একটি চরিত্র তাঁর কেরিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল।
যে মানুষটা এক সময়ে নিজে অর্থকষ্টে ভুগেছেন, তিনিই কিন্তু পরে সবাইকে টাকা বিলিয়ে বেড়াতেন। শাদাব জানিয়েছিলেন, আমজাদের কাছে এসে কেউ দু ফোঁটা চোখের জল ফেললেই তাকে সাহায্য করার জন্য দু হাত উপুড় করে দিতেন বর্ষীয়ান অভিনেতা। তিনি নিজেও বুঝতেন যে তাঁর এই ভালো মানুষির সুযোগ নেওয়া হত। কিন্তু সাহায্য করার স্বভাব পালটাননি তিনি।
শাদাব জানিয়েছিলেন, নিজের সমস্ত টাকা ব্যাঙ্কে না রেখে বন্ধুবান্ধবদের কাছে গচ্ছিত রাখতেন তাঁর বাবা। কিন্তু মাত্র ৫১ বছর বয়সে যখন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন অভিনেতা, তখন মাত্র কয়েকজন এগিয়ে এসেছিলেন টাকা নিয়ে। শাদাব জানান, ১.২৫ কোটি টাকা গচ্ছিত রেখেছিলেন আমজাদ খান। তাঁর মৃত্যুর পর মাত্র কয়েক জন ছাড়া কেউ আসেনি টাকা নিয়ে।