বাংলাহান্ট ডেস্ক : গত ১২ ই জুন এক অভিশপ্ত দিন ছিল দেশবাসীর জন্য। ওড়ার পর মুহূর্তের মধ্যে ভেঙে পড়েছিল এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান (Ahmedabad Plane Crash)। সোজা গিয়ে এক মেডিকেল কলেজ হস্টেলে। দুর্ঘটনায় সব মিলিয়ে মৃত্যু হয় ২৬০ জনের। বিমানে থাকা একজন ব্যক্তি বাদে বাকি সকলেরই মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। আর দুর্ঘটনার (Ahmedabad Plane Crash) এতদিন পর অলৌকিক ভাবে বেঁচে ফিরল মাত্র আট মাস বয়সের এক শিশু। আগুনে কার্যত ঝলসে গেলেও মরণপণ লড়াইয়ে সন্তানকে বাঁচিয়ে আনলেন মা।
আহমেদাবাদ দুর্ঘটনায় (Ahmedabad Plane Crash) বেঁচে ফিরল শিশু
পাঁচ সপ্তাহ হাসপাতালে যমে মানুষে টানাটানির পর নবজন্ম হল ধ্যানশের। শিশুটির বাবা কপিল কাছাড়িয়া আমেদাবাদের বিজে মেডিকেল কলেজে ইউরোলজিতে MCh এর ছাত্র। তাঁর স্ত্রী মনীষা সন্তানকে নিয়ে থাকতেন আবাসিক কোয়ার্টারেই। দুর্ঘটনার (Ahmedabad Plane Crash) দিন হাসপাতালে ডিউটিতে ছিলেন কপিল। তখনই হস্টেলে ধাক্কা মারে দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিমানটি।
দুর্ঘটনার দিনের কথা জানান মা: দুঃস্বপ্নের দিনটির কথা মনে করে মনীষা বলেন, মুহূর্তের মধ্যে চারদিক অন্ধকার হয়ে যায়। তারপরেই ঘরে আগুন আর মারাত্মক উত্তাপ। সেই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে প্রথমেই ছেলের কথা মনে হয়েছিল মনীষার। আট মাসের সন্তানকে কোলে তুলে আগুনের মধ্যে দিয়ে বেরোনোর চেষ্টা করেন তিনি। মনীষা জানান, প্রচণ্ড আগুন (Ahmedabad Plane Crash) আর ধোঁয়ার মাঝে কিছুই দৃশ্যমান ছিল না। কোনোরকমে বেরিয়ে আসলেও দুজনেরই শরীর ঝলসে যায়।
আরও পড়ুন : “জঙ্গিরা টুরিস্টদের রেসপেক্ট করে”, পাহেলগাঁও হামলা নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য তৃণমূল বিধায়ক সাবিত্রী মিত্রের
গুরুতর ক্ষত হয়েছিল দুজনের শরীরেই: মনীষার মুখ এবং হাতে ২৫ শতাংশ পোড়ার ক্ষত তৈরি হয়। অন্যদিকে ছোট্ট ধ্যানশের শরীরের ৩৫ শতাংশ পুড়ে যায়। বুক, পেট, মুখ, দুই হাতে গুরুতর ক্ষত তৈরি হয়েছিল। তড়িঘড়ি কেডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় মা ও ছেলেকে। ধ্যানশকে রাখা হয় PICU তে। কিন্তু আট মাসের শিশুটিকে বাঁচিয়ে তোলা ছিল অত্যন্ত কঠিন। ভেন্টিলেটর সাপোর্ট, ফ্লুইড থেরাপি, ব্লাড ট্রান্সফিউশনের পাশাপাশি প্রয়োজন ছিল স্কিন গ্রাফটের। তার জন্য নিজের শরীর থেকে চামড়া দেন মা মনীষা। চিকিৎসক দলের এক সদস্য জানান, ভবিষ্যতে শিশুটির বৃদ্ধি যাতে কোনো ভাবে বাধা না পায়, সেটাই দেখা ছিল সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জের বিষয়।
আরও পড়ুন : একসাথে কামব্যাক দুই জনপ্রিয় নায়িকার, জোড়া ধামাকা এই সিরিয়ালে
জটিলতার এখানেই শেষ ছিল না। ফুসফুসে রক্ত জমে গিয়েছিল ছোট্ট ধ্যানশের। সাপোর্ট দিতে ভেন্টিলেটর এবং ইন্টারকোস্টাল ড্রেনেজ টিউব বসাতে হয়েছিল। পাঁচ সপ্তাহ লড়াই করার পর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন মা ও সন্তান। মনীষা বলেন, একসময় ভেবেছিলেন আর হয়তো বেরোতে পারবেন না। কিন্তু সন্তানের মুখ চেয়ে বেরোতেই হত।