বাংলাহান্ট ডেস্ক: মুক্তির পর দু সপ্তাহ কেটে গিয়েছে। অথচ ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ (The Kashmir Files) এর জনপ্রিয়তায় এতটুকু আঁচ লাগেনি। এখনো একই রকম চর্চায় অনুপম খের, মিঠুন চক্রবর্তী অভিনীত এই ছবি। কাশ্মীরি পণ্ডিতদের উপরে নৃশংস অত্যাচার এবং গণহত্যার নির্মম সত্য উঠে এসেছে ছবিতে। যদিও ছবিতে দেখানো ইতিহাস কতটা সত্যি ও অবিকৃত তা নিয়ে যথেষ্ট তর্ক বিতর্ক হয়েছে।
এবার ওই ঘটনার একজন প্রত্যক্ষদর্শী মুখ খুললেন ছবিটি নিয়ে। সন্তোষ কিচলু নামে ওই ব্যক্তি ছত্তিশগড়ের ভিলাইয়ের সেক্টর ৫ এর বাসিন্দা। এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানালেন তিনি।
১৯৬৪ সালে কাশ্মীরের সুফিয়ান ভটপুরাতে জন্ম হয় সন্তোষ কিচলু নামের ওই ব্যক্তির। শ্রীনগর থেকে পুলওয়ামা যাওয়ার পথে পড়ে এই স্থান। উল্লেখ্য, এখানেই ১২ জন কাশ্মীরি হিন্দুকে তাদের বাড়ি থেকে বের করে প্রকাশ্যে গুলি করা হয়েছিল। তারপর থেকেই হিন্দু মুসলিমের মধ্যে বিবাদের শুরু।
তবে প্রথম থেকে কিন্তু ছবিটা একেবারেই এমন ছিল না। দুই সম্প্রদায়ই মিলেমিশে থাকত কাশ্মীরে। সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, পাকিস্তানের কিছু জঙ্গি মুসলিমদের হিন্দুদের বিরুদ্ধে উসকানো শুরু করে। পাকিস্তানি জঙ্গিরা মুসলিমদের সঙ্গে যোগ দেয়। তারপর থেকেই কাশ্মীরি পণ্ডিতদের উপরে অত্যাচারের সূত্রপাত।
কাশ্মীরি পণ্ডিতরা প্রাণ ভয়ে ভিটেমাটি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। ১৯৯০ সালের দিকে কাশ্মীরে হিন্দুদের সংখ্যা শূন্যর কাছাকাছি চলে এসেছিল। সন্তোষ কিচলু জানান, ১৯৮৬ সালে ভিলাই এর স্টিল প্ল্যান্টে কাজ পেয়ে যান তিনি। তখনি ছত্তিশগড়ে চলে আসেন তিনি। কিন্তু সন্তোষ জানান, কাশ্মীরের সুফিয়ানে এখনো পর্যন্ত তাঁর পুড়ে যাওয়া বাড়ির ধ্বংসাবশেষ পড়ে রয়েছে।
সন্তোষ জানান, পাক জঙ্গিরা চোখের সামনে তাঁর পৈতৃক বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছিল। দোষ শুধু একটাই ছিল, তাঁরা কাশ্মীরি পণ্ডিত ছিলেন। তাঁর পরিবারের কয়েকজন সদস্য এখনো জম্মুতে থাকলেও বেশিরভাগই বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছেন।
‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ ছবির গল্পের বিষয়ে সন্তোষ বলেন, ছবিতে যা দেখানো হয়েছে তা অর্ধেক। কাশ্মীরে আরো অনেক বেশি হিংসার ঘটনা ঘটেছিল। সেই নৃশংসতা পর্দায় দেখানো সম্ভব নয়। মন্দির ধ্বংস করে দেওয়া থেকে শুরু করে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের হত্যা, তাদের বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা সে সময়ে সাধারণ ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছিল, জানান প্রত্যক্ষদর্শী সন্তোষ।