সিঙ্গাপুর এবং শ্রীলংকার ব্যবসা ডোবাবে ভারত, প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন সাকার করতে বড় পদক্ষেপ নয়া দিল্লির

বাংলা হান্ট ডেস্ক : আন্দামান এবং নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ ধীরে ধীরে গুরুত্বপূর্ন হয়ে ওঠছে। সামরিক দিক দিয়ে ভারতের কাছে আন্দামানের তাৎপর্য অসামান্য। ভারতীয় নৌ-সেনার ‘Unsinkable Aircraft Carrier’ বলা হয় আন্দামানকে। চিনের ওপর নজর রাখতে জুড়ি নেই এই দ্বীপপুঞ্জের। কিন্তু এবার আন্দামানের গুরুত্ব বাড়তে চলেছে ব্যবসায়িক ক্ষেত্রেও। মালাক্কা প্রণালীর নিকটবর্তী স্থানটি বিভিন্ন দেশ বিশেষ করে চিনের ব্যবসায়িক এবং অর্থনীতির জন্য ভারী গুরুত্বপূর্ন।

বিশ্ব বাণিজ্যের বারো আনা ব্যবসা চলে আন্দামান এবং নিকোবরের পাশ দিয়ে। মালয়েশিয়া এবং সিঙ্গাপুরের মাঝের মলাক্কা প্রণালীর মধ্যে দিতে বিশ্বের ৪০% ব্যবসায়িক আদানপ্রদান চলে। আর এই মালাক্কা প্রণালী গ্রেট নিকোবর আইল্যান্ডের পূর্বেই খুব সামনে অবস্থিত। গ্রেট নিকোবর আইল্যান্ড আকারে সিঙ্গাপুরের চেয়ে খানিক বড় এবং হংকংয়ের চেয়ে কিছুটা ছোট। প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর দ্বীপটিতে রবার, লাল তৈলবীজ, কাজু, পামের মতো গাছ পাওয়া যায় বিপুল পরিমাণে।

এতদিন জ্বালানি ভরার জন্য সিঙ্গাপুর এবং কলম্বোর উপর ভরসা করতে হত বিভিন্ন ভারতীয় জাহাজকে। সিঙ্গাপুরে বিশ্বের ব্যস্ততম ট্রান্স-শিপমেন্ট বন্দর রয়েছে, আর সেই পথ দিয়েই বিশ্বের ৫০ শতাংশ জাহাজ যাতায়াত করে। সাংহাই এরপরের স্থানেই রয়েছে সিঙ্গাপুর। ব্যবসায়িক কাজকর্মের ভিত্তিতে চারিপাশে নানান অর্থনৈতিক পরিকাঠামো গড়ে ওঠেছে।

nationalherald 2023 05 e5a924a9 2afe 4f49 97a8 7d8bd5c56247 gettyimages 1468543838 612x612 1

উল্লেখ্য যে, পশ্চিম এশিয়া এবং আফ্রিকা থেকে পণ্যবাহী জাহাজ ভারত মহাসাগর রওনা হলে হয় শ্রীলঙ্কার পাশ দিয়ে বঙ্গোপসাগর হয়ে চট্টগ্রাম বন্দর অথিবা মলাক্কা প্রণালী হয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া। এক্ষেত্রে গ্রেট নিকোবর আইল্যান্ডের উন্নয়ন করলে আগামী সময়ে এই বন্দরের গুরুত্ব সিঙ্গাপুর সহ অন্যান্য জায়গার থেকেও বেশী হয়ে উঠতে পারে। সিঙ্গাপুর এবং শ্রীলঙ্কার হামবানটোটা বন্দরকে বড় টেক্কা দেবে গ্রেট নিকোবর আইল্যান্ড।

the great nicobar island best islands in india

উল্লেখ্য, গ্রেট নিকোবর আইল্যান্ডের ভৌগোলিক অবস্থান সিঙ্গাপুরের চেয়েও বেশি গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্য গ্রেট নিকোবর আইল্যান্ডের গুরুত্বকে খাটো করা দেখা যায় না, কারণ এই রুট দিয়েই বিশ্ব বাণিজ্যের ৮০ শতাংশ খনিজ তেল পরিবহণ চলতে থাকে। শুধু তাই না, এই অঞ্চলে সোনা, রুপো, নিকেল, কোবাল্ট, তামা, দস্তার মতো ধাতুগুলিও এই অঞ্চলে বহু পরিমাণে পাওয়া যায়। আর তাই এবার স্থানের গুরুত্বকে কাজে লাগাতে চাইছে ভারত সরকার। দ্বীপের সুরক্ষার জন্য রয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনার এয়ার স্টেশন। সামনেই আবার নৌবাহিনীর বিরাট বহর উপস্থিত রয়েছে।

গত মার্চ মাসেই কেন্দ্র সরকার গ্রেট নিকোবর উন্নয়ন পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। সরকারের লক্ষ্য উন্নত পরিবহণ ব্যবস্থা এবং লেটেস্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে দ্বীপকে অত্যাধুনিক করে তোলা। বিশ্ব বাণিজ্যে নিকোবরের গুরুত্ব বাড়িয়ে তুলতে ট্রান্স-শিপমেন্ট বন্দরের মাধ্যমে গ্রেট নিকোবরে গভীর সমুদ্র পরিবহণ পরিষেবার উন্নয়ন করা হবে। কয়েকদিন আগেই চেন্নাই থেকে গ্রেট নিকোবর পর্যন্ত অপটিক্যাল ফাইবার কানেকশন ব্যবস্থার সংযোগ করা হয়েছে। আগামী দিনে যে বন্দরটি আরো গুরুত্বপূর্ন হয়ে উঠতে চলেছে সেই নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

Moumita Mondal
Moumita Mondal

মৌমিতা মণ্ডল, গ্র্যাজুয়েশনের পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। বিগত ৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে লেখালেখির সাথে যুক্ত। প্রায় ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর