‘ওকে ফলো করো’ শচীনকে বলেছিলেন রমাকান্ত, ভাগ্যদোষে সেই মানুষটিই আজ লড়ছেন অভাবের সাথে

সচিন তেন্ডুলকর (sachin Tendulkar) , ক্রিকেট দুনিয়ার ঈশ্বর। গুরু রমাকান্ত আচরকরের সব চেয়ে সফল ছাত্র তিনি। নিখুঁত টেকনিকে যখন একের পর এক বল বাউন্ডারিতে পাঠিয়েছেন তখন গ্যালারি ছাড়ি ‘সচিন’ ‘সচিন’ রব ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের প্রতিটি কোনায়। কিন্তু বিশ্বের ক্রিকেট শাসন করা এই কিংবদন্তিকে এমন এক ক্রিকেটারকে ফলো করতে বলেছিলেন রমাকান্ত যিনি জাতীয় দলের জার্সিও গায়ে চাপান নি। ভারতীয় ক্রিকেটের ভিভ রিচার্ড যার হওয়ার কথা ছিল, তিনি আজ লড়ছেন অভাবের সাথে।

images 2020 10 06T123602.211

অনিল গুরাভ – নামটা কেউই চিনতে পারবে না। রোগা ছিপছিপে এই তরুনকেই সেদিন ফলো করতে বলেছিলেন সচিনের গুরু। সচিন করেও ছিলেন তা। বলা হয়, তার ব্যাটিং টেকনিকের অনেকটাই অনিলের অনুপ্রেরণা। সিনিয়র হওয়ায় অনিলকে সচিন ডাকতেন স্যার বলে। অনিলের ব্যাট ধার করে খেলেওছিলেন সচিন। তবে অনিলের শর্ত ছিল বড় ইনিংস খেলতে হবে। সচিন সেদিন করেছিলেন সেঞ্চুরি। এহেন অনিল শুধু দুর্ভাগ্যের কারনেই হারিয়ে গেলেন ক্রিকেট বিশ্ব থেকে।

images 2020 10 06T123452.271

অনিল বড় হয়েছেন এক অত্যন্ত অভাবী সংসারে। অসম্ভব কষ্ট করে অনিলের মা মানুষ করে তুলছিলেন দুই ভাই অনিল ও অজিতকে। কিন্তু ভাগ্যের নিষ্ঠুর পরিহাস অনিল যখন মুম্বাই ক্রিকেটে বল শাসনে ব্যাস্ত তখনই ভাই অজিত বন্দুক হাতে মুম্বাই শাসন করতে মরিয়া।

images 2020 10 06T124114.179

ভাইয়ের আন্ডারওয়ার্ল্ড কানেকশনের কারনে অনিল ও অনিলের মাকে বারবারই ধরে নিয়ে যাওয়া হত থানায়। যখন ২২ গজের আগুনে পিচে বিশ্বের তাবড় তাবড় বোলারদের প্রমাণ করার কথা, তখন অনিলকে লক আপের ছোট অন্ধকারে বারবার নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে হয়েছে।

images 2020 10 06T124141.499

এভাবেই ভাগ্য বিড়ম্বিত অনিল আসক্ত হয়ে পড়ে মদ্যপানে। ক্রিকেট আর তার খেলা হয় নি। ৫১ বছরের এই মানুষটা আজ মুম্বাইয়ের এক ছোট্ট বস্তির ঘরে কোনো রকমে অভাবের বাউন্সার সামলাচ্ছেন। শুধু ভাগ্য দেবতার কৃপাদৃষ্টি ছিল না বলেই হয়তো ২২ গজের গ্লামারের দুনিয়া ছেড়ে তার ঠাঁই হয়েছে এক অতি সাধারণ মানুষের তালিকায়৷

 


সম্পর্কিত খবর