বাংলা হান্ট ডেস্ক: জন্মালেই যে মৃত্যু সুনিশ্চিত, এই চিরন্তন সত্য আমাদের সবাইকেই মেনে নিতে হয়। বিশ্বের প্রতিটি জীবকুলের জীবনচক্রই এই নিয়মে সংগঠিত হয়ে আসছে। তবে, বর্তমান দুনিয়ায় বিজ্ঞানের ওপর ভর করে একের পর এক অসম্ভবকে সম্ভব করা হচ্ছে। আর যেগুলি দেখে কার্যত অবাক হতে হয় আমাদের। এমতাবস্থায়, প্রশ্ন উঠতে পারে তাহলে সত্যিই কি মৃত জীবকে আবার বাঁচিয়ে তোলা যেতে পারে?
বিজ্ঞানীদের দৌলতে এবার সেই প্রশ্নেরও উত্তর পাওয়া গিয়েছে। বলা ভালো, তাঁরা এক বিলুপ্ত প্রাণীকেই কার্যত আবারও বাঁচিয়ে তুলেছেন। কিন্তু, কি করে? বর্তমান প্রতিবেদনে এই চমকপ্রদ তথ্যই আপনাদের সামনে বিস্তারিতভাবে উপস্থাপিত করা হল।
ক্লোনিংয়ের সাহায্যে ঘটল অবিশ্বাস্য ঘটনা:
এই প্রসঙ্গে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ব্ল্যাক-ফুটেড ফেরেট (Black-Footed Ferret) নামের এই প্রাণীটি বিলুপ্ত হয়ে যায়। এমতাবস্থায়, US Fish and Wildlife Service, ViaGen, Revive & Restore, Pets & Equine, the Association of Zoos and Aquariums and San Diego Zoo Global-এর গবেষকরা একত্রে ক্লোনিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিপন্ন প্রজাতিটিকে বাঁচিয়েছেন। আর এভাবেই কার্যত অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলেছেন তাঁরা।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ক্লোনিংয়ের হাত থেকে বিপন্ন প্রজাতিকে বাঁচানোর জন্য আমেরিকান বিজ্ঞানীদের এটিই প্রথম প্রচেষ্টা ছিল। যদিও, ইতিমধ্যেই বিশ্বের একাধিক দেশ বহু বছর ধরে এই সংক্রান্ত গবেষণা করে আসছে।
জানা গিয়েছে যে, উত্তর আমেরিকায় ফেরেটের একমাত্র প্রজাতি ছিল এই Black-Footed। ১৯৮০-র দশকে বিলুপ্ত হয়ে যায় এটি। যদিও, এর পেছনেও প্রত্যক্ষ ভাবে দায়ী ছিল মানুষই। কারণ, যতই চাষাবাদের এলাকা বাড়ানো হচ্ছিল, ততই এই প্রাণীর সংখ্যা কমে আসতে থাকে।
১৯৮১ সালে, একজন কৃষক তাঁর খামারে এই Black-Footed Ferret দেখেছিলেন। তারপরেই পরিবেশপ্রেমীরা তাদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে গিয়ে সেগুলির প্রজনন করান। যেগুলির মধ্যে মাত্র ৭ টি ফেরেট প্রজনন করতে সক্ষম হয়েছিল। আজ এই প্রজাতির মাত্র ৬৫০ জন সদস্য জীবিত যারা দু’টি ভিন্ন সুরক্ষিত স্থানে বাস করছে।
পাশাপাশি, সম্প্রতি, বিজ্ঞানীরা Black-Footed Ferret-এর একই বংশধরের টিস্যু খুঁজে পেয়েছেন এবং এটি থেকে একটি ক্লোন তৈরি করেছেন। যার নাম দেওয়া হয়েছে এলিজাবেথ অ্যান (Elizabeth Ann)। মূলত, ১৯৯৬ সালে ডলি ভেড়াকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য যে প্রক্রিয়াটি ব্যবহার করা হয়েছিল, এই ফেরেটও একই প্রক্রিয়ার দ্বারা জীবিত হয়েছে।
জানা গিয়েছে, এই ক্লোনিং প্রক্রিয়াটি ২০১৩ সালে শুরু হয়েছিল এবং ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ক্লোন করা ফেরেট এলিজাবেথ অ্যানের জন্ম হয়। তারপর সেটি কলোরাডো সেন্টারের কর্মীদের তত্বাবধানে রয়েছে।