বাংলাহান্ট ডেস্ক: “হারকার জিতনে ওয়ালো কো বাজিগর কেহতে হ্যায়” এরকমই এক অনন্য সাফল্যের কাহিনী (Success Story) মধ্যপ্রদেশের অঞ্জলির। প্রতিবছরই কেন্দ্রীয় সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা (UPSC) দিতে বসেন লাখো পরীক্ষার্থী। কিন্তু সেই দীর্ঘ প্রতিযোগিতার পথে শেষ পর্যন্ত সাফল্যের মুখ দেখতে পান কেবলমাত্র তাঁরাই, যাঁরা স্বপ্নপূরণের জন্য অটল সংকল্প ও নিরলস পরিশ্রমে বিশ্বাস রাখেন। মধ্যপ্রদেশের রাজগড় জেলার অঞ্জলি সোনধিয়ার সাফল্যের গল্প সেই পথেরই এক অনন্য উদাহরণ। তিনি বর্তমানে ভারতীয় বন পরিষেবার (IFS) একজন কর্মকর্তা। কিন্তু তাঁর যাত্রাপথ সহজ ছিল না।
অঞ্জলির হার না মানা সফলতার গল্প (Success Story)
অঞ্জলির জীবনের মোড় ঘুরে যায় ঠিক তখনই, যখন পরিবার তাঁর বিয়ে দিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এমন পরিস্থিতিতে তাঁর মা মেয়ের মনের ইচ্ছে চিনতে পেরে সাহসী সিদ্ধান্ত নেন। বিয়ে স্থগিত করে মেয়েকে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেন। অঞ্জলির মা-ই ছিলেন তাঁর সবচেয়ে বড় শক্তি, যাঁর কারণে তিনি স্বপ্নপূরণের পথে এগোতে পেরেছিলেন (Success Story)।
আরও পড়ুন:‘ইউনূস পাকিস্তানি’ স্লোগানে কাঁপল নিউ ইয়র্ক,বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে উঠল প্রশ্ন
২০১২ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর অঞ্জলি ২০১6 সালে UPSC পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করেন। তাঁর প্রস্তুতির হাতিয়ার ছিল মূলত NCERT-এর পাঠ্যপুস্তক ও বিভিন্ন অনলাইন ক্লাস। কিন্তু শুরুটা সহজ হয়নি। প্রথম তিনটি প্রচেষ্টায় তিনি প্রাথমিক পরীক্ষাই পেরোতে পারেননি। একের পর এক ব্যর্থতা তাঁকে ভেঙে দেয়নি, বরং আরও শক্ত করে তুলেছিল (Success Story)।
অবশেষে চতুর্থ প্রচেষ্টায় অঞ্জলি সাফল্যের মুখ দেখেন। ২০১৯ সালের সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় তিনি ৯ম স্থান অধিকার করেন। আর সেখান থেকেই তাঁর স্বপ্নপূরণের পথ খুলে যায়। আজ তিনি ভারতীয় বন পরিষেবার গর্বিত কর্মকর্তা। নিজের সাফল্যের মাধ্যমে তিনি শুধু পরিবারকেই নয়, গোটা দেশকেই অনুপ্রাণিত করেছেন (Success Story)।
একটি সাক্ষাৎকারে অঞ্জলি জানিয়েছেন, তাঁর সাফল্যের মূলমন্ত্র ছিল সিলেবাসকে গভীরভাবে বুঝে নেওয়া, নিয়মিত মক টেস্ট দেওয়া এবং পরিকল্পিত প্রস্তুতি চালিয়ে যাওয়া। তাঁর মতে, কেবল পরিশ্রম করলেই হবে না, সঠিক দিকনির্দেশনা আর ধৈর্য বজায় রাখাই আসল। তিনি বিশ্বাস করেন, কেউ যদি ইচ্ছাশক্তি নিয়ে লক্ষ্য স্থির করেন এবং সততার সঙ্গে কঠোর পরিশ্রম করেন, তাহলে সাফল্য একদিন না একদিন আসবেই (Success Story)।
আরও পড়ুন:অঙ্কে Msc ডিগ্রি! ব্যবসায় লাগালেন বিশেষ ফর্মুলা, এখন কোটি কোটি টাকা উপার্জন করছেন হরিয়াণার অক্ষয়
অঞ্জলির এই গল্প কেবল ব্যক্তিগত সাফল্যের নয়, বরং সমাজের জন্যও এক দৃষ্টান্ত। বিশেষত নারীদের জন্য, যাঁরা প্রায়শই বিয়ে ও সংসারের চাপে নিজেদের স্বপ্ন বিসর্জন দেন। অঞ্জলি প্রমাণ করেছেন, পরিবারের সমর্থন ও নিজের নিষ্ঠা থাকলে কোনও বাধাই বড় নয়। তিনি দেখিয়েছেন, প্রতিকূলতার মধ্যেও স্বপ্নকে আঁকড়ে ধরে এগিয়ে গেলে লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব (Success Story)।
অঞ্জলি সোনধিয়ার সাফল্য আজ হাজারো তরুণ-তরুণীর কাছে এক আলোকবর্তিকা, যেখান থেকে তাঁরা শিখতে পারেন যে পরিস্থিতি যতই কঠিন হোক না কেন, মনোবল অটুট থাকলে স্বপ্ন একদিন বাস্তবে পরিণত হবেই (Success Story)।