বাংলাহান্ট ডেস্কঃ সবে ১০ রেখেছে পা, পঞ্চম শ্রেণীর পড়ুয়া। নাম অনুব্রত সরকার (Anubrata sarkar)। নিজের হাতে ছ’টি মোবাইল অ্যাপ তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে এই একরত্তি ছেলেটি। আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) শহরের নিউ টাউন এলাকার বাসিন্দা অনুব্রতর তৈরি অ্যাপ এখন গুগল প্লে স্টোরে ডাউনলোডের অপেক্ষায়। তার এই কীর্তির কথা শুনে চমকে গিয়েছে সবাই। শুধু তাই নয়, অনুব্রতর এই অ্যাপ যে সুরক্ষিত, সেব্যাপারে শংসাপত্রও পেয়ে গিয়েছে সে।
একমাত্র চীন বাদে বিশ্বের সব দেশে তার এই অ্যাপ ডাউনলোড করা যাচ্ছে। অ্যাপের প্রাইভেসি পলিসি থেকে শুরু করে সিকিউরিটি—সব কিছু নিজেই ঠিক করেছে অনুব্রত। কিন্তু কেন চীনে তার তৈরি অ্যাপ ডাউনলোড করা যাবে না? ছোট্ট অনুব্রতর সাফ জবাব, ‘চীন আমাদের সেনাদের মেরে ফেলেছে। তাই চীনের কেউ আমার অ্যাপ ডাউনলোড করতে পারবে না। চীন সারা বিশ্বে দাদাগিরি দেখাচ্ছে। আমিও দাদাগিরি দেখাচ্ছি।’
অনুব্রতর বাবা কৌশিক সরকার আলিপুরদুয়ার শহর লাগোয়া জিৎপুর হাইস্কুলে শিক্ষকতা করেন। মা শান্তা ভট্টাচার্য নিউ টাউন বালিকা শিক্ষা মন্দির স্কুলের শিক্ষিকা। কৌশিকবাবু বলেন, ছোটবেলা থেকে অঙ্ক ও কম্পিউটারের প্রতি আগ্রহ অনুব্রতর। মাত্র আট বছর বয়সেই ছেলে প্রথম একটি অ্যাপ তৈরি করেছিল। সেই থেকে শুরু। তারপর একে একে আরও ছ’টি অ্যাপ বানিয়ে ফেলেছে সে।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, অনুব্রতর কম্পিউটারে হাতেখড়ি পাঁচ বছর বয়সে। তৃতীয় শ্রেণী থেকেই সে রিজওনিং, কোডিং ও ডিকোডিং চর্চা করে। ইতিমধ্যেই দেশের সবক’টি অলিম্পিয়াডে এই খুদে অংশ নিয়েছে। সিলভার জোন অলিম্পিয়াডে ট্যালেন্ট হান্টে র্যা ঙ্কিং করে সোনার পদকও ছিনিয়ে এনেছে অনুব্রত। যেখানে বিশ্বের তাবড় তাবড় খুদে প্রতিযোগীদের সঙ্গে তার মেধাগত তীব্র লড়াই ছিল।
অনুব্রতর তৈরি অ্যাপের তালিকায় আছে—লুডোশিপ, কিউআর কোড স্ক্যানার, মিট অ্যাপ, পিঞ্চ হিটার ব্যাটসম্যান, ব্রিক ও মিটার ও লিজেন্ডারি রানার্স। এরমধ্যে মিট অ্যাপটি একটি মেসেজিং অ্যাপ। যেটি আক্ষরিক অর্থে একটি চ্যাটিং সফটওয়্যার। অনুব্রত জানিয়েছে, তার তৈরি এই চ্যাটিং অ্যাপ যে কেউ নির্ভয়ে ব্যবহার করত পারেন। কোনও ভয় নেই, সমস্যাও নেই।
অনুব্রত শুধু টেকনোলজি নিয়ে আগ্রহী তা নয়। ক্রিকেট ও দাবাতেও সমান উৎসাহ তার। চার বছর বয়সে অনুব্রত কলকাতার একটি টিভি শো’য় অংশ নিয়েছিল। যার সঞ্চালক ছিলেন স্বয়ং সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। ভারতীয় ক্রিকেট টিমের প্রাক্তন ক্যাপ্টেনও অনুব্রতর প্রতিভা দেখে চমকে গিয়েছিলেন। এই বয়সে বিশ্বের যেকোনও দেশের রাজধানী ও বড় বড় শহরের নাম সে নিমিষে বলে দেয়।
অনুব্রতর বাবা ও মা বলেন, ‘আমরাও মাঝে মাঝে ছেলের কাণ্ডকারখানা দেখে অবাক হয়ে যাই!’ বড় হয়ে কী হতে চায় অনুব্রত? শহরের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের এই পড়ুয়ার আগ্রহ রোবটিক্সে। তা নিয়েই পড়াশুনা করতে চায় সে। ইতিমধ্যেই শহর জুড়ে অনুব্রতকে ‘বিস্ময় বালক’ বলা শুরু হয়েছে।