বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বাংলায় তৃণমূল নেতাদের মধ্যে সর্বদা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকেন, এমন কোন ব্যক্তির নাম বলতে গেলে প্রথমেই আসে বীরভূমের তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের নাম। কখনো ‘খেলা হবে’, আবার কখনো ‘ভয়ঙ্কর খেলা হবে’ ইত্যাদি হুঙ্কার দেওয়ার মাধ্যমে সর্বদাই খবরের শিরোনামে থাকেন কেষ্ট তথা অনুব্রত মণ্ডল। এদিন আবারো খবরের শিরোনামে তিনি। এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার মাত্র 24 ঘন্টা কাটতে না কাটতেই ফের একবার সিবিআই দফতর থেকে তলব করা হয় তৃণমূল নেতাকে। তবে শেষপর্যন্ত আইনজীবী দ্বারা সিবিআইয়ের কাছে চিঠি দিয়ে অনুব্রত জানালেন যে, তিনি নিজাম প্যালেসে উপস্থিত থাকতে পারবেন না।
শুক্রবার এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান অনুব্রত মণ্ডল। এরপরেই রাজারহাটের চিনার পার্কের বাড়িতে গিয়ে ওঠেন তিনি। শারীরিক ভাবে এখনো অসুস্থ তৃণমূল নেতা। চিকিৎসকরাও তাঁকে বর্তমানে সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকার নির্দেশ দেন। ফলে আশা করা হচ্ছিলো হয়তো সিবিআই হাজিরার হাত থেকে কিছুদিনের জন্য রেহাই পাবেন অনুব্রত। কিন্তু আচমকাই তাঁর বিরুদ্ধে দুই মামলায় দরুন শনিবার বিকেল সাড়ে 5 টা এবং রবিবার সকালবেলা, দুবেলাই তাঁকে সিবিআই দফতরে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়।
সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, অনুব্রত মণ্ডলকে পূর্বে চার চারবার হাজিরার নির্দেশ দেয় সিবিআই কর্তৃপক্ষ। কিন্তু হাইকোর্টের দ্বারা সিবিআইয়ের হাজিরার হাত থেকে রেহাই পেলেও শেষ পর্যন্ত সিবিআইয়ের পঞ্চম দফা তলব মাঝে হাইকোর্টও তাঁর আবেদন খারিজ করে দেয়। এরপর বীরভূম হতে সিবিআই দফতরের উদ্দেশ্যে রওনা দিলেও শেষ পর্যন্ত তিনি শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতলে ভর্তি হন। তবে গতকাল হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার একদিনের মাথায় সিবিআই এর ডাকে সাড়া দিয়ে শেষ পর্যন্ত নিজাম প্যালেস তৃণমূল নেতা হাজির হন কিনা, সেটাই বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়ায়। তবে শেষপর্যন্ত এদিন নিজের আইনজীবীর মাধ্যমে সিবিআই দফতরে চিঠি পৌঁছে দেন অনুব্রত মণ্ডল। তিনি চিঠিতে লেখেন যে, বর্তমানে যেখানে তিনি হাঁটতেই পারছেন না সেখানে নিজাম প্যালেসে সিবিআইয়ের মুখোমুখি হওয়াও সম্ভব নয়।
প্রসঙ্গত, দুই সপ্তাহ পূর্বে কলকাতা সিবিআই দপ্তর থেকে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলকে হাজিরার নির্দেশ দেওয়ার পরেই তিনি বীরভূম থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এরপর সিবিআই দপ্তর-এ না গিয়ে শারীরিক অসুস্থতার জন্য এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। ফলে সিবিআই এর হাত থেকে বাঁচার জন্য শারীরিক অসুস্থতার বাহানা দিচ্ছেন, এমন অভিযোগে তৃণমূল নেতাকে বিদ্ধ করতে থাকে বিরোধীরা। তবে তারইমাঝে, ইকো রিপোর্টে তাঁর হার্টে বেশ কিছু সমস্যা দেখা দেয়। ভালভ ও হৃদপেশীর সমস্যার পাশাপাশি স্থূলতা জনিত অসুখেও ভোগেন তিনি। এরপরেই, অনুব্রত মণ্ডলের শারীরিক পরীক্ষার পর তাঁর দুই অণ্ডকোষে ধরা পড়ে সমস্যা। তৃণমূল নেতার চিকিৎসায় সাত সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ডও তৈরি করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অবশেষে গতকাল হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান অনুব্রত মণ্ডল। যদিও চার সপ্তাহ পুরোপুরি বিশ্রাম নেওয়ার পাশাপাশি পুনরায় তাঁকে হাসপাতালে আসারও নির্দেশ দেন এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এদিন সিবিআই দফতরে হাজিরার নির্দেশের পর পরিস্থিতি কোনদিকে গড়ায়, সেদিকে তাকিয়ে ছিলো সকলে। বর্তমানে অনুব্রতর এই চিঠি বিতর্ক আরো বৃদ্ধি করবে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।