বাংলাহান্ট ডেস্ক: সাফল্যের (Success Story) এক অনন্য কাহিনি লিখেছেন অনুষ্কা। উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ের তরুণী অনুষ্কা জয়সওয়াল প্রমাণ করে দিয়েছেন, বড় স্বপ্ন থাকলে অচেনা পথ বেছে নিতেও ভয় পেতে হয় না। ২০১৭ সালে দিল্লির বিখ্যাত হিন্দু কলেজে প্লেসমেন্টের সময় বহু ভালো চাকরির সুযোগ এসেছিল তাঁর সামনে। পরিবার ও পরিচিতদের প্রত্যাশাও ছিল, তিনি একটি উজ্জ্বল কর্পোরেট কেরিয়ারে পা রাখবেন। কিন্তু সেই সব চাকরির প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়ে অনুষ্কা খুঁজতে শুরু করেন নিজের সত্যিকারের লক্ষ্য। সেন্ট স্টিফেন্স কলেজ থেকে ফরাসি ভাষায় পড়াশোনা করেও মন ভরছিল না তাঁর। নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তার মাঝে বাড়ি ফিরে আসেন। ঠিক তখনই জীবনের মোড় ঘোরানো মুহূর্ত আসে—বাড়ির ছাদে কয়েকটি সবজির গাছ লাগানোর মধ্য দিয়ে। টমেটোসহ কিছু গাছের যত্ন নিতে নিতে কৃষিকাজের প্রতি গভীর আগ্রহ তৈরি হয় তাঁর মনে। ধীরে ধীরে সেটাই হয়ে ওঠে জীবনের স্বপ্ন।
অনুষ্কার অসাধারণ সফলতার কাহিনি (Success Story)
এক বিকেলে চা খেতে বসে নিজের ইচ্ছের কথা ভাইকে জানান অনুষ্কা। পরিবার-পড়া সমাজের ‘চাকরিতেই ভবিষ্যৎ’ বিশ্বাসের বাইরে গিয়ে অনুষ্কার সেই সিদ্ধান্তে ভাই-ই প্রথম ভরসা জোগান। তাঁর উৎসাহে অনুষ্কা ভর্তি হন নোয়ারদার ইনস্টিটিউট অফ হর্টিকালচার টেকনোলজিতে। কৃষি ও বাগানবিষয়ক আরও কয়েকটি কোর্স সম্পন্ন করেন। বিশেষভাবে আকৃষ্ট হন ‘প্রটেক্টেড ফার্মিং’ বা সুরক্ষিত কৃষিপদ্ধতির প্রতিভি
আরও পড়ুন:দিল্লিতে রয়েছেন শেখ হাসিনা! জানালেন নিজেই, আর ফিরবেন না বাংলাদেশে?
গভীর গবেষণা ও হাতে-কলমে প্রশিক্ষণের পর ২০২০ সালে মাত্র এক একর জমিতে শুরু করেন নিজের পলিহাউস ফার্মিং প্রজেক্ট। বয়স তখন মাত্র ২৪। প্রথম চাষেই ইংলিশ কাকড়ির বিপুল উৎপাদন—৫১ টন। দাবি অনুষ্কার, প্রচলিত কৃষির তুলনায় প্রায় তিনগুণ উৎপাদন পান তিনি। সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে লাল ও হলুদ ক্যাপসিকাম চাষ শুরু করেন। এক একর জমি থেকে ৩৫ টন রঙিন ক্যাপসিকাম উৎপাদন করেন, প্রতি কিলো ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হয়। আজ তাঁর খামার থেকে বছরে দুইশো টনের বেশি ক্যাপসিকাম বাজারে যায় (Success Story)।
মাত্র পাঁচ বছরের মাথায় লখনউ এবং আশেপাশের অঞ্চলে বিশেষ সবজির সরবরাহকারী হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছেন অনুষ্কা। বর্তমানে তিনি ছয় একরের বেশি জমিতে উচ্চমূল্যের সবজি উৎপাদন করেন। বিভিন্ন মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তাঁর ব্যবসার টার্নওভার এক কোটি টাকার বেশি। তাঁর উৎপাদিত সবজি ব্লিঙ্কিট, বিগবাসকেটের মতো দ্রুত ডেলিভারি প্ল্যাটফর্ম, লুলু হাইপারমার্কেটসহ বিভিন্ন বড় স্টোরে পাওয়া যায়। পাশাপাশি দিল্লি ও বারাণসীর বড় সবজি বাজারেও যায় তাঁর ফসল। শুধু নিজের সাফল্যেই থেমে থাকেননি তিনি—আজ ২৫ থেকে ৩০ জন শ্রমিককে কর্মসংস্থান দিচ্ছেন, যাঁদের অধিকাংশই মহিলা। তাঁদের আর্থিক স্বনির্ভরতার পাশাপাশি গ্রামীণ নারীশক্তিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও অনুষ্কার ভূমিকা উল্লেখযোগ্য (Success Story)।

আরও পড়ুন: ‘জাস্টিস ফর প্রদীপ কর’ স্লোগান ঘিরে তুঙ্গে রাজনীতি, অভিষেককে ‘কপি ক্যাট’ বললেন সুকান্ত
লখনউয়ের ছাদবাগান থেকে শুরু হয়ে এক কোটি টাকার কৃষি উদ্যোগ—অনুষ্কা জয়সওয়ালের গল্প নতুন প্রজন্মের তরুণদের স্বপ্ন দেখায়। প্রমাণ করে দেয়, শহুরে ডিগ্রি নয়, মন থেকে কাজ করতে পারলেই মাটিও দিতে পারে সোনার ফসল (Success Story)।













