বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: লড়াইটা ছিল দুই মহাদেশের ফুটবল দর্শনের। একদিকে ছিল গতবারের ইউরো জয়ী দল ইতালি। অপরদিকে গতবারের কোপা আমেরিকা জয়ী আর্জেন্টিনা। কাল ইংল্যান্ডের আইকনিক ওয়েমব্লি স্টেডিয়ামে ফাইনেলেসিমা দেখতে আসা দর্শকদের মধ্যে তিল ধারণের জায়গা ছিল না। আর প্রায় ৮৮,০০০ দর্শকের সামনে ইতালিকে নিয়ে ছেলেখেলা করে ৩-০ ফলে জয় পেলেন মেসিরা। গোল না পেলেও লাউতারো মার্টিনেজ এবং পাওলো দিবালা-কে গোলের পাস বাড়িয়ে ম্যাচের সেরা সেই লিওনেল মেসি।
কিন্তু কি এই ফাইনেলেসিমা ট্রফি? রাতারাতি কিভাবে গজিয়ে উঠলো এক ম্যাচের এই প্রতিযোগিতা? আসলে গত বছরের ডিসেম্বরে ফুটবলের উন্নয়ন সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে ইউরোপিয়ান ফুটবল গভর্নিং বডি ‘ইউয়েফা’ এবং লাতিন আমেরিকান ফুটবলের সর্বেসর্বা ‘কনমেবল’-এর মধ্যে। এই চুক্তির একটি অংশ হন এই ফাইনেলেসিমা ট্রফি। এটাই এই প্রতিযোগিতার প্রথম সংস্করণ নয়। এর আগে ১৯৮৫ এবং ১৯৯৩ সালে দুই মহাদেশের ফুটবল চ্যাম্পিয়ন দেশ একে অপরের মুখোমুখি হয়েছিল। ১৯৮৫ সালে উরুগুয়েকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইউরোপের ফ্রান্স। ১৯৯৩ সালে ডেনমার্ককে টাইব্রেকারে হারিয়ে এই ট্রফি ঘরে তুলেছিল মারাদোনার আর্জেন্টিনা। দীর্ঘ ২৯ বছর মারাদোনার পদাঙ্ক অনুসরণ করেই দেশকে এই ট্রফি জেতালেন আরেক আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি লিওনেল মেসি।
প্রথমার্ধে খেলা শুরুর পর একটা সময় অবধি দুই দলের মধ্যে সমানে সমানে লড়াই চলছিল। ইতালি কিছুটা বিপজ্জনকও হয়ে উঠেছিল। কিন্তু ২৮ মিনিটে মেসির দুর্দান্ত টার্ন এবং জমি ঘেঁষা ক্রস থেকে আর্জেন্টিনাকে লাউতারো মার্টিনেজ যখন এগিয়ে দেন, তখন থেকেই ইতালি আস্তে আস্তে লড়াই থেকে বেরিয়ে যেতে থাকে। প্রথমার্ধের শেষ দিকে সেই লাউতারো মার্টিনেজের দুর্দান্ত থ্রু বল থেকেই অসাধারণ চিপে ইতালি গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন কোপা আমেরিকা ফাইনালের নায়ক দি মরিয়া। দেশের জার্সিতে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করাটা অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছেন তিনি।
দ্বিতীয়ার্ধে একাদশে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন করেন ইতালি কোচ রবার্তো মানচিনি। ইতালির জার্সিতে নিজের শেষ ম্যাচ খেলতে নামা জর্জে কিয়েল্লিনি পুরোপুরি ফ্লপ। তাকে তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে মেসিকে আটকাতে হিমশিম খায় ইতালি ডিফেন্স। নিজের পায়ের জাদুতে ইতালি ডিফেন্ডারদের নাস্তানাবুদ করেছেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা। ইতালি আক্রমণের কোনও সুযোগই পায়নি, বা বলা ভালো আর্জেন্টাইন ডিফেন্স ইতালিকে কোনও জায়গা দেয়নি। অপরদিকে ম্যাচের শেষ লগ্নে নামা তারকা ফুটবলার পাওলো দিবালা মাঠে নেমেই মেসির পাস থেকে দলের তৃতীয় গোলটা করে ইতালির কফিনে শেষ পেরেকটি পুঁতে দেন। ফাইনেলেসিমা ট্রফি জেতে আর্জেন্টিনা। আজুরীদের দুরমুশ করে বছরের শেষে বিশ্বকাপে নামার আগে গোটা বিশ্বকে বার্তা পাঠিয়ে রাখলো লা এলবিসেলেস্তেরা।
‘ভারত আজ পর্যন্ত অলিম্পিকে সোনা পায়নি …’ ভরা মঞ্চে বেফাঁস মমতা