বাংলা হান্ট ডেস্ক: তৎকালীন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের হাত থেকে ভারতকে রক্ষা করতে এবং দেশকে স্বাধীন করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামীরা (Freedom Fighters)। এমনকি, তাঁদের একের পর এক কর্মকাণ্ড রীতিমতো নাড়িয়ে দিয়েছিল ব্রিটিশ শাসনের ভীত। এমতাবস্থায়, দেশের জন্য বাঙালি বিপ্লবীদের আন্দোলন, লড়াই এবং আত্মত্যাগের প্রসঙ্গ স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, আর মাত্র কয়েকঘন্টা পরেই দেশজুড়ে মহাসমারোহে পালিত হবে ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবস। স্বাভাবিকভাবেই এই কারণে সর্বত্র এক আলাদা উদ্দীপনা পরিলক্ষিত হচ্ছে। ঠিক সেই আবহেই রাজ্যের একটি স্কুল থেকে মিলল অমূল্য সম্পদ! স্বাধীনতা দিবসের ঠিক প্রাক্কালেই বালুরঘাট শহরের সুপ্রাচীন স্কুল প্রাচ্যভারতী থেকে মিলল বিংশ শতাব্দীর প্রথমভাগে সংগঠিত বাংলার সশস্ত্র ব্রিটিশ-বিরোধী সংগঠন “অনুশীলন সমিতি”-র ব্যবহার করা অস্ত্রশস্ত্র।
জানা গিয়েছে, শুক্রবার স্কুলের স্টোর রুম পরিষ্কার করতে গিয়ে উদ্ধার হয়েছে বেশ কিছু প্রাচীন অস্ত্র। মূলত, ওই স্কুলই একটা সময়ে ছিল অনুশীলন সমিতির মতো গোপন বৈপ্লবিক সংগঠনের চর্চাক্ষেত্র। এমতাবস্থায়, বিপ্লবীদের অনেক অস্ত্র লুকোনো থাকতো এই ডেরায়। সেই অস্ত্রেরই কিছু উদ্ধার করা গিয়েছে বর্তমানে। একনলা রাইফেলের পাশাপাশি ধারালো অস্ত্রও মজুত ছিল সেখানে।
এদিকে, স্কুল থেকে এই ঐতিহাসিক অস্ত্র ভান্ডার পাওয়ার প্রসঙ্গে প্রাচ্যভারতীর সহ শিক্ষক রাজীব দাস জানিয়েছেন যে, স্কুলের স্টোর রুম পরিষ্কার করতে গিয়েই এই অস্ত্রগুলি উদ্ধার করা হয়। আপাতত সেগুলিকে নিয়ে স্কুলেই একটি সংগ্রহশালা করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। পাশাপাশি, ইতিহাস গবেষক সমিৎ ঘোষ জানিয়েছেন, এই অস্ত্রের সন্ধান পাওয়ার বিষয়টি সমগ্ৰ বালুরঘাটবাসীর কাছেই এক গর্বের বিষয়। স্বদেশী আন্দোলনের ক্ষেত্রে বিপ্লবীদের গর্বের ইতিহাসের কথা এভাবেই ভবিষ্যত প্রজন্ম জানতে পারবে।
জানিয়ে রাখি যে, দেশের পঞ্চম স্থান হিসেবে স্বাধীনতার লাভের আগেই বালুরঘাটে একদিন স্বাধীনতা সংগ্রামীরা টেনে নামিয়ে দিয়েছিলেন ব্রিটিশের ইউনিয়ন জ্যাক। পাশাপাশি, তার জায়গায় ওড়ানো হয় তেরঙ্গা। সর্বোপরি, বাংলার বিভিন্ন ছোট শহর, গ্রাম, মফস্বলে অনুশীলন সমিতির মত গোষ্ঠীর একাধিক ডেরাও স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য বিপ্লবীদের উজ্জীবিত করত। সেগুলির মধ্যে অন্যতম স্থান ছিল বালুরঘাট। এমতাবস্থায়, এই ঐতিহাসিক অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসে বালুরঘাটের অবদান আরও স্পষ্ট হয়ে যাওয়ায় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছেন প্রাচ্যভারতীর শিক্ষকদের পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দারাও।