বাংলা হান্ট ডেস্কঃ স্কুল সার্ভিস কমিশন (School Service Commission) সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় সম্প্রতি ইডির (Enforcement Directorate) হাতে গ্রেফতার হয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ অভিনেত্রী অর্পিতা মুখোপাধ্যায় (Arpita Mukherjee)। পার্থ-অর্পিতা গ্রেফতারির পর থেকেই এই মামলায় একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাতে আর এবার আরো এক বিস্ফোরক তথ্য হাতে লাগলো তাদের। সূত্রের খবর, পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতার মধ্যে যোগসূত্রের বেশ কিছু প্রমাণ বর্তমানে তাদের হাতে এসেছে। এমনকি প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) নেতার অর্থ নিজের কাছে রাখার জন্য কমিশন পর্যন্ত নিতো অর্পিতা, এমনকি কমিশন না দিলে পরবর্তীতে পার্থকে ব্ল্যাকমেল করা হতো বলে দাবি ইডির! কবে থেকে শুরু হয় তাদের এ যোগসূত্র?
এসএসসি মামলায় সম্প্রতি অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট থেকে কোটি কোটি নগদ অর্থ এবং একাধিক সোনা গয়না ও বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করে ইডি। পরবর্তীতে এই মামলায় পার্থ এবং অর্পিতা দুজনকেই গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে আদালতের নির্দেশ প্রেসিডেন্সি জেলে রয়েছেন তারা। এর মাঝে একাধিক স্থানে তল্লাশি চালিয়ে দুর্নীতি সংক্রান্ত একাধিক নথি উদ্ধার করেছে তদন্তকারী অফিসাররা। বর্তমানে সংস্থার সূত্র মারফত খবর সামনে আসছে যে, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর সম্পত্তি নিজের কাছে রাখার জন্য মোটা টাকার কমিশন নিতেন অর্পিতা। এক্ষেত্রে কমিশনের পরিমাণ ৩০ শতাংশ ছিল বলে জানা গিয়েছে। এমনকি, সেই টাকা না দিলে পার্থকে ব্ল্যাকমেল করা হতো বলে দাবি। বর্তমানে অর্পিতার নামে যে সকল সম্পত্তি রয়েছে, তা সবকিছুই কমিশনের টাকায় কেনা বলে মনে করা হচ্ছে।
সূত্রের খবর, ২০১২ সালে শুরু হয় পার্থ এবং অর্পিতার যোগসাজশ। পরবর্তীতে প্রতি এক লাখ টাকায় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা করে কমিশন চাইতেন অর্পিতা এবং পরবর্তী সময়ে তা আরও বহু গুণে বৃদ্ধি করা হয়। শুধু তাই নয়, ইডি সূত্রে খবর, কমিশন যদি অর্পিতার কাছে না পৌঁছাতো, তবে পার্থকে ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি পর্যন্ত দিতেন অভিনেত্রী।
জানা গিয়েছে, ২০১২ সালে ১০ কোটি টাকার কাছাকাছি অর্থ নিয়ে পালিয়ে যান অর্পিতা। এক্ষেত্রে কারণ অবশ্য স্পষ্ট নয়, তবে পরবর্তীতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অনুরোধে তাঁকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়। এরপর বিপুল পরিমাণ টাকা সঙ্গে নিয়ে পুনরায় একবার মুম্বইয়ে পাড়ি দেন পার্থ-ঘনিষ্ঠ ঐ অভিনেত্রী। তবে কমিশনের অঙ্ক বাড়াতেই ফের একবার কলকাতায় ফিরে আসেন অর্পিতা। ইডির অনুমান, এভাবেই কমিশনের বিনিময়ে অর্পিতার কাছে নিজের সম্পত্তি জমা রাখতেন পার্থ। তবে এই প্রসঙ্গে অধিক তথ্য সংগ্রহ করতে তৎপর হয়ে উঠেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। পরবর্তীতে অবশ্য এই সংক্রান্ত নয়া কোন তথ্য সামনে উঠে আসে, সেদিকেই তাকিয়ে রাজ্যবাসী।