বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমাদের বিশ্বে মাঝেমধ্যে এমন কিছু ঘটনা ঘটে যেগুলি রীতিমতো স্তম্ভিত করে দেয় সবাইকে। পাশাপাশি, সেগুলির কারণ খুঁজতে গিয়েও কার্যত কালঘাম ছুটে যায় সবার। এমনকি, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরেও বিভিন্ন বিষ্ময়কর ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়। এমতাবস্থায়, প্রকৃতি আমাদের ইতিহাসের সেই সময়ের কথা মনে করিয়ে দেয়, যা আমরা ভুলে যাই। সেই রেশ বজায় রেখেই এবার ব্রিটেনের (Britain) ডার্বিশায়ারে খোঁজ মিলেছে এক ডুবন্ত গ্রামের। আর এই ঘটনার নেপথ্যেও রয়েছে প্রাকৃতিক কারণ। মূলত, সেখানে ক্রমবর্ধমান তাপের কারণে (খরা) একটি পুকুর শুকিয়ে যায়। আর সেখান থেকেই পাওয়া গিয়েছে বহু পুরোনো ওই আস্ত গ্রামের সন্ধান। যা দেখতে পাল্লা দিয়ে জমেছে ভিড়।
পুকুর শুকিয়ে যেতেই দেখা গেল গ্রামের ঝলক: ঐতিহাসিকদের মতে, ১৯৪০ সালে ডার্বিশায়ারের ডারওয়েন্ট গ্রামটি ভেঙে একটি বড় পুকুর তৈরি করা হয়েছিল। আর তারপরেই ডার্বি, নটিংহাম, শেফিল্ড, লেস্টারের মতো শহরে জল সরবরাহ করা সম্ভব হয়। কিন্তু ২০১৮ সালে ঘটা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে প্রচণ্ড গরম পড়েছিল সেখানে। যার ফলে পুকুরের জলের স্তর অনেকটাই নিচে নেমে যায়।
এমতাবস্থায়, জল কম থাকায় সেই গ্রামের কিছু অংশ ফের দৃশ্যমান হতে শুরু করে। আর এই ঘটনার ফলেই মানুষ অবাক হয়ে যান। এদিকে, চলতি বছরেও ব্রিটেনে প্রচণ্ড গরম পড়েছে। যার কারণে ডার্বিশায়ারের সেই পুকুরের জল ক্রমশ কমছে। যার ফলে ফের দেখা যাচ্ছে ওই গ্রামের ঝলক।
কয়েকশ বছরের পুরোনো ইতিহাস: এই প্রসঙ্গে ডেইলি স্টারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ওই গ্রামে থাকা সুন্দর বাড়িগুলির নিজস্ব একটি কলোনি ছিল। পাশাপাশি, সেখানে একটি পাথুরে সেতুও নির্মিত হয়েছিল। যার মধ্য দিয়ে বয়ে যেত ডারভেন্ট নদী। ওই গ্রামে অল্পসংখ্যক মানুষ বসবাস করলেও সেখানে একটি স্কুল এবং একটি গির্জা ছিল। ঐতিহাসিকদের মতে, গির্জাটি ১৭৫৭ সালে নির্মিত হয়েছিল।
পাশাপাশি, জানা গিয়েছে গ্রামটি ভেঙে যখন পুকুর তৈরি হচ্ছিল তখন ঐ গির্জাটি ভাঙা হয়নি। যার ফলে, পুকুরটি জলে পূর্ণ থাকলেও বাইরে থেকে সেটির উপরিভাগ দেখা যেত। যদিও, পরে নিরাপত্তার কথা ভেবে ওই গির্জাটিও ভেঙে ফেলা হয়। কারণ লোকজন পরে পুকুরে সাঁতার কেটে গির্জায় যেতে শুরু করে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই গ্রামের অনেকগুলি ছবি প্রকাশিত হয়েছিল।
যেগুলি থেকে ওই গ্রামের মানুষের জীবনযাত্রার অবস্থা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। এই প্রসঙ্গে একটি রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছে যে, ১৮২৯ সালে এই গ্রামে প্রায় ১০০ জন মানুষ বাস করতেন। কথিত আছে, জুলাই মাসে এখানে পশমের মেলাও হত। এমতাবস্থায়, এই পুকুরটি তৈরির জন্য এই পুরো গ্রামটি খালি করা হয়। যা এখন ফের দেখা গিয়েছে।